এএফএম মমতাজুর রহমান, আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ বগুড়ার আদমদীঘিতে নির্ধারিত সময়ে লটারি না দিয়ে আবারও সময় বাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সান্তাহার স্টার হোটেল এন্ড চাইনিজ এর স্বত্ত্বধিকারী ফিরোজ আহম্মেদের বিরুদ্ধে। ফলে হোটেলের উদ্বোধনী লটারি নিয়ে ােভ প্রকাশ করেছেন উপজেলার বেশ কিছু ভোক্তা। হোটেল কর্তৃপ উদ্বোধনের সময় আকর্ষণীয় পুরস্কার ঘোষণা করার পর সেখানে একাধিকবার খেতে যান আদমদীঘি উপজেলার কদমা গ্রামের আজিজুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, মাসুদ রানাসহ কয়েক বন্ধু তাদের ছোট ভাইরা। এভাবে তাদের কাছে প্রায় শতাধিক লটারির টিকেট জমা হয়েছে। কিন্তু আজও হলো না লটারির ড্র। আদৌও এই ড্র হবে কিনা তারও কোনো ঠিক নেই। তাই সময় পার হওয়ার পর চলতি বছরের ৭ই জুলাই তারিখের ব্যানার টাঙ্গানো ও শুধুমাত্র একটি মোটরসাইকেল প্রদর্শণী রাখা হয়েছে হোটেলের সামনে। তবে মজার বিষয় লটারি ড্র এর তারিখ উল্লেখ করলেও কবে হবে ড্র সে সম্পর্কে নিজেই জানেন না ফিরোজ আহম্মেদ। তাই লটারি নামক ভোক্তাদের সাথে আবারও প্রতারণার পাঁয়তারা করার অভিযোগ তুলেছেন অনেকে।
জানা যায়, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহারে গত বছরের নভেম্বর মাসে স্টার হোটেল এন্ড চাইনিজ নামের একটি খাবারের হোটেল উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের সময় বেশি বিক্রির আশায় ভোক্তার সমাগম ঘটনার জন্য ১১১টি আকর্ষণীয় পুরস্কারের প্রলোভন দেখিয়ে এক উদ্বোধনী র্যাফেল ড্র এর আয়োজন করে হোটেল কর্তৃপ। সে সময় কর্তৃপ সর্বনিন্ম ২শত টাকার খাবার নিলে একজন ভোক্তাকে একটি লটারি ড্র এর টিকেট দেয়। র্যাফেল ড্র এর টিকেটের তারিখ অনুযায়ী ড্র অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় ছিল উদ্বোধনের পর একই বছরের ৩১ শে ডিসেম্বর। কিন্তু এই র্যাফেল ড্র নির্ধারিত সময়ে আর অনুষ্ঠিত হয়নি। তাই কারো ভাগ্যেও জোটেনি আকর্ষণীয় পুরস্কার। অথচ হোটেল উদ্বোধন হওয়ার প্রায় ৬ মাস পার হলেও উদ্বোধনী রাফেল ড্র করার কোনো সদিচ্ছাই নেই হোটেল কর্তৃপরে। এমনটাই বলছেন ভোক্তারা। এদিকে তাদের প্রতারণার বিষয়টি গত কয়েক দিন আগে আলোচনা হলে হোটেল কর্তৃপ নাম মাত্র একটা মোটর সাইকেল নিয়ে এসে হোটেলের সামনে প্রদর্শণী হিসেবে রেখে দিয়েছে। মোটরসাইকেল প্রদর্শণী রেখে হোটেল কর্তৃপ আবারও ভোক্তাকে পূর্বের তারিখ লেখা টিকেটই দিচ্ছে। ফলে ২য় বার ২০০ টাকার বেশি খেলেও অনেকে আর ইচ্ছেকৃত ভাবে লটারির টিকেট নিচ্ছেন না। কেউ কেউ অভিযোগ ও কৌতুহল করে বলছেন আবারও মনে হয় লটারি দিবে না, প্রতারণা করবে।
ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের মিলন হোসেন নামের এক ভোক্তা বলেন, আমি ব্যবসা করি। ব্যবসায় যেদিন লাভ ভালো হয়, সেদিন আমরা কয়েক বন্ধু মিলে হোটেল স্টারে খেতে যাই। ইতিপূর্বের প্রায় ৫০ টার মতো টিকেট আছে। লটারির তারিখ পার হওয়ার পর ড্র অনুষ্ঠিত হয়নি, তাই কেউ কেউ টিকেট হারিয়ে ফেলেছে। তারপরও আমরা খাইতে যাই। তবে এখন আর টিকেট নিইনা। কারণ নিয়ে কি করবো? ড্র হবেই কিনা। ২০০ টাকা খেয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা খেতে বসলে ২৫-২৬শ টাকা বিল হয়, তাহলে এতোদিনে আবার কতোগুলো টিকেট জড়ো হতো বলেন? প্রশ্ন করেন তিনি। লটারি দেয়না। কি করবো টিকেট নিয়ে। টিকেট নামে এটা একটা প্রতারণা। প্রথম যখন দিলো না। পরে আর টিকেট নিইনি আমরা।
নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলা থেকে খেতে যাওয়া সিয়াম হোসেন, নেহাল আহম্মেদ, সুমন হোসেন সহ অনেকে বলেন, আগের স্টার হোটেল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আমাদের খাইতে যাওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। নতুন ভাবে চালু করার পর আমরা খাইতে গিয়ে জানতে পারি ২০০ টাকার খাবার খেলে একটি রাফেল ড্র এর টিকেট পাওয়া যাবে। এভাবে বেশ কিছুদিন ঐ হোটেলে খেয়ে ৪ টি টিকেট পেয়েছি। নেহাল আরও বলেন, ড্র হওয়ার তারিখ পর্যন্ত টিকেটগুলো যতœ করে রেখেছিলাম। ড্র না হওয়ায় টিকেটগুলোর প্রতি আর মায়া নেই। তবে এখনও অনেকের কাছে আছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে হোটেল স্টার ও চাইনিজের স্বত্বাধিকারী ফিরোজ আহম্মেদ মুঠোফোনে বলেন, আমি ওসি ও ইউএনও এর সাথে কথা বলে অচিরেই লটারি দিবো। যারা টিকেট হারিয়ে ফেলেছে তারা কি করবে এই প্রশ্নে তিনি বলেন, তারা এসে বললেই আরেকটি করে টিকেট দিবো। আবার প্রতারণা করবেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, মোটরসাইকেল কিনে এনেছি। সামান্য তিল লাখ টাকা লাগবে। এবার দিয়ে দিবো।
লটারি নামক ভোক্তার সাথে প্রতারণার বিষয়ে জানতে চাইলে আদমদীঘি থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম রেজা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার টুকটুক তালুকদার মুঠোফোনে বলেন, আমরা অবৈধ লটারির অনুমতি কিভাবে দিতে পারি ? আর অবৈধ লটারির ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না।
প্রকাশক ও সম্পাদক
মোস্তাকিম সরকার
অফিস: বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি আদাবর, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
বিজ্ঞাপন: ০১৭১৬-৬৪০০৬৯, বার্তা কক্ষঃ ০১৭৩১২৪৪৭৬০
Email: editormuktinews24@gmail.com, info@muktinews24.com
© 2023 মুক্তিনিউজ২৪. All rights reserved