বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, যার রেজি নং-৩৬)

লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বৃদ্ধি কয়েক হাজার মানুষ পানি বন্দী

লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বৃদ্ধি কয়েক হাজার মানুষ পানি বন্দী
মোঃ লাভলু শেখ  লালমনিরহাট থেকে।।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে তিস্তা নদীতে পানি প্রবাহ বেড়ে গেছে। এজন্য দেশের বৃহত্তর সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের সব জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আতংকিত হয়ে পড়েছে তিস্তা পাড়ের মানুষ।
তিস্তার পানি বাড়ার কারণে পানি বন্দী হয়েছে লালমনিরহাটের  কয়েক হাজার পরিবার। পানি বন্দীর পাশাপাশি তিস্তা নদীর বুক জুড়ে থাকা ফসলি জমি পানিতে ডুবে যাওয়ার কারণে মরিচ, পেঁয়াজ, তামাক, ভুট্টা, বাদাম, বীজতলা, ধানসহ বিভিন্ন ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকা পাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, ইউনিয়নের কয়েকশত পরিবার পানি বন্ধি রয়েছে।
মঙ্গলবার বিকাল ৩ টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে জানা যায়, ডালিয়া পয়েন্ট-পানির সমতল 51.60 মিটার
(বিপদসীমা = 52.15 মিটার) যা বিপদসীমার 45 সে.মি নিচে। কাউনিয়া পয়েন্ট-পানির সমতল 28.01 মিটার,
(বিপদসীমা =28.75 মিটার) যা বিপদসীমার 74 সেঃমিঃ নিচে। শিমুলবাড়ি পয়েন্ট-পানি সমতল 30.09 মিটার,
(বিপদসীমা = 31.09 মিটার) যা বিপদসীমার 100 সেঃমিঃ  নিচে। পাটগ্রাম পয়েন্ট-পানি সমতল 57.34 মিটার (বিপদসীমা = 60.35 মিটার) যা বিপদসীমার 301 সেঃমি নিচে। লালমনিরহাটে গতকাল সকাল ০৮ টা হতে আজ সকাল ০৮ টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাতঃ  ৫৪ মিলিমিটার।
ব্যারেজ ও নদী তীরবর্তী মানুষ জানান, গত কয়েক দিন থেমে থেমে ভারী বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে যায়। গত শনিবার ভোর থেকে আরও বৃদ্ধি হতে থাকে নদীর পানি প্রবাহ। পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারেজের জলকপাটগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে।
নদীপাড়ের লোকজন জানান, পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে চরাঞ্চলের ফসলের ক্ষেতগুলো ডুবে গেছে। নিম্নাঞ্চলের ফসলের ক্ষেত ডুবে গেছে। কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারীর শৌলমারী চরের খোরশেদ আলম জানান, নদীতে পানি বাড়লেই চরাঞ্চলের মানুষ বন্দী হয়ে পড়ে। বর্ষাকালে বন্যা নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। তিস্তায় পানি বাড়তে শুরু করেছে। এভাবে বাড়লে কিছুদিন পরেই বন্যা হবে।
আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা এলাকার কৃষক জয়নাল জানান,হঠাৎ তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা কয়েকটা পরিবার পানি বন্দী হয়েছি এবং আমাদের ফসলের বেশ কিছু ক্ষতি হয়েছে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ এলাকার সহিদ আলী জানান, তিস্তার পানি বাড়ায় আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছি এবং আমার কয়েক একর জমির ভুট্টা পানির নিচে রয়েছে।
পাউবো তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা জানান, বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ কিছুটা বেড়েছে। সবগুলো জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তবে আপাতত আর বিপদসীমা অতিক্রম করার কোনো শঙ্কা নেই।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ জানান, বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কিছু পরিবার পানি বন্দী হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে পানি বন্দী পরিবার গুলোর খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।
বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন