মোঃ আফজাল হোসেন, ফুলবাড়ী, দিনাজপুর প্রতিনিধি
দেশের উত্তরাঞ্চলের দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি এলাকায় ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের কারণে খনি এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামগুলিতে সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। খনিটি স্থাপনের পর থেকে লাভবান হলেও অন্যদিকে খনিটি লোকসানের বোঝা নিয়ে চলছে। প্রাপ্ত তথ্য সূত্রে জানা যায়, পূর্বে যেভাবে খনির ভূ-গর্ভ থেকে কয়লা উত্তোলন করা হতো বর্তমান মাটির নিচে সুড়ঙ্গ পথে কয়লা তোলা হচ্ছে। খনি এলাকায় ওয়াটার ট্রিটমেন্ট স্থাপনের পর থেকে মৌপুকুর, পাতিগ্রাম, পাঁচঘরিয়া, বৈদ্যনাথপুর সহ আরো কয়েকটি গ্রামে টিউবওয়েল ও সাবমারসিবল পাম্প থেকে স্বল্প মাত্রায় পানি উত্তোলন হচ্ছে। যেভাবে পানি ভূ-গর্ভ থেকে উত্তোলন হওয়ার কথা সেভাবে পানি উঠছে না। এতে সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া এলাকায় বর্তমান বাসা বাড়ি সহ অন্যান্য স্থাপনাগুলিতে প্রচন্ড ফাটল দেখা দিয়েছে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় খনির ভূ-গর্ভ থেকে কয়লা উত্তোলনের ফলে যে কম্পন সৃষ্টি হচ্ছে তাতে ঘরবাড়ি স্থাপনা গুলে ফেটে যাচ্ছে। কয়েক হাজার পরিবার তাদের পরিজন নিয়ে আতঙ্কে দিনযাপন করছে। অথচ খনির শুরু থেকে খনি এলাকার সার্বিক উন্নয়নের জন্য সিএসআর ফান্ড হতে বরাদ্দ দেওয়ার কথা থাকলেও নাম মাত্র বরাদ্দ দিয়ে বাকি অর্থ খনি এলাকার বাহিরে দেওয়া হচ্ছে। এতে করে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার লোকজন সিএসআর ফান্ড থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। খনির শুরু থেকেই ক্ষতিগ্রস্থদেরকে অনেক আশার বানি শুনিয়েছিলেন খনি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে খনি এলাকায় সেরকম আত্মসামাজিক উন্নয়ন ঘটেনি, বেকারের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়নি, যা হয়েছে হাতে গোনা কিছু মাত্র ব্যক্তি লাভবান হয়েছে। অথচ সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী কথা ছিল খনি এলাকায় ঘর ঘর চাকুরী দেওয়া হবে, মাইনিং সিটি দেওয়া হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন কিছুই বাস্তবায়ন করা হয়নি। এলাকার মানুষ দেশের স্বার্থে নিজের সম্পদ দেশকে দিয়ে আজ পথে বসতে চলেছে। এখন যেটুকু সম্পদ বাকি রয়েছে সেগুলি খনি কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করলে এই এলাকার মানুষগুলি কোথায় যাবে, কিহবে তাদের ভবিষ্যৎ সে ব্যাপারে খনি কর্তৃপক্ষ কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন তা আমাদের কারো বোধগম্য নয়। রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা, নেই কোন চিকিৎসা সু-ব্যবস্থা। দীর্ঘ ২ যুগ ধরে এলাকার এই বেহাল অবস্থা।
এ ব্যাপারে এলাকার মৌ পুকুর গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা এনামুল হক জানান, এই ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার লোকজন খনি থেকে কোন সুযোগ সুবিধা পায়না, আমাদের প্রতি খনি কর্তৃপক্ষ অবিচার করছে। আর কতদিন এভাবে ধুকে ধুকে ক্ষতিগ্রস্থদের জীবন যাপন করতে হবে আমাদের জানা নেই। মাননীয় সংসদ সদস্য এই এলাকার ক্ষতিগ্রস্থদের অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু কিছুই বাস্তবায়ন করেননি। এ ব্যাপারে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। তবে ওয়াটর ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের দায়িত্বে যারা আছে তাদের সাথে কথা বলেন। তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
প্রকাশক ও সম্পাদক
মোস্তাকিম সরকার
অফিস: বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি আদাবর, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
বিজ্ঞাপন: ০১৭১৬-৬৪০০৬৯, বার্তা কক্ষঃ ০১৭৩১২৪৪৭৬০
Email: editormuktinews24@gmail.com, info@muktinews24.com
© 2023 মুক্তিনিউজ২৪. All rights reserved