মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : শুরু হলো সনাতন ধর্মের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে আজ শুক্রবার শুরু হয়েছে বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। পাঁচ দিনের এ উৎসব শেষ হবে আগামী ২৪ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। সর্বজনীন এ উৎসবকে আনন্দমুখর করে তুলতে দেশজুড়ে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। আর দশজন মানুষের মতো তারকারাও মেতে উঠবেন এ উৎসবের আনন্দে। কয়েকজন তারকার স্মৃতিময় পূজার কথা তুলো ধরা হলো।
অপু বিশ্বাস: এবার ঢাকায় থাকব। অষ্টমীর দিন অঞ্জলি দেব। পূজা ট্র্যাডিশনাল একটি বিষয়। সাজপোশাকে তাই ট্র্যাডিশনাল লুকটা আনতে চাই। গোল্ড দিয়ে আমাদের প্রতিমার আদলে ডিজাইন করার কথা ভাবছি। অষ্টমীর দিন সেটা পরব। পূজার বিকেলগুলো পরিবারের সঙ্গে কাটাব। জয়কে নিয়ে এবার অনেক আনন্দ করব। ওকে নিয়েই এবারের সব পরিকল্পনা। পূজায় পরিবারের সদস্যদের সুন্দর সুন্দর উপহার দিয়েছি। আমি নিজেও পূজার উপহার পেয়েছি। ছোটবেলার পূজা তো অনেক গর্জিয়াস ছিল, অনেক পরিকল্পনা থাকত, অনেক আনন্দ থাকত। সারা বছর অপেক্ষায় থাকতাম কখন পূজা আসবে। এখনকার পূজার সঙ্গে সেই সময়ের তুলনা চলে না। এখন সব দিন একই রকম হয়ে গেছে। পেশাগত ব্যস্ততা আর পূজার ব্যস্ততা মিলেমিশে এক হয়ে গেছে!
শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়: পূজার স্মৃতির কথা বলতে হলে অবশ্যই বলতে হবে ছোটবেলার পূজার কথা। তখন তো পূজায় অনেক আনন্দ হতো। এখনও পূজার ছুটি শব্দটি শুনলে উত্তেজনায় লোম দাঁড়িয়ে যায়। পূজা আমাদের জন্য সেরা ও বড় উৎসব। ছোটবেলা থেকেই পূজা উপভোগ করতাম। বাড়ির সামনেই পূজা হতো। সারা রাত জেগে ঠাকুর দেখতাম। যখন একটু বড় হই আমাকে আর দিদিকে দূরে কোথায়ও পূজায় নিয়ে যেত না। তবে বাড়ির সামনের পূজা মণ্ডপে বেশ মজা করতাম। এবারের পূজায় পরিবার বন্ধুদের নিয়ে আনন্দ করব। ছোটবেলায় পূজার সময় একবার মেলাতে হারিয়ে গেছিলাম। তখন বয়স ৫-৬ বছর হবে। মেলার মধ্যে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলাম। এমন সময় কান্না দেখে একটি পরিবার এগিয়ে আসেন এবং আমার পরিচয় জেনে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছিলেন। বাবা-মা খুব টেনশনে ছিলেন। চারদিকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেন। সবসময় অপেক্ষায় থাকতাম পূজার নতুন জামা ও জুতার। কবে বাবা শপিং করতে নিয়ে যাবেন। পূজায় উপহার দিতে ও পেতে দুটিই ভালো লাগে। ছোটবেলায় দেখতাম বড় বড় তারকা পূজা উদ্বোধন করতেন। এখন আমিও করছি বিষয়টি খুব উপভোগ করি। পূজা সবসময় আমার কাছে একই। পূজায় পুজো পুজো গন্ধ, সিতুর খেলা ও অঞ্জলি দেয়া। প্রতি বছর পূজার জন্য অপেক্ষা করি। মাঝে মাঝে গাড়ি নিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে পূজা দেখতে যাই।
চঞ্চল চৌধুরী: যখন পূজাটা উপভোগ করতাম, তখন অনেক ছোট ছিলাম। নতুন পোশাকের আনন্দ ছিল। সারা বছর অপেক্ষা করতাম পূজার জন্য, নতুন পোশাক পাব বলে এবং বার বার দর্জির দোকানে যেতাম। রীতিমতো দোকানদারও বিরক্ত হতেন। তারপরও যেতাম কারণ বছরে একবার নতুন পোশাক পাওয়া খুবই আনন্দের বিষয় ছিল। ছোটবেলার পূজা ছিল পোশাককে কেন্দ্র করে। দিনের পরিবর্তনে সেই শৈশব-কৈশোর পার হয়ে এসে এখন আমার সন্তান পূজা উৎসবের দিনগুলোতে আনন্দ করবে। এখন সেই আনন্দ পূরণ করার দায়িত্বটা আমার। এখন নিজের জন্য সেভাবে আনন্দ করা হয় না। ছোটবেলায় এক মাস আগ থেকে অপেক্ষা করতাম পূজার জন্য।
বিদ্যা সিনহা মিম: পূজার স্মৃতির কথা বলতে হলে অবশ্যই বলতে হবে ছোটবেলার পূজার কথা। তখন তো অনেক আনন্দ হতো। পূজায় মামা বাড়ি যাওয়ার অপেক্ষায় থাকতাম। মামার বাড়িতে পূজার আনন্দ একটু অন্যরকম হতো। পূজা মানেই সকালবেলা উঠে অঞ্জলি দেয়া। সারাদিন নতুন পোশাক পরে ঘুরে বেড়ানো এবং সবাই মিলে সারাদিন খুব মজা করি। ছোটবেলার পূজা খুব মিস করি। পূজার সময় নতুন পোশাকের অপেক্ষায় থাকতাম, এখনও থাকি। তারকা হওয়ার আগের এবং পরের পূজার মাঝে কি কোন পার্থক্য দেখতে পান? হ্যাঁ, কিছু পার্থক্য তো অবশ্যই আছে। আগে পূজার সময় মণ্ডপে ঘুরতাম, কেউ তেমন একটা চিনত না। কিন্তু এখন সবাই চেনে। সবাই ঘুরে ঘুরে তাকায়, কাছে আসে এবং কথা বলতে চায়। এখন তো আবার সেলফির যুগ। অনেকেই আমার সঙ্গে সেলফি তুলতে চান। অবশ্য এগুলো আমি বেশ উপভোগ করি।
অপর্ণা ঘোষ: ছোটবেলা ছাড়া স্মরণীয় পূজা আসলে নেই। সে সময়টাতেই পূজা বেশি উপভোগ করতাম। বড় হবার পর পূজায় মজা পাই না এবং ঢাকায় পূজার রেশ খুঁজেও পাই না। চট্টগ্রামের পূজা খুব ইনজয় করতাম। সেখানকার পূজা এখনও অনেক মিস করি। দুর্গাপূজা মানেই চট্টগ্রাম। পূজা মানেই আমার কাছে ছেলেবেলা।
উর্মিলা শ্রাবন্তী কর: আমার জীবনে আর কোন দিন পূজা হয়ত বিশেষভাবে আসবে না। কারণ, বাবাকে হারিয়ে ভীষণ একা হয়ে গেছি। এখন পূজা আসলেই মন খারাপ হয়। বাবা মারা যাওয়ার আগে একটি স্মরণীয় স্মৃতি আছে। মৃত্যুর ছয় দিন আগে আমাকে পাঁচটি শাড়ি কিনে দেয়। সব শাড়িই ছিল আমার পছন্দের। যার কারণে পূজার সময়টা আমার জন্য এখন বেশ কষ্টের। এটি চিরজীবনের জন্য।
পায়েল মুখার্জী: পূজার সময় অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়। সবার সঙ্গে দেখা করা আনন্দ ভাগাভাগি করা। পূজার স্মরণীয় ও মজার ঘটনা হচ্ছে প্রেম ও চুমু। এটার অন্যরকম মজা। তা ছাড়া দশমীতে শাড়ি পড়ার মজাই অন্যরকম। নতুন জামা কাপড় পরা, সাজগোজ করা। পাড়ার ছেলেরা দেখবে। নতুন প্রেম হবে। তবে পূজার সময়ের প্রেম বেশি মনে পড়ে। প্রতিটি পূজায় প্রেম হয়। অনেক ছেলেই তখন লাইন মারে।
আমিও চোখাচোখি করি। পূজায় নতুন নতুন প্রেম হয় আবার পূজার পর ভেঙ্গে যায়। পূজাই মানেই প্রেম। তাই পূজার উন্মাদনা অন্যরকম। কখনও কাউকে প্রেমের প্রস্তাব দেইনি। তবে প্রতি বছর পূজার সময় কম করে হলেও ৮-১০টি প্রেমের প্রস্তাব পাই। স্টেজে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা হয় আর স্টেজের পাশে আমাকে নিয়ে প্রেমের প্রতিযোগিতা হয়। প্রচুর ছেলে বাড়ির সামনে কিংবা পূজা মণ্ডপের সামনে এসে তাকিয়ে থাকত। অনেক প্রেমিকই ভেতরে ভেতরে প্রেম জমা রাখত। কেউ সাহস করে বলতে পারত না (হা...হা...)।
প্রকাশক ও সম্পাদক
মোস্তাকিম সরকার
অফিস: বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি আদাবর, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
বিজ্ঞাপন: ০১৭১৬-৬৪০০৬৯, বার্তা কক্ষঃ ০১৭৩১২৪৪৭৬০
Email: editormuktinews24@gmail.com, info@muktinews24.com
© 2023 মুক্তিনিউজ২৪. All rights reserved