মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৩০ জন ছাত্রী ইউনিফর্ম পরে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে। পাশেই ছাত্রদের আরও একটি ছোট লাইনও চোখে পড়ে। এভাবেই প্রতিদিন ছাত্র-ছাত্রীরা ঝিনাইদহের ১০নং কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নের মথনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই শৌচাগারের সামনে লাইনে ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হয়। এই বিদ্যালয়ে ৩১৭ জন শিক্ষার্থী নিয়মিত পাঠদান করে। এই বিদ্যালয়ের দুইটি শৌচাগার ও বাইরে থাকা একটি টিউবওয়েল শিক্ষার্থীদের জন্য যথেষ্ট নয়। সরকারিভাবে শিক্ষার্থীদের জন্য অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে আলাদা ভবনে আধুনিক ওয়াশব্লক নির্মাণের প্রয়োজন থাকলেও প্রাইমারি শিক্ষা অফিসের দায়িক্তশীলদের উদাসীনতায় তা আজও সম্ভব হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীদেরকে স্কুলে এসে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার ইউনিয়নের মাইজদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শৌচাগারের অবস্থাও একই রকম। এই বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের সময় ওই স্থানে থাকা শৌচাগারটি ভেঙে ফেলা হয়। শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী শৌচাগার নির্মাণ করা হলেও বর্তমানে সেটি ব্যবহার অনুপযোগী। ফলে শিক্ষার্থীদের খুব অসুবিধা ও বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে দ্রুত স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার স্থাপনের দাবি শিক্ষার্থী ও অভিভাবদের। মথনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী তাহিয়া খাতুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্কুলে এসে শৌচাগারে যাওয়ার দরকার হলে প্রায় সময় লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়। অনেক সময় প্রসাব আটকে বাড়ি গিয়ে করি। এতে আমার অনেক কষ্টও হয়। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ( ভারপ্রাপ্ত) পারভীন সুলতানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অনেক। সে অনুযায়ী ভালো শৌচাগার বা ওয়াশরুম না থাকায় বাচ্চাদের কষ্ট হয়। এতে করে বাচ্চারা অস্বস্তিতে ভোগে। ইতোমধ্যে আমরা আবেদন করেছি। আশা করি কর্তৃপক্ষ ব্যাপারটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) শবনম-আরা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বিদ্যালয়ে ২শ'র অধিক শিক্ষার্থী। ব্যবহার উপযোগী কোনো শৌচাগার না থাকায় চরম বিড়াম্বনা সহ্য করতে হচ্ছে। বিদ্যালয়টিতে শৌচাগার জরুরি। বার বার ব্যাপারটি স্যারদের জানানো হচ্ছে। অথচ কোনো সমাধান পাওয়া যাচ্ছে না। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলমগীর হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিশুরা দীর্ঘক্ষণ প্রসাব, পায়খানা আটকে রাখলে ব্যাকটেরিয়া শরীর থেকে বের হতে পারে না। এতে নানা শারীরিক জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী জেসমিন আরা ঢাকা পোস্টকে বলেন, উপজেলার ১৫০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে এলজিইডি কর্তৃক নির্মিত নতুন ভবন থাকা বিদ্যালয়গুলোতে আমরা ওয়াশব্লকের কাজ করে থাকি। ইতোমধ্যে ৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওয়াশব্লক হস্তান্তর করেছি। ২০টি বিদ্যালয়ে কাজ চলমান রয়েছে। প্রাইমারি অফিসের তালিকা অনুযায়ী ওয়াশব্লকের কাজ করা হয়। ওই তালিকার বাইরে কাজ করার সুযোগ নেই। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদ হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, শৌচাগার সমস্যাজনিত বিদ্যালয়সমূহকে লিখিত আবেদন করতে বলা হয়েছে। ওই সব বিদ্যালয়ে দ্রুত ওয়াশব্লক পাওয়ার ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন স্যারদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক
মোস্তাকিম সরকার
অফিস: বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি আদাবর, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
বিজ্ঞাপন: ০১৭১৬-৬৪০০৬৯, বার্তা কক্ষঃ ০১৭৩১২৪৪৭৬০
Email: editormuktinews24@gmail.com, info@muktinews24.com
© 2023 মুক্তিনিউজ২৪. All rights reserved