শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

দেওয়ানগঞ্জে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের বাঁধ নির্মাণ

দেওয়ানগঞ্জে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের বাঁধ নির্মাণ

 

মহসিন রেজা , জামালপুর জেলা প্রতিনিধি :

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে নাব্যতা কমে যাওয়ায় ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনের কবলে পরে ইতিপূর্বে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার প্যোল্যাকান্দি নামাপাড়া, মধ্যপাড়া ও ফারাজীপাড়া গ্রামের বসতবাড়ি, আবাদীজমি, স্কুল-মাদ্রাসা-মক্তবসহ সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আবাদী জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে ঐ এলাকার শত-শত মানুষ। অনেকেই সড়কের ধারে ঘর তুলে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এলাকাবাসীর আক্ষেপ ইতিপূর্বে তীব্র ভাঙনে ঘরবাড়ি, আবাদি জমিসহ বহু স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হলেও সরকারি কোন সহোযোগিতা পাননি ভাঙ্গন কবলিত এসব এলাকার মানুষ। তাই তো এবার বর্ষার শুরুর আগেই পোল্যাকান্দি মধ্যপাড়াবাসী নিজেদের অর্থায়ন ও স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মাণ করছেন বাঁশের বাঁধ। এতে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনকবলীত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে উজান থেকে বয়ে আসা পানির তীব্র ভাঙন ও আগ্রাসী আঘাত থেকে রক্ষা করবে পাড়কে। সাময়িকভাবে বন্ধ হবে ওই এলাকায় ব্রহ্মপুত্রের ভয়াবহ ভাঙন। পোল্যাকান্দি মধ্যপাড়ার পশ্চিম পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্রের বামতীর ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার জন্য প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সাতটি জায়গায় বাঁশের বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা এলাকাবাসীর। ইতিমধ্যে দুটি বাঁধের কাজ চলমান রয়েছে। এ কাজে তাদের ব্যয় হবে অন্তত ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা।
যদিও বাঁধ নির্মাণের দায়িত্ব সরকারের। বারবার ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন রোধে প্রতিকার চেয়ে সরকারি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ধরনা দিয়েও ব্যর্থ গ্রামবাসী নিজ অর্থায়নে বাঁশের বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান পোল্যাকান্দি মধ্যপাড়ার আমের আলী। তিনি বলেন, আমরা নিরুপায় হয়ে নিজেদের অর্থায়নে ও স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের বাঁধ নির্মাণ কাজ হাতে নিয়েছি। আশা করছি এতে সাময়িকভাবে হলেও এ অঞ্চল ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পাবে।
সোমবার ওই গ্রামে গেলে এলাকাবাসীর উদ্যোগে বাঁধ নির্মাণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখতে পান এই প্রতিবেদক। প্রামবাসী জানান, চল্লিশ বছর আগে থেকে এ অঞ্চলে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন চলছে। ইতিপুর্বে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে বিলীন হয়েছে পোল্যাকান্দি নামাপাড়া, মধ্যপাড়া, পূর্বপাড়া, ফারাজীপাড়া, মাদারের চর, মদনেরচর, গুমেরচররসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। একপাড় ভেঙে গড়েছে অন্যপাড়। ভাঙন কবলীত মানুষ বসতি স্থাপন করেছেন নদের জেগে ওঠা চরে। । বর্তমানে ভাঙনের মুখে রয়েছে পোল্যাকান্দি নামাপাড়া, মধ্যপাড়া ও ফারাজীপাড়া। কয়েক বছর আগে থেকে ওই গ্রামগুলোতে শুরু হয়েছে ক্রমাগত ভাঙন। এলাকাবাসী ভাঙন রোধে সরকারি পদক্ষেপের আশায় দৌঁড়ঝাপ করলেও এখন পর্যন্ত কোন প্রতিকার পাননি তারা।

বাহাদুরাবাদ ইউপি ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য আহাম্মদ আলী বলেন, আমরা ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনরত পাড়ের সাতটি জায়গায় সাতটি বাঁশের বাঁধ নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি তাতে সাময়িক ভাবে ভাঙন রোধ হবে। এ কাজে ব্যয় হবে অন্তত ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা। এ টাকার যোগান দিতে আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে । এ কাজে সরকারি সহায়তার দাবী তার।

বাহাদুরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাজাহান মিয়া বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। ইউপি তহবিল থেকে সহযোগিতা করার মত কিছু নেই। ব্যক্তিগত ভাবে হলেও আমি তাদের ওই কাজে সহযোগিতা করবো এবং সরকারি সহায়তার জন্য সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ করবো।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স বলেন, ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন থেকে বসতভিটা ও আবাদী জমি রক্ষায় পোল্যাকান্দি মধ্যপাড়াবাসীদের ব্যক্তিগত উদ্যোগ সত্যি প্রসংশনীয়। বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে।

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন