মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : খুলনায় বেসরকারি জুটমিলে লাগা আগুন এখনও জ্বলছে। ফায়ার সার্ভিসের ১১ ইউনিট ও নৌবাহিনীর চেষ্টায়ও সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসেনি সালাম জুট মিলের আগুন। রূপসার জাবুসায় অবস্থিত পাটকলটির চারটি গোডাউনে কাঁচা পাট ও প্রক্রিয়াজাত করা থাকা সব পাটই পুড়ে গেছে। এতে শত কোটি টাকা ক্ষতির দাবি মালিকপক্ষের। বুধবার (৩ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১টার দিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জুট মিলটিতে আগুন জ্বলছিল। ফলে প্রায় সাড়ে ৭ ঘন্টায়ও সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসেনি আগুন। রূপসা উপজেলার জাবুসায় বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে স্থানীয়রা পাটকলটি থেকে আগুন দেখতে পেয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়। খবর পেয়ে প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ও পরে একে একে মোট ১১টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয়। যোগ দেয় নৌ বাহিনীরও ২টি ফায়ার ইউনিট। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন মিলটির শ্রমিকসহ স্থানীয়রা। তবে আগুনে কারখানার চারটি গোডাউনে রপ্তানির জন্য রাখা ৭৫০ টন পাট ও ৩৫ হাজার টন কাঁচাপাট পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে যায়। আগুনে প্রায় শত কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি মালিকপক্ষের। এদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় নিজস্ব ব্যবস্থা জুট মিলটিতে না থাকায় এবং দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ায় নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে পাটকলের ৩ নম্বর গুদামে আগুন লাগে। শুকনা পাট হওয়ায় দ্রুত আগুন কারখানায় সবখানে ছড়িয়ে পড়ে। এ জন্য আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের বেগ পেতে হচ্ছে। দীর্ঘক্ষণ ধরে আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় পাটকলে মজুত থাকা বিপুল পরিমাণ পাট পুড়ে গেছে। শ্রমিকরা জানায়, মিলটিতে প্রায় ৪০০ শ্রমিক-কর্মচারী কর্মরত রয়েছে। ঈদের আগে আগুন লাগায় তাদের বেতন-বোনাস নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা। জুট মিলের মালিক এম এম এ সালাম বলেন, আগুনে প্রায় ৭৫০ টন রপ্তানি উপযোগী পাটজাত পণ্য, প্রায় ৩৫ হাজার মণ কাঁচা পাট এবং মিলের যন্ত্রপাতি পুড়ে গেছে। সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১২৫ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। কন্টিনেন্টাল ইনস্যুরেন্স এ তার ৫০ কোটি টাকার ইনস্যুরেন্স করা ছিল। খুলনা ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. ফারুক হোসেন সিকদার বলেন, আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। তবে যেহেতু পাটের আগুন লেগেছে, সেহেতু পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসতে আরও সময় লাগবে। সামনে ও পেছনে দুটি গুদাম তারা রক্ষা করতে পেরেছেন। আজাদ নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আসরের নামাজ পড়ে বেরিয়ে দেখি সালাম জুট মিলে আগুনের ধোয়া দেখা যাচ্ছে। মসজিদের মুসল্লি ও স্থানীয়রা দৌড়ে এসে দেখে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। দ্রুত ফায়ার সার্ভিসকে সংবাদ দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আসার আগেই আগুন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিস জানায়, বিকেলে পাটকলের বাইরে থেকে আগুনের কুণ্ডলী দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। একইসঙ্গে স্থানীয়ভাবেও আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলতে থাকে। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। খুলনা ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে থাকা মো. আব্দুল কাদির ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিকেল ৫টা ৩৮ মিনিটে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে শুরু করে। বিস্তারিত পরে জানানো যাবে। এদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে বাংলাদেশ নৌবাহিনীও যোগ দিয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। রূপসা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কোহিনুর জাহান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফায়ার সার্ভিসের ১১ টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। নৌ-বাহিনীর ফায়ার টিম কাজ করছে। আগুনের তীব্রতা অনেক বেশি ছিল। এখন কমেছে। ঘটনাস্থলে আমাদের কর্মকর্তা, পুলিশ রয়েছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক
মোস্তাকিম সরকার
অফিস: বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি আদাবর, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
বিজ্ঞাপন: ০১৭১৬-৬৪০০৬৯, বার্তা কক্ষঃ ০১৭৩১২৪৪৭৬০
Email: editormuktinews24@gmail.com, info@muktinews24.com
© 2023 মুক্তিনিউজ২৪. All rights reserved