মুক্তিনিউজ২৪.কম ডেস্ক : ম্যাচটা জেতার কথা ছিল সহজে, এমনকি ইনিংস ব্যবধানে জেতার হাতছানিও ছিল। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে চাপে পড়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে আয়ারল্যান্ডের বীরোচিত প্রতিরোধ খেলার সমীকরণ দেয় বদলে। যদিও তৃতীয় দিনে দাপট দেখালেও চতুর্থ দিনে এসে আর অভিজ্ঞতার কাছে পেরে উঠেনি আইরিশরা। তাদের দেয়া সহজ লক্ষ্য পেরুতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি বাংলাদেশকে।
|
শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে একমাত্র টেস্টে আয়ারল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে তিন বছর পর টেস্ট জিতল সাকিব আল হাসানের দল। ১৩৮ রানের লক্ষ্য বাংলাদেশ পেরিয়ে যায় ২৭.১ ওভারে। দলকে নিরাপদে তীরে ভিড়িয়ে মুশফিক অপরাজিত থাকেন ৪৮ বলে ৫১ রানে। ২২ বলে ২০ রানে অপরাজিত থেকে তার সঙ্গে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন মুমিনুল হক।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় এদিন ওপেন করতে নেমে আগ্রাসী শুরু পেয়েছিলেন লিটন দাস। তার দুর্ভাগ্যজনক বিদায়ের পর নাজমুল হোসেন শান্ত আবার হন ব্যর্থ। ৪৩ রানে ২ উইকেট হারালেও মুশফিকুর রহিম-তামিম ইকবাল মিলে বাকি কাজ সারতে থাকেন অনায়াসে। জয়ের একদম কাছে এসে তামিম আউট হলেও মুশফিক ছিলেন অবিচল। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশের মিডল অর্ডার ব্যাটার
আগের দিনের ৮ উইকেটে ২৮৬ রান নিয়ে নেমে ৩৬ মিনিট ও ৯ ওভার স্থায়ী হয় আয়ারল্যান্ডের ইনিংস। তারা এদিন যোগ করতে পারে আর কেবল ৬ রান। শেষ দুই উইকেটই তুলে নেন ইবাদত হোসেন।
আয়ারল্যান্ডের ইনিংস শেষ করার পর ড্রেসিংরুমের দিকে দৌড় দেন লিটন। তখনো অবশ্য আঁচ করা যায়নি ইনিংস ওপেন করতে যাচ্ছেন তিনি। সবাইকে চমকে দিয়ে তামিম ইকবালের সঙ্গী হতে দেখা যায় তাকে। টেস্টে এর আগে ১০ ইনিংসে ওপেন করেছেন, তবে সাম্প্রতিক সময়ে আর তা করেন না। কিপিং না করলেও লিটন খেলেন মিডল অর্ডারে। এই টেস্টে তো কিপিং করছেন। ১১৬ ওভার কিপিং করে ওপেন করতে নামা কিছুটা অস্বাভাবিক।
দ্রুত রান আনার চিন্তা থেকেই হয়ত এমনটা করতে চেয়েছে বাংলাদেশ। মুখোমুখি প্রথম বলে সেটা বুঝিয়েও দেন লিটন। অফ স্পিনার ম্যাকব্রেইনকে উড়ান ছক্কায়, পরের বলেও মারেন বাউন্ডারি।
মার্ক অ্যাডায়ারকে চোখ ধাঁধানো কাট, স্ট্রেট ড্রাইভেও ঝলক দেখান তিনি। মনে হচ্ছিল লিটন ডানা মেলে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেবেন সমীকরণ। অ্যাডায়ারের বলেই আউট হলেন বড় অদ্ভুতভাবে। শর্ট বলে পুল করতে গিয়েছিলেন, টাইমিং না হওয়ায় বল প্রথমে লাগল হেলমেটে, পরে হাতে লেগে নিচে নেমে ভেঙে দিল স্টাম্প!
প্রথম ইনিংসে ওপেন করতে নেমে প্রথম বলেই আউট হওয়া নাজমুল হোসেন শান্ত এবার তিনে নেমেও ব্যর্থ। ম্যাকব্রেইনের অফ স্পিনে খোঁচা মেরে স্লিপে ক্যাচ দেন তিনি। এবার শান্ত ব্যাট থেকে আসে ৪ রান।
৪৩ রানে ২ উইকেট পড়ার পর নেমে প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মুশফিক প্রথম বলেই মারেন বাউন্ডারি। পরে অনেকটা টি-টোয়েন্টি মেজাজে খেলতে থাকেন তিনি। তামিম ছিলেন রয়েসয়ে। সময় নিয়ে থিতু হয়ে তিনিও ছুটছেন সাবলীলভাবে। ২ উইকেটে ৮৯ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। লাঞ্চের পর দরকার ছিল স্রেফ ৪৯ রান।
তা তুলতে মুশফিককে দেখা যায় অগ্রণী ভূমিকা। খুব একটা জোরের উপর চেষ্টা না করেও সহজেই বাউন্ডারি পাচ্ছিলেন তিনি। তামিম অনেকটা সময় নিয়ে খেলে সতর্ক পথেই খেলছিলেন। তবে লেগ স্পিনার বেন হোয়াইটের বলে করে বসেন অদ্ভুত ভুল। শর্ট বল পুল করতে গিয়ে ব্যাটে নিতে পারেননি, টপ এজড হয়ে উঠে সহজ ক্যাচ। লম্বা সময় পর টেস্টে ফেরা তামিম প্রথম ইনিংসে ২১ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে থামেন ৩১ রান করে।
এরপর মুমিনুল হক নেমেও আউট হতে পারতেন। ম্যাকব্রেইনের বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে স্টাম্পিংয়ের সহজ সুযোগ দিয়েছিলেন। লোরকান টাকার সেটা গ্রহণ করতে পারেননি। আর কোন বিপদ ঘটেনি বাংলাদেশের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আয়ারল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২১৪
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩৬৯
আয়ারল্যান্ড ২য় ইনিংস: (আগের দিন ২৮৬/৮) ১১৬ ওভারে ২৯২ (ম্যাকব্রাইন ৭২, হিউম ১৪, হোয়াইট ০*; সাকিব ১৩-৪-২৬-২, তাইজুল ৪২-১৬-৯০-৪, মিরাজ ৩০-৮-৫৮-০, ইবাদত ১৫-৩-৩৭-৩, শরিফুল ৮-১-৩৫-১, খালেদ ৭-২-৩৮-০, মুমিনুল ১-০-২-০)।
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ১৩৮) ২৭.১ ওভারে ১৩৮/৩ (তামিম ৩১, লিটন ২৩, শান্ত ৪, মুশফিক ৫১*, মুমিনুল ২০*; অ্যাডায়ার ৬-০-৩০-১, ম্যাকব্রাইন ১৩.১-০-৫২-১, হোয়াইট ৭-০-৪৩-০, টেক্টর ১-০-৫-০)।
ফল: বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: মুশফিকুর রহিম।
প্রকাশক ও সম্পাদক
মোস্তাকিম সরকার
অফিস: বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি আদাবর, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
বিজ্ঞাপন: ০১৭১৬-৬৪০০৬৯, বার্তা কক্ষঃ ০১৭৩১২৪৪৭৬০
Email: editormuktinews24@gmail.com, info@muktinews24.com
© 2023 মুক্তিনিউজ২৪. All rights reserved