মুক্তিনিউজ২৪.কম ডেস্কঃ গরিবের আবার ঈদ। আমগো ঈদ কিসের। বাপ হয়ে সন্তানের ঈদের বায়না মেটাতে পারি না। পেটের ভাত যোগাতেই হিমশিম খেতে হয়, সেখানে ঈদের বাজার সদাই, স্ত্রী-সন্তানের ঈদের বায়না মেটামো কিভাবে। ১০ মাস ধরে বেতন পাই না। চলতি মাসেও বেতন পাই নাই। ঋণ দেনা করবো সেই উপায়ও নেই। স্ত্রী-সন্তানের মুখে হাসি ফোটাতে নতুন কাপড়-চোপড় কিনে দিবো সেই যো নেই। ঈদে পরিবারের মুখে সেমাই তুলে দিবো সেই সেমাই কেনারও টাকা নেই পকেটে। কি করবো চিন্তায় আছি।বুকে হাজারো অভিযোগ চেপে রেখে কষ্টমাখা কথাগুলো বলছিলেন রেলক্রসিংয়ে দায়িত্বরত গেইটম্যান মোস্তাক আহমেদ।জামালপুরে রেলওয়ের রাজস্ব খাতে(TLR)প্রকল্পের আওতায় রেল ক্রসিংয়ের গেট ব্যরিয়ারে গেটম্যান নিয়োগ পেয়েছেন ১৫ হাজার টাকা মাসিক বেতনে। রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে দায়িত্ব পালন করলেও ২০২১ সালের জুলাই মাস থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত বেতন-ভাতা পাননি তারা।
জামালপুর-সরিষাবাড়ি রেলপথে দামেস্বর রেলক্রসিংয়ে দায়িত্বরত গেইটম্যান মোস্তাক আহমেদ জানান, ১০ মাস ধরে বেতন পাইনা। অভাবের সংসারে টেনেটুনে কোনোমতে চলছে। ঈদের বায়না ধরে কান্নাকাটি করছে। বাবা জামা-কাপড়, জুতা কিনে দাও। ওদের মুখের দিকে তাকাতে পারিনা। কি করবো বুঝতে পারছিনা। জামালপুর-শেরপুর বাইপাস রেলক্রসিংয়ে দায়িত্বরত সোহাগ মিয়া জানান, আমাদের কষ্ট দেখার কেউ নেই। বেতন না পাওয়ায় পেটে ভাতই জুটছে না, ঈদের বাজার, বউ-বাচ্চাদের নতুন কাপড় কিনবো ক্যামনে। বেতন বন্ধ থাকায় এখন কেউ আর ধারদেনাও দিতে চায় না। কি করবো চোখে, অন্ধকার দেখতাছি। কি কারণে বেতন পেলাম না তা জানি না। আশায় ছিলাম ঈদের আগে বেতন পাবো, বউ, পোলাপান নিয়ে আনন্দে ঈদ করবো, কিন্তু তা আর হলো না।১০ মাস ধরে বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন দায়িত্বরত গেইটম্যানরা। কিন্তু প্রকল্পের অধীনে চাকরি করায় এ বিষয়ে তারা প্রতিবাদও করতে পারেন না। সবাই যখন আনন্দ-উল্লাসে ঈদ উদযাপন করবে তখন রেলওয়ের গেটম্যানদের ঈদ কাটবে চোখের জলে।
উর্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) আবু সাঈদ হাসান বলেন, বাজেট হয়ে গেছে। তবে ঈদের আগে বেতন পাওয়ার সম্ভবনা নেই। ঈদের পর গেইটম্যানরা বেতন পাবেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।
সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল