মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : ফরিদপুর শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে একটি স্যুটকেসে উদ্ধার হওয়া মরদেহের পরিচয় ও হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বেলা পৌনে ১২টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের করিডরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম। মৃত ওই ব্যক্তির নাম মিলন প্রামাণিক (৩৯)। তিনি পাবনা সদরের নতুন গোহাইবাড়ী মহল্লার কাশের প্রামাণিকের ছেলে ও রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট এলাকার একটি ইট ভাটার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মিলন প্রামাণিকের সঙ্গে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া পতিতাপল্লির এক নারী রোজিনা আক্তার ওরফে কাজলের (৩২) সম্পর্ক ছিল। এ সুবাদে রোজিনা বিভিন্ন সময়ে মিলনকে তিন থেকে চার লাখ টাকা ধার দেন। এ টাকা ফেরত না দেওয়া নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এক পর্যায়ে গত ২৬ জানুয়ারি দিবাগত রাত ২টার দিকে রোজিনা তার নিজের ঘরে গলার ওড়না পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে মিলনকে হত্যা করে। পরে মিলনের মাথা ও পা পেঁচিয়ে একটি স্যুটকেস ভরেন। এরপরে একটি রিকশায় করে গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ডে নামেন এবং সেখান থেকে ৬০০ টাকায় একটি মাহেন্দ্র ভাড়া করে ফরিদপুর বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে যান। এসময় তাকে রিকশাচালক ও মাহেন্দ্রচালক স্যুটকেসটি ওঠাতে এবং নামাতে সাহায্য করে। তারা স্যুটকেসের ওজন বেশি কেন জানতে চাইলে রোজিনা জানান, এর ভেতর এয়ারকন্ডিশন রয়েছে। স্যুটকেসে পাওয়া সেই মরদেহের রহস্যের জট খুলেছে পুলিশ সুপার বলেন, পরে স্যুটকেসটি ফরিদপুরে এনে ঢাকাগামী বিকাশ পরিবহনেরে একটি বাসের টিকিট কেটে সেটি বাসের মালপত্রের লকারে তোলা হয়। বাস ছাড়ার সময় ওই নারীকে খুঁজে না পাওয়ায় বাসের সহযোগীরা স্যুটকেসটিকে বাসস্ট্যান্ডের গোল্ডেন লাইন পরিবহনের কাউন্টারের সামনে একটি বৈদ্যুতিক খুটির কাছে রেখে যান। পুলিশ সুপার বলেন, ওই নারী মরদেহটি ফেলার জন্য অভিনব সব পদ্ধতি অবলম্বন করেন। তিনি যে রিকশা ও মাহেন্দ্র ব্যবহার করেছিলেন সেগুলোর চালকদের আটক করা হয়েছে। তাদের এ হত্যা মামালায় সাক্ষী করা হবে। রোজিনাকে গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ৩টার সময় ঢাকার জুরাইান এলাকা থেকে ডিএমপির কদমতলী থানা পুলিশের সহায়তায় গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ শামীম হাসান বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ২৭ জানুয়ারি ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের আরেক উপপরিদর্শক (এসআই) সুজন বিশ্বাস বলেন, রোজিনাকে আজ বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হবে। তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না দিলে তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বলেন, স্যুটকেসে মরদেহ পাওয়ার ঘটনাটি সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার রহস্য দুইদিনের মধ্যে উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শৈলেন চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাউদ্দিন, ফরিদপুর কোতয়ালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসানুজ্জামান, কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. আব্দুল গফফার, পুলিশ ট্রাফিক পরিদর্শক (প্রশাসন) তুহিন লস্কর, পুলিশ পরিদর্শক আবু তাহের, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সুজন বিশ্বাস ও এই মামলার বাদী এসআই মোহাম্মদ শামীম হাসান।
প্রকাশক ও সম্পাদক
মোস্তাকিম সরকার
অফিস: বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি আদাবর, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
বিজ্ঞাপন: ০১৭১৬-৬৪০০৬৯, বার্তা কক্ষঃ ০১৭৩১২৪৪৭৬০
Email: editormuktinews24@gmail.com, info@muktinews24.com
© 2023 মুক্তিনিউজ২৪. All rights reserved