এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব শাকের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। সমান গতিতে বাড়ছে সবজির দামও। শীতকালীন সবজি বাজারে আসতে শুরু করার পরও অধিকাংশ সবজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার কিংবা তার কাছাকাছি দামে। বেশ কিছু সবজির মূল্য আকাশ ছোঁয়া। শাক-সবজি কিনতে বাজারে এসে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। তাদের অভিযোগ, পচনশীল পণ্য শাক-সবজির বাজারেও এখন চলছে সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের কারণে অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন সবজির দাম অনেক বেশি। তারা বলছেন, এখন বৃষ্টি-বাদল নেই, আসতে শুরু করেছে শীতকালীন সবজি, তবু পেঁপে ছাড়া সব সবজির দাম বাড়তি। বিক্রেতারাও দাম বাড়ার বিষয়টি স্বীকার করছেন। তারা বলছেন, সবজির সরবরাহ কম তাই দাম বেশি। শীতকালীন সবজি পুরোদমে বাজারে আসতে শুরু করলে দাম কমবে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শাল-শাকের আটি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। অথচ এক সপ্তাহ আগেও একই আটি বিক্রি হয়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়। লাউশাকের আটি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। অথচ এক সপ্তাহের আগে লাউশাকের আটি বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। একইভাবে বিশ টাকা আটির ডাটা শাক বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। পালন শাক বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা আটিতে। মুলাশাক বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা আটিতে। আর কলমি শাক বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা আটি। মুগদা বাজারের শাক নিতে আসা শহিদুল ইসালাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, শাকের দাম শুনে আমি অবাক। শাক-সবজি তো বাংলাদেশে উৎপাদন হয়। এগুলোতে তো আর আর রাশিয়া-ইউক্রেন কিংবা ইসরায়েল ও গাজার যুদ্ধের প্রভাব নেই তবু কেন দাম বাড়ছে। তিনি বলেন, তিন দোকান ঘুরে এক আটি লাউশাক কিনেছি ৫৫ টাকা দিয়ে, একটা কী মানা যায়? মুগদায় সাত বছর ধরে ব্যবসা করা শাহজালাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, শাক-সবজির সবকিছুর দাম বাড়ছে। আমার জীবনে এতো দামে শাক বিক্রি করিনি। দাম বাড়ছে কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের বেশি দামে কিনতে হয়, তাই বেশি দামে বিক্রি করি। একই কথা বলেন বাড্ডার ব্যবসায়ী শাহ-আলম। ক্রেতা সেজে দাম জানেতে চাইলে তিনি বলেন, শাল-শাকের আটি ২৫ টাকা। লাউশাক ৫০ টাকা। পুইশাক ৩০ টাকা। কততে দেবেন জানতে চাইলে উত্তরে তিনি বলেন, এক দাম, দামা-দামি করবে না। নিলে নেন, না নিলে বিরক্ত করবেন না। সব জিনিসের দাম বাড়তি, শুধু শাকের দাম বাড়ালেই দোষ। সবজির দাম শুনে হতবাক ক্রেতা রাজধানীর বাজারগুলোতে শীতকালীন সবজি লাউ, টমেটো, ফুলকপি, সিম, মুলা ও বরবটি আসছে শুরু করেছে। তবু আগের সেই চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে এসব সবজি। অধিকাংশ সবজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। ফলে বাজারে এসে চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যআয়ের মানুষ। মধ্যবাড্ডা বাজার ঘুরে দেখা যায়, শীতকালীন সবজি সিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি। ৪০ থেকে ৫০ টাকার লাউ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা পিস। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি। গাজর বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজিতে। বরবটি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। করলা ও বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১১০ টাকা কেজিতে। কচুর লতি ও কচুর মুখী বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে। শীতকালীন সবজি মূলা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। পটল, ঝিঙে, ধুন্দুল বিক্রি হচ্ছে একই দরে। প্রতিপিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, কুমড়া ৬০ টাকা এবং কাঁচামরিচ ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শসা ও আলু ৬০ টাকা কেজি। আর সব চেয়ে কম দামি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজিতে। মধ্যবাড্ডা বাজারে ৫০০ টাকা নিয়ে এসেছেন ৭০ঊর্ধ্ব ক্রেতা আশিকুল ইসলাম। বাজার করতে এসে সবজির দাম শুনে হতবাক। তিনি চার-পাঁচটি দোকান ঘুরে এক কেজি করে পটল ও আলু, একপোয়া কাঁচামরিচ কিনে বাসায় পথ ধরেন। জানতে চাইলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রত্যেকটা সবজির দাম বাড়তি। দুদিন আগেও আলু কিনেছি ৫০ টাকা কেজি। আজকে কিনেছি ৬০ টাকায়। এটা কী মানা যায়। বাসায় ডাল আছে। আলু নিচ্ছি বলবো আলু ভর্তা-ডাল রান্না করতে। তাই শাক-সবজি কিনলাম না।
প্রকাশক ও সম্পাদক
মোস্তাকিম সরকার
অফিস: বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি আদাবর, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
বিজ্ঞাপন: ০১৭১৬-৬৪০০৬৯, বার্তা কক্ষঃ ০১৭৩১২৪৪৭৬০
Email: editormuktinews24@gmail.com, info@muktinews24.com
© 2023 মুক্তিনিউজ২৪. All rights reserved