এএফএম মমতাজুর রহমান
আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ
অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারি নারী হিসেবে বগুড়া জেলার শ্রেষ্ঠ জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন আদমদীঘির সান্তাহার ইউপি চেয়ারম্যান নাহিদ সুলতানা তৃপ্তি। শনিবার রোকেয়া দিবস উপলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কে নাহিদ সুলতানার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জয়িতা সম্মাননা তুলে দেন জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম।
বিকেলে নাহিদ সুলতানা তৃপ্তি তার সাফলতা অর্জন সর্ম্পকে তুলে ধরে বলেন, ১৯৮০ সালে নওগাঁর বক্তারপুর গ্রামে তার জন্ম। বাবা ছিলেন পেশায় একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। দুই ভাই-বোনের মধ্যে তিনি বড়। অসচ্ছল সংসারে বাবাকে সহযোগিতার জন্য ১২ বছর বয়স থেকেই তিনি হস্তশিল্প অর্থাৎ সুই-সুতার কাজ শুরু করেন। নকশী কাঁথা, জামায় ফুল তোলা কাজ করে কিছু উপার্জন করতেন। পাশাপাশি লেখাপড়া চলছিল। অষ্টম শ্রেনীতে পড়ার সময় হস্ত শিল্পকে বড় পরিসরে গড়ে তোলার জন্য প্রথমে ৫ জন নারী কর্মীকে সাথে নিয়ে নতুন উদ্দ্যোমে কাজ শুরু করতেই পরিবার থেকে বিয়ে দেন বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউপির পশ্চিম ছাতনী গ্রামে। আতœীয়তার সুবাদে হটাৎ বিয়েটা তার জীবনে আশির্বাদ না হয়ে অভিশাপ হতে শুরু করে। বেকার স্বামীর সংসারে হতাশার গ্লানী তাকে দেয় হাতছানী। এরপর শ^শুর বাড়ীতে শুরু হয় নতুন করে বেচেঁ থাকার লড়াই। অর্থ উপার্জন আর বড় হওয়ার স্বপ্ন তাকে ঘুমাতে দেয় না। সেই সাথে সামাজিক দায়বদ্ধতার কথা মাথায় রেখে প্রতিবন্ধী নারী, ডিভোর্সী নারী ও নির্যাতিত নারীদের বিনামূল্যে বাটিক-বুটিক, জামায় ফুল তোলার কাজ শেখাতে থাকেন। এসএসসি পাশের লক্ষ্যনিয়ে এগোতে থাকেন লেখাপড়া। এদিকে তার হস্তশিল্পের কাজের ব্যাপক সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। সে কাজ থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে সংসার ও ছোট ভাইয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাতে থাকেন। এভাবেই শুরু হয় তার বাঁধাগ্রস্থ্য জীবনের সফল হওয়ার পথচলা। লেখাপড়ায় তিনি এইচএসসি পাশ করেন।
তিনি উদ্দ্যেক্তা হওয়ার গল্প তুলে ধরে আরো জানান, ১৯৯৯ সালে নিজের সোনার গহনা বিক্রি করে মাত্র ১৫ হাজার টাকা আর ৩০ হাজার টাকা মামার কাছে ধার নেন। মোট ৪৫ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করেন পোল্ট্রি মুরগী পালনের খামার। নাম দেন তৃপ্তি পোলট্রি ফার্ম। ব্যবসায়িক ভাবে সেখানে সফল হয়েছেন। বর্তমানে তিনি ছাতনীতে গড়ে তুলেছেন থ্রী-ষ্টার ম্যাটস ইন্ডাষ্ট্রিজ। যেখানে জীবিকা নির্বাহ করছে প্রায় ৫ শতাধিক নারী-পুরুষ। এলাকার মানুষের সেবা করার জন্য গত ২০২২ সালে সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি বসুন্ধরা শুভসংঘের আদমদীঘি উপজেলা শাখার উপদেষ্টা হিসেবে নানা ধরনের সামাজীক কর্মকান্ডে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন।
অর্জন সর্ম্পকে জানান, ২০০৯ সালে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয় আত্মকর্মসংস্থানের জন্য নারী উদ্যোক্তা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক সম্মাননা ক্রেষ্ট ও সনদ পেয়েছেন। শুধু তাই নয় বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক পুরস্কার ও সনদ পেয়েছি। সমাজ সেবায় অবদানের জন্য দেশের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক এ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছেন একাধীকবার।
প্রকাশক ও সম্পাদক
মোস্তাকিম সরকার
অফিস: বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি আদাবর, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
বিজ্ঞাপন: ০১৭১৬-৬৪০০৬৯, বার্তা কক্ষঃ ০১৭৩১২৪৪৭৬০
Email: editormuktinews24@gmail.com, info@muktinews24.com
© 2023 মুক্তিনিউজ২৪. All rights reserved