পীরগঞ্জ(রংপুর) প্রতিনিধি:
আজ মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুরে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান কোটা বিরোধী আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে তিনি নিহত হন। আবু সাইদ পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বাবনপুর গ্রামের মকবুল হোসেনের ছোট ছেলে।
নিহতের ছোট বোন সুমির আর্তনাদে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, হামার ভাইকে ওরা মেরে ফেলল ক্যান? হামার ভাই বেঁচে থাকলে হামার হেরে স্বপ্ন পুরণ হলো হয়। ও ভাইও হামাক এনা বোন কয়া ডাকো রে।
সাঈদের প্রতিবেশি এক ভাবী বলেন, ওর বাবা দিন মজুর হওয়ায় লেখাপড়ার টাকা ঠিকমত বহন করতে সম না হওয়ায় অভাবের কারণে আমার ছেলের লেখাপড়ার সরঞ্জামাদি ও পোশাক ব্যবহার করে লেখাপড়া চালিয়েছে। সে একজন মেধাবী ছাত্র হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছিল। ও বেঁচে থাকলে ভবিষ্যতে ভালো কিছু করতো।
এসময় দেখা যায়, পাশেই সাঈদের মা মনোয়ারা নির্বাক হয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে সবার দিয়ে চেয়ে আছে। মাঝে মাঝে বাাবা-বাবা বলে ডাকছে। আর বাবা মকবুল হোসেনের কন্ঠে কোন কথা নেই। তিনিও সবার মুখের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন।
আবু সাঈদ (২৪) পরিবারের একমাত্র বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া সন্তান বাবা-মায়ের। নিজের ইচ্ছায় ৯ ভাই-বোনের মধ্যে লেখাপড়া চালিয়ে গেছেন তিনি। অভাবের কারণে অন্য সন্তানদের লেখাপড়া করাতে না পারলেও সাঈদ খালাশপীর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়ে এসএসসি পাস করে। পরে রংপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসিতে একই ফলাফল নিয়ে সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন।
জানা গেছে, দুপুরে বেরোবির কোটা আন্দোলনকারী শিার্থীরা মিছিল নিয়ে শহরের লালবাগ এলাকায় থেকে ক্যাম্পাসের দিকে যায়। এরপর ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। তখন পুলিশ শিার্থীদের ল্য করে রাবার বুলেট ছোড়ে। এ সংঘর্ষে তিনি নিহত হন।
আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কারের প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকে আচ্ছন্ন হয়েছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক
মোস্তাকিম সরকার
অফিস: বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি আদাবর, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
বিজ্ঞাপন: ০১৭১৬-৬৪০০৬৯, বার্তা কক্ষঃ ০১৭৩১২৪৪৭৬০
Email: editormuktinews24@gmail.com, info@muktinews24.com
© 2023 মুক্তিনিউজ২৪. All rights reserved