মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : তিন বছর পর হকি খেলোয়াড়রা দলবদলের অপেক্ষায়। ৩১ জানুয়ারি-৫ ফেব্রুয়ারি দলবদলের আনুষ্ঠানিকতা। আসন্ন দলবদলে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ঢাকা মেরিনার ইয়াংসের (মেরিনার্স) অংশগ্রহণ নিয়ে। গতকাল ক্লাবটি দলবদল পেছানোর জন্য চিঠি দিয়েছে। মেরিনার ইয়াংস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হাসান উল্লাহ খান রানা দলবদলের পেছানোর কারণ সম্পর্কে বলেন, 'আর্থিক সঙ্কটের জন্য আমরা দলবদল পেছানোর অনুরোধ করেছি ফেডারেশনের কাছে। কিছু সময় না পেলে আমাদের দল গঠন করা সম্ভব হচ্ছে না।’ হকি ফেডারেশনের সদস্য ও লিগ কমিটির সম্পাদক খাজা তাহের লতিফ মুন্না মেরিনার্সের চিঠি সম্পর্কে বলেন, 'গতকাল তাদের চিঠি পেয়েছি। ইতোমধ্যে দলবদলের কার্যক্রম (টোকেন প্রদান) শুরু হয়েছে। মেরিনার্সের বিষয়টি এখন সাধারণ সম্পাদকের উপর নির্ভর করছে। হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদ এই প্রসঙ্গে বলেন, 'দলবদলের আলোচনা চলছে গত বছর আগস্ট-সেপ্টেম্বর থেকে। ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির সভাতেও উঠেছিল বিষয়টি। লিগ কমিটির সভায় দলবদলের সিদ্ধান্ত হয়েছে প্রায় দুই সপ্তাহ। সবগুলো ক্লাব যেখানে প্রস্তুত সেখানে একটি ক্লাবের এমন দাবির তেমন যৌক্তিকতা নেই। লিগ কমিটির সভায় মেরিনার্স ক্লাবের প্রতিনিধিও ছিলেন। সেই সভায় সিদ্ধান্তের দশ দিন পর গতকাল চিঠি দেয়ার কারণ সম্পর্কে ক্লাবটির সাধার সম্পাদকের ব্যাখ্যা, 'মেরিনার্সের আবাহনী-মোহামেডানের মতো সামর্থ্য নেই। সীমিত সাধ্যের মধ্যে আমাদের হ্যান্ডবল, টিটি, ক্রিকেট ও হকি দল গঠন করতে হয়। আমাদের ক্লাব সভাপতি পারিবারিকভাবে (অসুস্থতাজনিত) ব্যস্ত। হকি কমিটির চেয়ারম্যানও চিকিৎসাধীন। আবার নির্বাচন পরবর্তী সময়ও চলছে। এই প্রেক্ষাপটে আমাদের দলগঠন করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। ফুটবল, ক্রিকেট সহ অন্য খেলায় প্রিমিয়ার লিগে অংশগ্রহণকারী ক্লাবগুলো একটি ফি পায়। হকিতে এমন রেওয়াজ ছিল না। ২০২১ সালের লিগটি ছিল ব্যতিক্রম। সেই হকি লিগে ক্লাবগুলো প্রধানমন্ত্রীর অনুদান পেয়েছিল। এতে ক্লাবগুলোর দলবদল প্রক্রিয়া মসৃণ ছিল। এবারও সেই রকম অনুদান পাওয়ার দাবি চিঠিও দিয়েছিল চ্যাম্পিয়ন ক্লাব মেরিনার্স। এবার সেই প্রক্রিয়ায় না যাওয়ার ব্যাপারে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, '২০২১ সালে করোনার বছর ছিল। করোনার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়া হয়েছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হকিকে সহায়তাও করেছিলেন। এই বছর সে রকম কোনো বিষয় নেই। তাই যাওয়া হয়নি। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদের হকি অঙ্গনের উত্থান মেরিনার্স থেকেই। ২০১৬ সালে মেরিনার্স হকিতে প্রথম লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়। সেই সময় মেরিনার্সের হকি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন মমিনুল হক সাঈদ। সাঈদকে সাধারণ সম্পাদকের নেপথ্যে অবদান ছিল মেরিনার্সের। সেই সাঈদের সাধারণ সম্পাদক থাকাবস্থায় মেরিনার্সের লিগে অংশগ্রহণ না করলে বিষয়টি বড় দৃষ্টিকটুই লাগবে হকি অঙ্গনের কাছে। মেরিনার্স থেকে সাঈদের উত্থান হলেও এখন তিনি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ অবস্থানে ব্যাখ্যা করলেন, 'অবশ্যই মেরিনার্স থেকে আমার শুরু। হকি কমিটির চেয়ারম্যান থাকাবস্থায় ক্লাবটি চ্যাম্পিয়নও হয়েছিল। ২০১৯ সালের হকি ফেডারেশনের নির্বাচনে আমি মোহামেডানের কাউন্সিলর হয়ে নির্বাচনে করি। চার বছর পর পুনরায় নির্বাচনে আমি বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাউন্সিলরশিপ পেয়ে আবার সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছি। এখন আমি কোনো ক্লাব, জেলা নয় বাংলাদেশ হকির প্রতিনিধি। আমার কাছে এখন সকল ক্লাব-জেলা, সংস্থা সমান। কোনো ক্লাবের প্রতি আমার আনুগত্য বা দায়বদ্ধতা নেই।৩১ জানুয়ারি থেকে দলবদলের আনুষ্ঠাকিতা শুরু হলেও আজ থেকে শুরু হয়েছে টোকেন বিতরণ। আজ ইতোমধ্যে টোকেন সংগ্রহ করেছে অনেকে। এ যেন শুরুর আগেই শুরু। প্রথমবারের মতো এর কারণ সম্পর্কে লিগ কমিটির সম্পাদক খাজা তাহের লতিফ বলেন, 'এবার একটু এভাবে শুরু করা হয়েছে গতবারের অভিজ্ঞতা থেকে। গতবার কয়েকজন খেলোয়াড় নিয়ে দুই ক্লাবের মধ্যে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। খেলোয়াড় এবং ক্লাব উভয় স্বার্থ রক্ষার্থে এবার এই পদ্ধতি করা হয়েছে। গত বছর প্রথম বিভাগ লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে উষা ক্রীড়া চক্র প্রিমিয়ারে উঠেছে। ঘরোয়া হকির অন্যতম শক্তিশালীকে দলকে শীর্ষ চার-পাচ নম্বর ধরেই খসড়া ফিকশ্চার করছে ফেডারেশন। সাধারণত লিগে নতুন উত্তীর্ণ হওয়া দলটিকে সর্বনিম্ন স্থানে রাখা হয়। উষার ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম হওয়ার কারণ সম্পর্কে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদ বলে 'ফেডারেশন নিয়মানুযায়ী উষাকে শেষে রেখেই ফিকশ্চার ফরম্যাট করেছে। উষাকে শেষে রাখলে আবাহনী, মোহামেডান, মেরিনার্সের প্রথম খেলাগুলোই উষার সঙ্গে পড়ে। প্রথম দিকেই ক্লাবগুলোর বিদেশি খেলোয়াড় আনাটা কষ্টসাধ্য। এজন্য সকল ক্লাবই আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়ে উষাকে শীর্ষস্থানধারীদের মধ্যে রেখে ফিকশ্চারের দাবি জানায়। ফিকশ্চার এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ক্লাবগুলোর সম্মতিতেই লিগ কমিটি প্রণয়ন করবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক
মোস্তাকিম সরকার
অফিস: বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি আদাবর, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
বিজ্ঞাপন: ০১৭১৬-৬৪০০৬৯, বার্তা কক্ষঃ ০১৭৩১২৪৪৭৬০
Email: editormuktinews24@gmail.com, info@muktinews24.com
© 2023 মুক্তিনিউজ২৪. All rights reserved