মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নতুন অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। আজ বুধবার সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ইউএস বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিসের এক্সিকিউটিভ বিজনেস ডেলিগেশনের সাথে গোলটেবিল বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, আমেরিকার ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। নতুন কিছু কোম্পানি দেশে বিনিয়োগ করতে চায়। তারা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুবিধা ও অসুবিধার কথা বলেছেন। আমরা তাদের বলেছি যদি তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে তাহলে তাদের সকল সমস্যার সমাধান করতে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে। এর আগে অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, কোভিড মহামারি এবং ইউক্রেন যুদ্ধের পটভূমিতে বৈশ্বিক যে সংকট দেখা দিয়েছে তা সরকার এবং বেসরকারি খাতের মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। বর্তমান পরিস্থিতিতে যে চ্যালেঞ্জগুলো দেখা দিয়েছে তা মোকাবিলায় সরকারি ও বেসরকারি উভয়কে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে মার্কিন অংশীদারিত্ব বিশেষ করে মার্কিন বেসরকারি খাতের সাথে সংশ্লিষ্টদের বাংলাদেশের ক্রমাগত বৃদ্ধির জন্য পাশে থাকার আহ্বান জানান। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারী ও যোগ্য নেতৃত্বের কারণে দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করায় বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের আগামীর সিংহভাগ বিনিয়োগ বাংলাদেশে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।
টিপু মুনশি বলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণ করবে যার ফলে কিছু উন্নত অর্থনীতির দেশে আমাদের শুল্কমুক্ত বাজারে প্রবেশাধিকার ব্যাহত হবে। কিন্তু জাতি হিসেবে এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের। বাংলাদেশ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি এই যাত্রায় মার্কিন সরকার ও মার্কিন বেসরকারি সংস্থাগুলোও আমাদের পাশে থাকবে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিচক্ষণ সরকারি নীতি এবং উন্মুক্ত বাজারের নেতৃত্বে বেসরকারি, রপ্তানিমুখী উৎপাদন, উচ্চ উৎপাদনশীল কৃষি এবং একটি ক্রমবর্ধমান পরিষেবা খাত আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তিতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে পৃথিবীর অনেক দেশের জন্য উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে এবং স্বীকৃতি পেয়েছে। বিগত কয়েক দশক ধরে প্রায় ৭ শতাংশ গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধিসহ এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনীতি হিসাবে বিবেচিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল এবং পায়রা বন্দর, কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর এবং পাওয়ার স্টেশন, কর্ণফুলী টানেলসহ অন্যান্য মেগা-প্রকল্প এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র যেগুলো সরকারের ফাস্ট ট্র্যাক উদ্যোগের অংশ তা রপ্তানি ও আমদানির দৃশ্যপটকে আমূল পরিবর্তন করছে যার ফলে আরও বেশি বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে যখনই জিনিস-পত্রের দাম বাড়ে তখন তা নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। বাজারে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রয় হবে। ভোক্তা এবং ব্যবসায়ী উভয়ের স্বার্থ সংরক্ষণ হবে এটাই আমরা চাই। এ লক্ষ্যে আমরা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর দিয়ে বাজার মনিটরিং করে থাকি। অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে অনেককে জেল জরিমানা করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির লোকবল কম থাকার কারণে পর্যাপ্ত অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। সার্বিক মূল্যস্ফীতি নিয়ে অপর এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, যদি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিশ্লেষণ করেন তাহলে সহজেই বোঝা যায় সারা বিশ্ব একটি সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ইংল্যান্ডের দোকানেও যখন তিনটার বেশি টমেটো কেনা যাবে না বলে রিস্টিক করে দেয়। জার্মানির দোকানগুলোতে তেলের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়। তখন আমাদের মতো দেশে এ সংকটের বাহিরে থাকতে পারে না। মুহূর্তের মধ্যে হয়তো সমাধান হবে না তবে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে যাতে করে গ্লোবাল এই দুরবস্থার মধ্যে দেশের মানুষ ভালো থাকে। সভায় আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমদ এবং ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সভাপতি অতুল কেসাব, এফবিসিসিআই-এর সভাপতি মাহবুবুল আলম অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।
প্রকাশক ও সম্পাদক
মোস্তাকিম সরকার
অফিস: বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি আদাবর, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
বিজ্ঞাপন: ০১৭১৬-৬৪০০৬৯, বার্তা কক্ষঃ ০১৭৩১২৪৪৭৬০
Email: editormuktinews24@gmail.com, info@muktinews24.com
© 2023 মুক্তিনিউজ২৪. All rights reserved