রবিউল হক রতন,ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর ডোমার (বিএডিসি) ভিত্তি বীজ আলু উৎপাদন খামারটিতে চলতি মৌসুমে আউশ ধান রোপনে বর্তমানে গোটা খামারটি জুড়ে সবুজের সমারোহে ছেয়ে গেছে। কৃষির মাঝে এ যেন এক অপরুপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি। এই দৃষ্টি নন্দন সবুজের সমারোহ এলাকাবাসীর মন কেড়ে নিয়েছে, প্রতিদিন বিকেলে সবুজের সমারোহ দেখতে বিভিন্ন এলাকার মানুষকে খামারে দেখা গেছে।
অপরদিকে পুরো খামারের সৌন্দর্য বর্ধন ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার জন্য প্রায় পাঁচ কিলোমিটারের বেশি যে নালাটি ইতিপুর্বে খনন করা হয়েছিল সেই নালার দুই ধার দিয়ে সারি সারি করে লাগানো হয়েছে নারিকেল গাছ এবং লাল রংয়ের পাকচং ঘাস।
প্রকৃতির হিমেল বাতাসে দোলা খাচ্ছে লাল রঙের সুন্দরী পাকচং ঘাস এবং সবুজের সমারোহে দুলছে আউশ ধানের সবুজ ক্ষেত। এই লাল সবুজের সমারোহ এর অপরুপ দৃশ্য দেখে মন জুরিয়ে যাবে যে কোন দর্শনার্থীর।
উল্লেখ্য যে, ১৯৫৭-৫৮ সালের দিকে হুকুম দখলের মাধ্যমে সরকার এই খামারটি প্রতিষ্ঠা করেছিল। তৎকালীন কৃষি বিভাগের নিয়ন্ত্রণে খামারটির কার্যক্রম শুরু হয় এবং পরবর্তীতে ১৯৬১-৬২ সালের দিকে খামারটি বিএডিসির কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বীজ আলু উৎপাদনের ক্ষেত্রে এই এলাকার মাটি অধিক উপযোগী মনে করে ১৯৮৯-৯০ সালে খামারটি আলুবীজ উৎপাদনের অন্তর্ভুক্ত হয়।বর্তমানে খামারটির পরিধি ৫শত১৪.৪৮ একর। উক্ত খামারটিতে আলু উৎপাদনের পাশাপাশি নিচু জমি গুলোতে বোরো ধান বীজ, আমন ধানবীজের পাশাপাশি কম উর্বর জমিতে গম বীজ উৎপাদন করা হয়।
এলাকাবাসী জানায়, উক্ত খামারে উপ-পরিচালক পদে আবু তালেব মিঞা যোগদানের পর থেকে এই খামারে কৃষিতে বিপ্লব ঘটাতে আলু উৎপাদনের পর পরই তিনিই প্রথম আউশ ধান বীজ উৎপাদন করে অত্র এলাকা সহ সারা দেশে ব্যাপক সারা ফেলেছেন এবং তিনি এই খামারে দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। যার সুফল অত্র এলাকাবাসি সহ সারা দেশবাসী ভোগ করছেন। এছাড়াও প্রতি মৌসুমে বীজ আলু উত্তোলনের পর জমির উর্বরতা বৃদ্ধি, সুষম পুষ্টির যোগান, ভুমি ক্ষয়রোধ এবং আবাদি জমির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৪শত ৫০ একর জমিতে ধইঞ্চা চাষ করা হয়েছে। বর্তমানে চলতি মৌসুমে ২শত ৫৫ একর জমিতে আউশ ধানবীজ রোপন করা হয়েছে যার উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা ৩শত ৩২ মেঃ টন। এছাড়াও বর্তমানে যান্ত্রিকি করন পটেটো প্লান্টার দ্বারা বীজ আলু রোপণ করা হচ্ছে এর পাশাপাশি পটেটো ডিগার/হার্ভেষ্টার দ্বারা বীজ আলু উত্তোলন, গ্রেডার মেশিন দ্বারা বীজ আলু গ্রেডিং করা, রাইস সিডিং মেশিন দ্বারা আউশ ও আমন ধানবীজের বীজতলা প্রস্তুত এবং রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিন দ্বারা আউশ ও আমন ধানবীজ রোপন করা হয়েছে, এবং কম্বাইন হার্ভেষ্টার দিয়ে ধানবীজ ফসল কর্তন করা হয়, এছাড়া এই খামারের নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্মিক ম্পোষ্ট প্লান্ট তৈরি করা হয়েছে সেখান থেকে প্রতিবছর প্রায় ৩০ মেঃ টন ভার্মিক ম্পোষ্ট উৎপাদন করা সম্ভব।
এবিষয়ে ডোমার বিএডিসি খামারের উপপরিচালক আবু তালেব মিঞা বলেন যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি ইঞ্চি জমিকে উৎপাদনের আওতায় এনে অত্র খামারটি জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিশ্বায়নের এইযুগে কৃষিই হোক দেশের অর্থনীতির মুল চালিকাশক্তি। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি ডোমার ভিত্তি বীজ আলু উৎপাদন খামাটিতে।