মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে পারিবারিক দ্বন্দ্বে তিন যুগ আগে সগিরা মোর্শেদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলার রায় বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ঘোষণা করা হবে। ঢাকার বিশেষ দায়রা জজ মোহাম্মদ আলী হোসাইন এ রায় ঘোষণা করবেন।রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ২৫ জানুয়ারি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক রফিকুল ইসলাম রায়ের জন্য এদিন ধার্য করেছিলেন। রায়ে আসামিদের মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। আসামিপক্ষের আইনজীবী বলছেন, আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। তাই তারা খালাস পাবেন। এ বিষয়ে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি রফিকুল ইসলাম বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। রায়ে আসামিদের মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করছি। আসামিপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়নি। আদালতের কাছে আমরা ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি। আশা করছি, রায়ে খালাস পাবেন আসামিরা। মামলার অভিযুক্ত আসামিরা হলেন সগিরার ভাশুর চিকিৎসক হাসান আলী চৌধুরী (৭০), তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা শাহিন (৬৪), সায়েদাতুলের ভাই আনাছ মাহমুদ রেজওয়ান (৫৯) এবং মারুফ রেজা (৫৯) এবং মন্টু মণ্ডল ওরফে কুঞ্জ চন্দ্র মণ্ডল। মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই সগিরা মোর্শেদ ভিকারুননিসা নূন স্কুল থেকে মেয়েকে আনতে যাচ্ছিলেন। বিকেলে সিদ্ধেশ্বরী রোডে পৌঁছা মাত্র মোটরসাইকেলে আসা ছিনতাইকারীরা তার হাতের সোনার চুড়ি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি দৌড় দিলে তাকে গুলি করা হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই সগিরা মোর্শেদ মারা যান। ওই দিনই রমনা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন সগিরা মোর্শেদের স্বামী সালাম চৌধুরী। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রিকশাচালক ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত হিসেবে মন্টু ও মারুফ রেজাকে শনাক্ত করলে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মারুফ রেজা এরশাদ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসানের ভাগ্নে। ওই সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হলেও শেষ পর্যন্ত তার নাম বাদ দিয়েই অভিযোগপত্র দেয় গোয়েন্দা পুলিশ। ১৯৯১ সালের ১৭ জানুয়ারি আসামি মন্টুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু বকর সিদ্দীক। সাক্ষ্য নেওয়া হয় সাতজনের। সাক্ষ্য চলাকালে মারুফ রেজার প্রসঙ্গ উঠে আসায় রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে ১৯৯১ সালের ২৩ মে অধিকতর তদন্তের আদেশ দেয় ঢাকার জজ আদালত। ওই আদেশের বিরুদ্ধে মারুফ রেজার রিভিশন আবেদনে হাইকোর্ট ১৯৯১ সালের ২ জুলাই অধিকতর তদন্তের আদেশ ও বিচার কাজের ওপর ছয় মাসের স্থগিতাদেশ জারি করে। পাশাপাশি অধিকতর তদন্তের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে। পরের বছর ২৭ অগাস্ট জারি করা রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই মামলার বিচার কাজ স্থগিত থাকবে বলে আরেকটি আদেশ দেয় হাইকোর্ট। মারুফের ওই আবেদন ২০১৯ সালের জুনে খারিজ করে দিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে প্রথমে মামলার বাদী সগিরা মোর্শেদের স্বামী আব্দুস সালাম চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করে পিবিআই। অনেক চেষ্টার পর বের করা হয় সগিরাকে বহনকারী সেদিনের যুবক রিকশাচালককে। তার মাধ্যমে হত্যাকারীদের একজন ডা. হাসানের শ্যালক আনাছ মাহমুদ রেজওয়ানকে শনাক্তের পর ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর রামপুরা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় সগিরার ভাসুর ডা. হাসান আলী, তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা শাহিন ও মারুফ রেজাকে। তারাও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ ফের এই মামলার বিচার শুরুর আদেশ দেন। আসামিদের মধ্যে আনাস মাহমুদ এবং মারুফ রেজা কারাগারে, অন্যরা জামিনে।
প্রকাশক ও সম্পাদক
মোস্তাকিম সরকার
অফিস: বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি আদাবর, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
বিজ্ঞাপন: ০১৭১৬-৬৪০০৬৯, বার্তা কক্ষঃ ০১৭৩১২৪৪৭৬০
Email: editormuktinews24@gmail.com, info@muktinews24.com
© 2023 মুক্তিনিউজ২৪. All rights reserved