মুক্তিনিউজ২৪.কম ডেস্কঃ গাজীপুর মহানগরের ভোগড়া এলাকায় জিম অ্যান্ড জেসি কম্পোজিট লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা মালিকের বাসায় গিয়েও বেতন বোনাস পাননি। অবশেষে শনিবার (৩০ এপ্রিল) সারারাত তারা কাটিয়েছেন কারখানায়, রবিবারও সেখানেই অবস্থান করছেন।কারখানার শ্রমিক সিনথিয়া, হালিমাসহ অন্যরা জানান, আগে থেকেই কথা ছিল শনিবার দুপুরে তাদেরকে এপ্রিল মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস দেওয়া হবে। শনিবার সকালে কারখানায় গিয়ে কাজে যোগ দেন। দুপুর পর্যন্ত কাজ শেষে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন বেতন ভাতা দেওয়ার মতো কারখানায় কেউ নেই। সবাই চলে গেছেন।কারখানার শ্রমিক আমিনুল, রিয়াজসহ অন্যরা বলেন, “কর্মকর্তারা দুপুরের আগ পর্যন্ত একজন, দু’জন করে বের হচ্ছিল। কিন্তু তারা এভাবে চলে যাবেন এটা বোঝা যায়নি। দুপুরের পর কোনো কর্মকর্তাকে না পেয়ে কর্মকর্তাদের চলে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হতে পেরেছি।”
তারা ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “আমাদের মতো প্রায় সাড়ে ৪০০ শ্রমিকের পরিবার পরিজন নিয়ে গ্রামে যাওয়ার প্রস্তুতি ছিল। শনিবার বেতন বোনাস নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা হওয়ার জন্য বাসায় সব গুছিয়ে রেখে কারখানায় এসেছিলাম। অবশেষে সারারাত কারখানায় কাটিয়েও এ ব্যাপারে কোনো আশ্বাস পাচ্ছি না।”শ্রমিকেরা আরও বলেন, “কিছু সহকর্মী উত্তরায় মালিকের বাসায় গিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেও দেখা করতে পারেননি। কোনো উপায় না দেখে সেখান থেকে ফিরে এসে আজও (রবিবার) কারখানায় বসে আছি। শ্রমিকেরা কারখানার ভেতরেই বিক্ষোভ করেছে। কোনো ভাংচুর না করে সবাই শান্তিপূর্ণ অবস্থান করেছে। কারখানার সামনের দোকান থেকে হালকা খাবার খেয়ে গতকালের ইফতার ও ভোরে সেহরি করেছি কারখানায়।”কারখানার হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. মোফাজ্জল হোসেন ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “সাবলেটে কাজ করিয়ে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দেওয়া হয়। কিন্তু এবার ঈদের আগে ব্যাংকিং জটিলতার কারণে টাকা উঠাতে পারিনি। ফলে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেওয়া যায়নি।”
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “রাতে কারখানা মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। রবিবার সকালে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। তারা দুপুরের দিকে আসবেন বলে কথা দিয়েছেন।”তিনি আরও বলেন, “কারখানায় ৪৪৭ জন শ্রমিক রয়েছেন। বেশিরভাগ শ্রমিক দুই থেকে তিন বছর কারখানাটিতে কাজ করছেন। জেলা, পুলিশ ও কারখানা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে আজই তাদের বেতন-বোনাস প্রদানের প্রক্রিয়া করা হবে।”গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “এটি একটি ডিফল্ডার প্রতিষ্ঠান। বিজিএমইএ কারখানার ব্যাপারে অবগত। কারখানাটির মালিক গতকাল থেকে মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছেন। আমরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। শ্রমিকদেরকেও বোঝাচ্ছি কোনো অসন্তোষ যেন সৃষ্টি না করে। একইসঙ্গে তাদের বেতন-বোনাস কীভাবে দেওয়া যায় সে ব্যাপারেও সংশ্লিষ্ট সকলেই চেষ্টা করছি, শ্রমিকদের থাকতে বলেছি।”