মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইউছুব আলী সংবাদ সম্মেলন করে গত ১০ জুলাই ২০২৩ শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী হাজী মখন মিয়া ও ফুল মিয়ার করা বিভিন্ন অভিযোগের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
শনিবার (৫ জুলাই) সকাল ১১টায় শ্রীমঙ্গল শহরের ভানুগাছ সড়কস্থ জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে ইউছুব আলী কতৃক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইউছুব আলী লিখিত বক্তব্যে উনার রাজনৈতিক, সামাজিক ও ব্যবসায়ী পরিচয় উলেখ্য করে বলেন, শ্রীমঙ্গলের জনৈক মখন মিয়া গত ১০ জুলাই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট ও কাল্পনিক সংবাদ সম্মেলন করেন। এর মূল কারণ শ্রীমঙ্গলে আমার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক, সামাজি ও ব্যবসায়ী সুনাম রয়েছে, এর কারণে স্থানীয়রা আমার আমাকে জানায়, মখন মিয়া ও ফুল মিয়া গং দীর্ঘ বছর ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে ব্রীজ, কালভার্ট ও রাস্তাঘাট এর ক্ষতি ক্ষতি সাধন করে আসছে। এ ব্যাপারে আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পরলাম মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের বিগত ১৪২৮-২৯ বাংলা সন ২ বছরের জন্য শ্রীমঙ্গল উপজেলার ২২টি সিলিকা বালু খোয়ারী দরপত্র আহŸান করেন। সে মোতাবেক ২৫ ভাগ মিকিউরিটি টাকা জমা দিয়ে ২২জন মহালদার সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হন। সে মোতাবেক জেলা প্রশাসন সর্বোচ্চ দরদাতাদের নামীয় তালিকা সুপারিশসহ খনিহ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোতে প্রেরণ করেন। খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো থেকে পরিবেশের ছাড়পত্রসহ রাজস্বের পুরো টাকা জমা দেওয়ার জন্য বার বার তাগাদা দেওয়ার পরও মহালদাররা বন্দোবস্ত দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেন নি। এ কারণে সরকার বিগত ২ বছরে ইজারাদার মূল্য টেক্্র ও ভ্যাটের টাকাসহ ইজারাদারদের নিকট প্রায় ৩ কোটি ৭ লক্ষ ২৩ হাজার ৯৩৭ টাকা পাওনা রয়েছে। শুধু মাত্র একটি বালু মহাল কালাপুর ইউনিয়নের লামুয়া সিরাজনগর এলাকায় সুমাইছড়া বৈধভাবে সরকারের প্রক্রিয়া শেষ করে লিজ নিয়েছে। সরকার বাহাদুর শুধু মাত্র মখন মিয়ার নিকট এখন পর্যন্ত ৮১ লক্ষ ৩১ হাজার ২৫০ টাকা রাজস্ব পাওনা রয়েছে। তিনি সরকারের এ পাওনা না দিয়ে সিন্ডিকেট করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছেন মখন মিয়া। অন্যান্য মহালদাররাও ২৫ ভাগ সিকিউরিটির টাকা জমা দিয়ে বালু উত্তোলন করে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছেন। এভাবে অবৈধ বালু উত্তোলন চলতি ১৪৩০ বাংলা পর্যন্ত চলছে। এ বিষয়টি নিয়ে আমি স্থানীয় প্রশাসনকে মৌখিক ভাবে অবগত করেছি। এবং পরবর্তীতে আমি গত ২৫ মে ২০২৩ মহাপরিচালক পরিবেশ অধিদপ্তর আগারগাঁও বরাবর অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ ও সরকারের সরকারের রাজস্ব আদায়ের জন্য আবেদন করি। এছাড়াও গত ৬ জুলাই ২০২৩ শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর দরখাস্ত দেই। আমার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো এর পরিচালক শ্রীমঙ্গলে এসে তদন্ত করেন এবং জরুরী ভিত্তিতে পরিবেশগত ছাড়পত্র সংগ্রহ করে খনিজ সম্পদ উন্নয়নে জমা দেওয়ার জন্য মখন মিয়া সহ অন্যান্য মহালদারদের নির্দেশ দেন। এসব কারণে এবং তাদের বালু মহাল বন্ধ হয়ে যাবার ভয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে মখন মিয়া ও ফুল মিয়া গং সংবাদ সম্মেলন করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্য, কাল্পনিক ও বানোয়াট অভিযোগ করেন। ইউছুব আলী আরো বলেন, মখন মিয়া এবং ফুল মিয়া গংদের এমন অভিযোগে আমার মানহানি হয়েছে বিধায় আমি মৌলভীবাজার জোডিশিয়্যাল ম্যাজিস্টেট আদালতে সি,আর মামলা নং ২৫৬/২৩ শ্রীমঙ্গল, মামলা দয়ের করি। পরে মাননীয় আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন। এছাড়াও ইউছুব আলী সাংবাদিকদের জানান, মখন মিয়া সিলেট থেকে শ্রীমঙ্গলে কি কারণে এসেছিলেন। এবং ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে তার কি ভূমিকা ছিল এবং যুদ্ধ পরবর্তীতে তিনি সিলেট জেলার কুশাইন গ্রাম থেকে তিনি কেন বিতাড়িত হয়েছিলেন, এসব বিষয় অনুসন্ধানের জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ জানান ইউসুফ আলী। তিনি মখন মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেন, গত ৩০/৪০ বছর ধরে বৈধ বালু ব্যবসার আড়ালে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছেন। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি এবং পরিবেশ বিপর্যয় করে বালু ও কৃষি জমির মাটি উত্তোলন সিন্ডিকেট এর প্রধান উলেখ্য করে বলেন, উত্তরসুর এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ট্রাস্টের নিকট দানকৃত দেবোত্তর সম্পত্তির প্রায় ২২ একর ভূমি রয়েছে মখন মিয়ার। এবং বাহুবল এলাকায় চা বাগানের ১৫০ একর জমি দখল করে লেবু বাগান গড়ে তোলেন। এছাড়াও যুদ্ধ পরবর্তীতে বাহুবলের ফয়জাবাদ এলাকার সরকারি খাস জমিতে দিদারাবাদ ও সুন্দরাবাদ নামে দুটি গ্রাম তৈরি করে ভূমিহীনরা বসবাস করত। সেখান থেকে ভূমিহীনদের উচ্ছেদ ও িএক নারীকে অপহরণ করে মখন মিয়া লেবু বাগান করেছেন বলে জানান, ইউছুব আলী। এছাড়াও শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন স্থানে সরকারি বেসরকারি জমি দখলের অভিযোগ করেন। এবং গত ১০ জুলাই শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে মখন মিয়া ও ফুল মিয়া কতৃক তার বিরুদ্ধে করা সকল অভিযোগ মিথ্যা, কাল্পনিক ও বানোয়া বলে জানান ইউছুব আলী। বাহুবরের ফয়জাবাদ এলাকায় ভূমিহীনদের উচ্ছেদ করে জমি দখল এর বিষয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক দেবী চন্দ জানান, ভূমিহীনদের উচ্ছেদ ও জমি দখলের অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মখন মিয়া কতৃক শ্রীমঙ্গল হাইল হাওরের হাবিবপুর মৌজায় প্রায় ৩০ একর জমি দখলের ব্যাপারে জানতে চাইলে, সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড) সন্ধীপ তালুকদার বলেন, বিষয়টি তিনি অবগত নয়, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়অ হবে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হাজী মখন মিয়া জানান, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অনেক অভিযোগ আনা হয়েছে। এমনকি ১৯৭১ সালে আমার ভূমিকা কি ছিল এবং আমি কেনো সিলেট থেকে শ্রীমঙ্গলে এসেছি এসব মিথ্যাচারের বিষয়ে আমি ব্যবস্থা নিব। ইউছুব আলী কতৃক শ্রীমঙ্গল ভানুগাছ সড়কস্থ জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে ইউছুব আলীর সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও তার পক্ষের প্রায় ৬ শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
প্রকাশক ও সম্পাদক
মোস্তাকিম সরকার
অফিস: বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি আদাবর, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
বিজ্ঞাপন: ০১৭১৬-৬৪০০৬৯, বার্তা কক্ষঃ ০১৭৩১২৪৪৭৬০
Email: editormuktinews24@gmail.com, info@muktinews24.com
© 2023 মুক্তিনিউজ২৪. All rights reserved