মুক্তিনিউজ২৪.কম ডেস্কঃ মাছ নয়, এবার জালে উঠছে কয়লা! শুনতে অবাক লাগলেও বাস্তবেই তার দেখা মিলেছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায়।উপজেলার সীমান্তবর্তী জাদুকাটা নদীতে ভারতের ওপার থেকে ভেসে আসা পানিতে মিশে থাকা কয়লা কোনা জাল ও বেলচা দিয়ে এসব ভারতীয় কয়লা তুলে জীবিকা নির্বাহের উৎস খুঁজে পেয়েছেন শতাধিক শ্রমিক। এসব কয়লা তুলে দিন শেষে বিক্রি করছেন তারা। কয়লা বিক্রির টাকা দিয়েই বর্তমানে চলছে তাদের পরিবারগুলো। যা দিন এনে দিন খাওয়া মানুষের কাছে যেনো কালো সোনার মতো। এতে স্বস্তি মিলেছে নিন্মআয়ের পরিবারগুলোতে।
জানা যায়, উপজেলার সীমান্ত নদী যাদুকাটা, চানপুর ছড়া, বড়ছড়া, লাকমাছড়া, কলাগাঁও ছড়ায় প্রতিনিয়ত ভারতের ওপার থেকে ভেসে আসা পানিতে মিশে থাকা কয়লা বর্তামানে নি¤œআয়ের পরিবার গুলোর জন্য হয়ে ওঠে আয়ের অন্যতম উৎস।উপজেলার পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামের লোকজন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনা জাল দিয়ে কয়লা তোলেন।
জাদুকাটার বারেক টিলা অংশ থেকে শুরু করে ঢালারপাড় পর্যন্ত নদীর প্রায় তিন কিলোমিটার জায়গাজুড়ে কোনা জাল ও বেলচা দিয়ে কয়লা তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিশুসহ নারীরা। দিন শেষে এসব কয়লা নদীর পাড়েই মৌসুমি মহাজনদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। আর এতেই মিলছে স্বস্তি, মিলছে খাবারের সন্ধান। হাওরাঞ্চাল খ্যাত তাহিরপুরে শুধু প্রাকৃতিক স¤পদের ওপর নির্ভর না করে বিকল্প কর্মসংস্থানের প্রতি জোর দেয়ার তাগিদ দিয়েছেন বিশে¬ষকরা। তারা বলছেন, শুধু এ অঞ্চলের প্রাকৃতিক স¤পদের ওপর নির্ভর না করে শ্রমিকদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে এ অঞ্চলে কাঁচবালি শিল্প, মিনারেল ওয়াটার প্ল্যান্ট বা পর্যটন শিল্পের রয়েছে অপার সম্ভাবনা।উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকার জঙ্গলবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী কামরুন নাহার, দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ফজিলা, প্রথম শ্রেণির ছাত্রী সামসুন নাহারসহ এলাকার অনেক স্কুলপড়–য়া কোমলমতি শিশু পাহাড় থেকে বয়ে আসা ছড়া থেকে কয়লা উত্তোলন করে সেই কয়লা বিক্রি করে পরিবারের অভাব ঘোছায়।জাদুকাটা নদীতে ভেসে আসা কয়লা তুলে সংসার চলে মানিগাঁও গ্রামের নারী শ্রমিক ফাতেমা বেগমের। তিনি বলেন, ছেলে-মেয়ে নিয়ে কষ্টে দিন কাটে আমার। নদীতে কাজ না থাকলে কষ্টের সীমা ছাড়িয়ে যায়। এখন নদী থেকে কয়লা কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করছি। এ কাজ বন্ধ হলে আর কোনো উপায় থাকবে না।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ রায়হান কবির বলেন, সীমান্ত নদী যাদুকাটা এলাকার আশপাশের শ্রমিকরা কয়লা কুড়িয়ে তারা জীবিকা নির্বাহ করছেন। শ্রমিকদের পাশাপাশি কোমলমতি শিশুরাও কয়লা কুড়িয়ে তা বিক্রি করছে, এতে তাদের পরিবারের আয়ের একটি অংশ হিসেবে টাকা গুলো যুক্ত হচ্ছে। জীবিকা নির্বাহের উৎস খুঁজে পেয়ে স্বস্তি মিলেছে তাদের পরিবারে
সূত্র:এবিএন