শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

কানাডায় নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পেয়েছে ‘সন্ত্রাসীরা’, দাবি শ্রীলঙ্কার

কানাডায় নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পেয়েছে ‘সন্ত্রাসীরা’, দাবি শ্রীলঙ্কার

মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক :

‘সন্ত্রাসীরা’ কানাডায় নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পেয়েছে বলে দাবি করেছে শ্রীলঙ্কা। এমনকি কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো কোনও প্রমাণ ছাড়াই ভারতের বিরুদ্ধে আপত্তিকর অভিযোগ তুলেছেন বলেও দাবি করেছে দেশটি। কানাডার শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার ঘটনায় ভারতীয় এজেন্টদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ সামনে আসার পর ভারত-কানাডা কূটনৈতিক দ্বন্দ্বের প্রতিক্রিয়ায় শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী সাবরি এসব কথা বলেছেন। মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত-কানাডা কূটনৈতিক দ্বন্দ্বের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সরব হয়েছেন শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী সাবরি। সোমবার তিনি বলেছেন, ‘সন্ত্রাসীরা’ কানাডায় নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পেয়েছে এবং তাদের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো কোনও ধরনের প্রমাণ ছাড়াই আপত্তিকর অভিযোগ নিয়ে এসেছেন। এনডিটিভি বলছে, ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আলী সাবরি এসব কথা বলেন। তার দাবি, প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো ক্রমাগত ‘আপত্তিকর অভিযোগ’ করে চলেছেন এবং তার এই মন্তব্যে তিনি ‘আশ্চর্য নন’। সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেন, ‘কিছু সন্ত্রাসী কানাডায় নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পেয়েছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী কোনো সমর্থনযোগ্য প্রমাণ ছাড়াই কিছু আপত্তিকর অভিযোগ নিয়ে সামনে এসেছেন। তারা শ্রীলঙ্কায়ও একই কাজ করেছে, শ্রীলঙ্কায় গণহত্যা হয়েছিল বলে ভয়ঙ্কর, সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলেছিল দেশটি। সবাই জানে আমাদের দেশে কোনও গণহত্যা হয়নি।’ সম্প্রতি কানাডার শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার ঘটনায় ভারত সরকারের দিকে সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলেছেন কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তিনি বলেছেন, শিখ নেতাকে হত্যায় ভারতীয় এজেন্টদের জড়িত থাকার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে। এই ঘটনায় উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে ব্যাপকভাবে। কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের একটি শিখ মন্দিরের বাইরে গত ১৮ জুন গুলি করে হত্যা করা হয় ৪৫ বছর বয়সী হরদীপ সিং নিজ্জারকে। গত সোমবার কানাডার হাউস অব কমন্সের সভায় প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো বলেন, কানাডার গোয়েন্দা সংস্থা শিখ নেতা নিজ্জারের হত্যার সাথে ভারত সরকারের সংশ্লিষ্টতার ‘বিশ্বাসযোগ্য’ প্রমাণ খুঁজে পেয়েছে। সেসময় তিনি আরও বলেন, ‘কানাডার গভীর উদ্বেগের কথা ভারত সরকারের শীর্ষ নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে। গত সপ্তাহে জি টুয়েন্টি সম্মেলনের মধ্যে বিষয়টি আমি ব্যক্তিগতভাবে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছে স্পষ্ট করে দিয়েছি।’ অবশ্য ট্রুডোর এসব অভিযোগ ‘অযৌক্তিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত। কানাডার পার্লামেন্টে সাবেক এক নাৎসি সৈনিককে সম্মান জানানোর জন্য ট্রুডোকে কটাক্ষ করে শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী সাবরি বলেন, ‘আমি গতকাল দেখেছি তিনি এমন একজনকে স্বাগত জানিয়েছেন যিনি অতীতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসিদের সাথে যুক্ত ছিলেন। তাই, এটা সন্দেহজনক এবং আমরা অতীতেও এমন বিষয় মোকাবিলা করেছি। আমি বিস্মিত নই, মাঝে মাঝে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো আপত্তিকর এবং প্রমাণহীন অভিযোগ নিয়ে সামনে আসেন।’ সাবরি বলেন, ‘গণহত্যা’ নিয়ে ট্রুডোর করা মন্তব্য শ্রীলঙ্কা-কানাডার সম্পর্ককে প্রভাবিত করেছে। তার ভাষায়, ‘এটি আসলে আমাদের সম্পর্ককে প্রভাবিত করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই বিষয়ে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। (কানাডীয়) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় খুব স্পষ্টভাবে বলেছে, শ্রীলঙ্কায় গণহত্যা হয়নি, যেখানে একজন রাজনীতিবিদ হিসাবে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো দাঁড়িয়েছেন এবং বলেছেন, শ্রীলঙ্কায় গণহত্যা হয়েছে। এটি একে অপরের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’ তিনি কানাডার প্রধানমন্ত্রীকে সার্বভৌম দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার পরামর্শ দেন। সাবরি দাবি করেন, ‘আমি মনে করি না, কারও অন্য দেশের বিষয়ে নাক গলানো উচিত এবং কীভাবে আমাদের দেশকে পরিচালনা করা উচিত তা আমাদের বলা উচিত। আমরা আমাদের দেশকে অন্য কারও চেয়ে বেশি ভালবাসি। তাই আমরা আমাদের দেশে আছি। আমরা এই বক্তব্যে মোটেও খুব খুশি নই।’

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন