মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : কয়েকদিন আগেই শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান মাস। টানা একমাস রোজার এই সময়টাতে সারা বিশ্বের মুসলমানরা সেহরি থেকে ইফতার পর্যন্ত না খেয়ে থাকেন। ফলে যারা রোজা রাখেন, তাদের খাবারের সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দৈনন্দিন লাইফ স্টাইলেও পরিবর্তন আসে। এছাড়া এবার রমজান যেহেতু গরমের সময়ে হচ্ছে, ফলে এখানেও দরকার বাড়তি সতর্কতা। তাই রোজায় শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে কিছু টিপস ও রুটিন মেনে চলার প্রয়োজন রয়েছে।
এসব টিপস ৩০ দিন রোজা রেখে স্বাস্থ্য রক্ষার পাশাপাশি শারীরিক ফিটনেসও অক্ষুণ্ণ রাখতে সহায়তা করবে। যেমন:
১. প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন তিন থেকে চার লিটার পানি পান করা উচিত। আর রমজানের মধ্যে ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত সময়টাতে বেশি করে পানি পান করা প্রয়োজন।
২. উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি পরিমাণে গ্রহণ করা ভালো। আর কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার প্রতিদিন স্বল্প পরিমাণে গ্রহণ করা দরকার। এ সময় পটাসিয়ামযুক্ত খাবার গ্রহণও শরীরের জন্য ভালো।
৩. বেশি করে ফল খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। দেশি মৌসুমী নানা ফল একদিকে যেমন শরীরের পানির চাহিদা পূরণ করে, অন্যদিকে এসব ফলের অনেক পুষ্টিগুণও রয়েছে।
৪. দুধে অ্যালার্জি বা হজমের সমস্যা না হলে প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে পান করা যেতে পারে। দুধ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এছাড়া ফাইবার বা আঁশ জাতীয় খাবার এ সময়টাতে বেশি বেশি গ্রহণ করা দরকার।
৫. দিনের প্রথম খাবার পুষ্টিকর হওয়া উচিত। রোজার সময় মানুষ দিনে যেহেতু তিনবারের বদলে দুইবার খাবার গ্রহণ করে থাকে, তাই ওই খাবার যেন রোজাদারের শরীরের সারাদিনের চালিকাশক্তি দিতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। অনেকে ভোররাতে সেহেরি না খেয়েই রোজা রাখেন। কিন্তু এরকম ক্ষেত্রে শরীরে পুষ্টির ঘাটতি তৈরি হয়।
৬. ইফতারে অতিরিক্ত খাবার না গ্রহণ করা উচিত। যেহেতু রোজার সময় আমরা সারাদিন না খেয়ে থাকি, ইফতারের সময় আমাদের অনেকেরই মনে হতে পারে, সারাদিনের প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতে অনেক খেতে হবে। এই প্রবণতার কারণে ইফতারে অনেকেই অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত খাবার খেয়ে ফেলেন। এসব কারণে প্রক্রিয়াজাত ও ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। কারণ এসব খাবারে থাকে উচ্চমাত্রার ফ্যাট ও চিনি।
৭. খাওয়ার ভারসাম্য বজায় রাখার দিকে নজর দিতে হবে। কোনো অনুষ্ঠানে বা পরিবারের সদস্যদের সাথে খেতে বসলে সব আইটেম খাওয়ার একটা চাপ থেকে থাকে। তবে কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করে নিজে থেকেই খাওয়ার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
৮. ব্যায়ামের সঠিক সময় নির্ধারণ করতে হবে। অধিকাংশ মানুষই ইফতারের এক বা দুই ঘণ্টা আগে ব্যায়াম করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। সেক্ষেত্রে ব্যায়াম শেষ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা খাবার ও পানি পানের সুযোগ পান। তবে এই পদ্ধতি যদি কারও জন্য কঠিন হয়ে যায়, তাহলে কোনও ব্যক্তি তার নিজস্ব সূচী অনুযায়ীও এই সময় নির্ধারণ করতে পারেন।
৯. শক্তি ও স্থিতিশীলতার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। দিনের যেই সময়েই রোজাদাররা ব্যায়াম করেন না কেন, তাদেরকে সেই কার্যক্রমের সাথে মানিয়ে নেওয়াটা জরুরি। বিশেষজ্ঞরা রোজার সময় ব্যায়ামের তীব্রতা কমিয়ে ফেলতে পরামর্শ দেন। সিয়াম সাধনার এই মাসে শরীরের শক্তি ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি, নাড়াচাড়া ও গতিশীলতা বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে।
১০. রোজার সময় যারা নিয়মিতভাবে ব্যায়াম করতে চান, তাদের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই শর্করা জাতীয় খাবার রাখতে হবে। ইফতার, রাতের খাবার এবং শেষ রাতের খাবারে শর্করা জাতীয় খাবার অবশ্যই রাখতে হবে, যা থেকে দ্রুত ক্যালরি পাওয়া যাবে।
১১. ইফতারে ডাবের পানি, ডিম, কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার রাখা যায়। সারাদিন রোজা থাকার পর এ জাতীয় খাবার শরীরে দ্রুত শক্তি যোগায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এরপর সেহরি পর্যন্ত অবশ্যই তিন থেকে চার লিটার পানি পান করতে হবে। কেউ যদি মিষ্টি খাবার খেতে চান, তাহলে সেটি খাওয়া উচিত রাতের ব্যায়ামের পরে।
এছাড়া হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করার সময় হালকা ও সুতি কাপড় পরার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রকাশক ও সম্পাদক
মোস্তাকিম সরকার
অফিস: বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি আদাবর, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
বিজ্ঞাপন: ০১৭১৬-৬৪০০৬৯, বার্তা কক্ষঃ ০১৭৩১২৪৪৭৬০
Email: editormuktinews24@gmail.com, info@muktinews24.com
© 2023 মুক্তিনিউজ২৪. All rights reserved