মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক :বর্তমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়া অনিরাপদ বলে মনে করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রোহিঙ্গা সংকটের ছয় বছর উপলক্ষ্যে এক বিবৃতিতে এমন অভিমত প্রকাশ করেছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস।বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সহিংসতা, ধর্ষণ ও নৃশংস হত্যাভিযানের ছয় বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ। সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গাকে বহনযোগ্য অল্প কিছু জিনিস নিয়ে পালাতে বাধ্য করেছিল শাসকদের এই গণহত্যা। বাংলাদেশের জনগণ সহানুভূতি এবং মানবতার হাত বাড়িয়ে তাদের স্বাগত জানিয়েছিল। প্রায় এক মিলিয়ন উদ্বাস্তুর প্রতি আতিথেয়তা অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশের জনগণ। আমরা এই উদারতার প্রশংসা করি।আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশকে তার এই প্রচেষ্টায় সমর্থন জানাতে সমবেত হয়েছিল। আমেরিকার জনগণ ২০১৭ সাল থেকে এ অঞ্চলজুড়ে উদ্ভূত মানবিক সংকটের প্রতিক্রিয়ায় ২.১ বিলিয়নের ডলারেরও বেশি অবদান রেখেছে। এর ভেতর রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং তাদের আশ্রয়দাতা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য ১.৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা পেয়েছে বাংলাদেশ। আমাদের এ সমর্থন অবিচল রয়েছে।দূতাবাসের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ ও এ অঞ্চলের অন্য দেশে আশ্রয় খুঁজে ফেরা রোহিঙ্গারা দীর্ঘকাল ধরে ভুগছে। মর্যাদার সঙ্গে, নিরাপদে বাড়ি ফিরে যাওয়া, সপরিবারে শান্তিতে বাস করা এবং অর্থ ও উদ্দেশ্যপূর্ণ জীবনযাপনের সুযোগ পাওয়া তাদের অধিকার। সেই লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারি, আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ ও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আদালতকে সমর্থনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচার, নৃশংস অপরাধীদের জন্য জবাবদিহিতা এবং সংকটের সমাধান খুঁজে পেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।মিয়ানমারের অবস্থার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিশ্বের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ এবং প্রান্তিক এই জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাই। আমাদেরকে অবশ্যই বাংলাদেশ সরকার এবং রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানকারী বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখতে হবে।বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিশ্বজুড়ে অন্যান্য সংকট যেহেতু সীমিত সম্পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, সে কারণে রোহিঙ্গারা তাদের আশ্রয়দানকারী জনগোষ্ঠী এবং নিজ পরিবারের অর্থনৈতিক কল্যাণে কীভাবে অবদান রাখতে পারে তা চিহ্নিত করার গুরুত্ব বাড়ছে। এর মধ্যে রয়েছে আয়-উৎপাদনমূলক কর্মকাণ্ড এবং আনুষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জনের সুযোগ, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ভবিষ্যতে আরও বড় অবদান রাখার লক্ষ্যে রোহিঙ্গা সামাজিক সংস্থাগুলোতে তাদের অন্তর্ভুক্তির ব্যবস্থা করা। আমরা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য টেকসই সমাধান নিশ্চিত করতে সর্বোত্তম চর্চা, ধ্যানধারণা এবং সংস্থান বিনিময়ে উন্মুখ।বর্তমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়া অনিরাপদ উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়, পুনর্বাসনের মাধ্যমে দায়িত্ব ভাগ করে নিয়ে রোহিঙ্গাদের দুর্দশার সর্বাঙ্গীণ সমাধানে অবদান রাখছি। আন্তর্জাতিক পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় অবদান রাখা অন্যান্য দেশগুলোর উদারতাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আশা করি, ঐতিহ্যগতভাবে পুনর্বাসন দেওয়া দেশগুলোর বাইরেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টায় যোগ দেবে। ২০০৯ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশসহ এ অঞ্চল থেকে প্রায় ১৩ হাজার রোহিঙ্গাকে স্বাগত জানিয়েছে।যেহেতু এই সংকট সপ্তম বছরে পদার্পণ করছে, সমগ্র অঞ্চলজুড়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুর্ভোগ কমাতে বা শেষ করতে সম্ভাব্য সব বিকল্প খুঁজতে আমাদের অবিচল থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রকাশক ও সম্পাদক
মোস্তাকিম সরকার
অফিস: বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি আদাবর, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
বিজ্ঞাপন: ০১৭১৬-৬৪০০৬৯, বার্তা কক্ষঃ ০১৭৩১২৪৪৭৬০
Email: editormuktinews24@gmail.com, info@muktinews24.com
© 2023 মুক্তিনিউজ২৪. All rights reserved