এএফএম মমতাজুর রহমান আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলাসহ আশেপাশের সব উপজেলার গ্রামগঞ্জে খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করেছে গাছিরা। কার্তিক মাসে শীতের অনুভব হতেই গাছ প্রস্তুত করে গাছিরা। খেজুরের রস আহরণ করা হয় আগ্রয়ন মাস থেকে মাঘ মাস পর্যন্ত। সেই রস থেকে পাতলা লালি, গুড়,পাটালি ও দানাদার গুড় তৈরী করে বাজার জাত করে গ্রামে গ্রামে ফেরি করে বিক্রি করে গাছিরা। উপজেলার কিছু কিছু গ্রামে স্থানীয় গাছিরা নিজ উদ্যোগে অল্প সংখ্যক কিছু খেজুর গাছের রস সংগ্রহে ব্যস্ত আছেন এখন।
উপজেলায় খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য গাছিরা খেজুর গাছের মালিকের সাথে চুক্তি করে রস সংগ্রহ করার জন্য গাছ প্রস্তত করতে ব্যস্ত সময় পার করে এ সময়। কিন্তু এবারের চিত্র সম্পূর্ন আলাদা। কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ। হাত বাড়ালেই আর মিলেনা খেজুর গাছের মধুরস। প্রকৃতির বিরুপ খেয়ালে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ। এভাবে চলতে থাকলে হয়তো একদনি মানুষ ভুলেই যাবে সুস্বাদু খেজুর রস খাওয়ার আনন্দ। সান্তাহার রেলওয়ের অবসর প্রাপ্ত ডাঃ হামিদুর রহমান রানা বলেন, খেজুর গাছ শুধু রসই দেয়না তার ফল অত্যন্ত ভিটামিন যুক্ত খাবার এবং কাঠ জ্বালানি ও সাংসারিক গৃহস্থালির কাজেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বর্তমানে আগের মতো আর গ্রামগঞ্জে খেজুর গাছ আর দেখা যায়না। ১০ বছর পূর্বেও প্রতিটি গ্রামে বিপুল পরিমান খেজুর গাছ ছিল। সে সময় হাত বাড়ালেই মিলত মধুরস। এক সময় দল বেঁেধ গাছিয়ারা গ্রামে এসে আস্তানা গেড়ে তুলছিল। এবার আর নেই গাছিদের আনাগোনা। গাছয়িাদের তৈরী পাতলা লালি দিয়ে মুরি, রুটি, ফুরফুরি, ভাপা পিঠা, দুধভাত কিংবা গরম ভাত খাওয়ার মজাই আলাদা। গ্রামগঞ্জে অযতেœ আর অবহেলায় বেড়ে উঠা খেজুর গাছগুলো মাঝে মধ্যে নজরে পড়লেও নেই সেই গুলোর যৌলুশ। এখন কেউ আর নতুন করে খেজুর গাছ লাগানোর উদ্যোগই নেয়না। ফলে কালের আবর্তে আজ হারিয়ে যেতে বসেছে এই খেজুর গাছ। হয়তো নতুন প্রজন্মের অনেকেই খেজুর রসের কি স্বাদ তা জানেনই না।
সান্তাহার নাগরিক কমিঠির সভাপতি ও সান্তাহার সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোসলিম উদ্দিন বলেন, দেশে ঢাকঢোল পিটিয়ে বিভিন্ন প্রকার ফলজ ও বনজ বৃ রোপন করা হয়। সম্প্রতি হারিয়ে যেতে বসায় আবারও ঢাকঢোল পিটিয়ে তালগাছ রোপন করার কর্মসুচী গ্রহন করা হচ্ছে। এতে সারাদেশের ন্যায় আদমদীঘি উপজেলার বিভিন্ন সড়কে ল ল তালগাছ বোপন করা হয়, কিন্তু খেজুর গাছ রোপনের কোন উদ্যোগ নেই। সরকারি উদ্যোগে এখনই গ্রামগঞ্জের বিভিন্ন সড়কে অথবা পতিত জায়গাতে খেজুর গাছ লাগানোর ব্যবস্থা নেওয়া না হলে হয়তো একদিন খেজুর গাছ বিলুপ্তি হয়ে যাবে।