মুক্তিনিউজ২৪.কম ডেস্ক: জয়দেবপুর-বঙ্গবন্ধু রেল সড়কের মির্জাপুরে লাইনচ্যুত হয়ে তেলবাহী ট্রেনের (৯৮১ নম্বর) ইঞ্জিন ও এক নম্বর কোচটি সড়ক থেকে লাইনচ্যুত হয়ে ঢালুতে উল্টে পড়েছে। এছাড়া রেলের দ্বিতীয় কোচটির দুটি চাকাও লাইনচ্যুত হয়। সোমবার বিকেলে ৫টা ২০ মিনিটের সময় মির্জাপুর স্টেশনের লুপ লাইনের ট্যাপ পয়েন্টের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ট্রেনের এলেম (লোক মাস্টার) ফিরোজ শাহ সুলতান ও এ এলেম (সহকারী লোক মাস্টার) জিয়াউর রহমান ইঞ্জিনের ভেতর আটকা পড়লে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে। দুর্ঘটনার পর এই রেল সড়কে প্রায় ৪০ মিনিট ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে বলে মির্জাপুর স্টেশন মাস্টার মো. কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন।
মির্জাপুর রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার কামরুল ইসলাম তেলবাহী ৯৮১ ডাউন ট্রেনটি চট্টগ্রামের মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড গুপ্তখাল থেকে ১৫টি কোচ নিয়ে রংপুর ডিপোতে যাচ্ছিল। সোমবার বিকেলে সোয়া ৪টার দিকে জয়দেবপুর রেল স্টেশন থেকে এলেম (লোক মাস্টার) ফিরোজ শাহ সুলতান ও এ এলেম (সহকারী লোক মাস্টার) জিয়াউর রহমান ট্রেনটি নিয়ে পারবর্তীপুরের উদ্দেশে ছেড়ে আসে।
তিনি জানান, পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা দ্রুতযান একপ্রেস (৭৫৮) ট্রেনটিকে ক্রসিং দেওয়ার জন্য তেলবাহী ট্রেনটিকে মির্জাপুর স্টেশনের লুপ লাইনে প্রবেশের সিগন্যাল দেওয়া হয়। ট্রেনটি লুপ লাইনে প্রবেশ করার পর ট্যাপ পয়েন্টের কাছে পৌঁছানোর পর লাল বাতি দেখে এলেম ফিরোজ শাহ সুলতান ট্রেনটি থামানোর জন্য অটোমেটিক ও ইনডেপেন্ডেন্ট ব্রেক করছিলেন। এসময় ব্রেক দুটি কাজ না করায় এ এলেমের পাশে থাকা ব্রেকও ফেল করে ট্রেনটির ইঞ্জিন ও এক নম্বর কোচ লাইনচ্যুত হয়ে উল্টে ঢালুতে পড়ে যায়। এছাড়া দুই নম্বর কোচটির দুটি চাকা লাইনচ্যুত হয় বলে ট্রেনের এলেম ফিরোজ শাহ সুলতান তাকে জানিয়েছেন।
এ কারণে পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা দ্রুতযান একপ্রেস ট্রেনটিকে মহেড়া স্টেশনে প্রায় ৪০ মিনিট সময় বিলম্বিত করানো হয়। তবে তেলবাহী ট্রেনটি লুপলাইনে লাইনচ্যুত হওয়ায় মেইন লাইন সচল রয়েছে। সে কারণে দ্রুতযান একপ্রেস ও কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি মেইন লাইন দিয়ে পাচিং করাতে সক্ষম হয়েছেন বলে স্টেশন মাস্টার জানিয়েছেন।
এছাড়া যেহেতু তেলবাহী ট্রেনটি লুপ লাইনে থাকায় মেইন লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচলে কোন অসুবিধা হবে না বলে তিনি জানিয়েছেন। স্টেশন মাস্টার আরও জানান, দুর্ঘটনার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। উদ্ধার কাজ দ্রুতই শুরু হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ট্রেনের এলেম ফিরোজ শাহ সুলতান জানান, সিগন্যাল পেয়ে লুপ লেনে প্রবেশ করেন। ট্যাপ পয়েন্টের কাছে গিয়ে লাল বাতি দেখে দ্রুত ব্রেক করার চেষ্টা করি। এ এলেম জিয়াউর রহমানের পাশে থাকা ব্রেকও মারতে বলেন। কিন্তু কোনো ব্রেক কাজ না করায় ইঞ্জিন ও একটি কোচ উল্টে পড়ে যায়। আমি এবং এ এলেম জিয়াউর রহমান ভেতরে আটকা পড়েছিলাম। স্থানীয় লোকজন আমাদের উদ্ধার করেছে।
মির্জাপুর গ্যাং ১০ এর গ্যাংমেট আব্দুর রাজ্জাক জানান, এলেম নির্দেশনা না মেনেই টেনটি নিয়ে লুপ লেন ছেড়ে ছাওয়ার চেষ্টা করেন বলে তিনি জানান। মির্জাপুর থানা উপপরিদর্শক (এসআই) মোশারফ হোসেন জানান, দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছেন এবং সেখানে অবস্থান করছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।এছাড়া মির্জাপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন বলে তিনি জানিয়েছেন। রাতে এ রিপোর্ট পাঠানো সময় পর্যন্ত কোনো তদন্ত কমিটি গঠনের তথ্য জানাতে পারেননি মির্জাপুর রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার কামরুল ইসলাম।