গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ প্রান্তিক কৃষক বকুল মিয়া ও পারভীন বেগম। সবাই কাজ করছেন মাঠে। শীতকালীন শাক-সবজি উৎপাদনের লক্ষে কেউ করছেন জমি প্রস্তুত। আবার কেউ কেউ করছেন খেত পরিচর্যা। এ বছর অধিক লাভের স্বপ্নে হেমন্তের তীব্র রোদে দিনভর মাঠে ঘাম ঝরাচ্ছেন এই নারী কৃষকরাও ।
সম্প্রতি গাইবান্ধা জেরার বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে দেখা গেছে- নারী কৃষকদের শাক-সবজি চাষাবাদের ব্যস্ততা। তারা মাঠে কাজ করছেন আপন খেয়ালে।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে- চলতি রবি মৌসুমে গাইবান্ধার সাত উপজেলায় প্রায় ৬ হাজার ৯৪৭ হেক্টর জমিতে শাক-সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে জমি প্রস্ততসহ ফসল উৎপাদনের লক্ষে মাঠে নেমেছেন কৃষক। এ পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গেল খরিপ মৌসুমে বিরূপ আবহাওয়ায় শাক-সবজিসহ অন্যান্য ফসলের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এসব ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সম্প্রতি কৃষকরা ঝুঁকে পড়ছে শীতকালীন সবজি চাষে। সেইসঙ্গে গত বছরের তুলনা এ বছরে কাঁচা তরকারির দাম বেশি থাকায় শাক-সবজি চাষে প্রান্তিক কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে অনেকটাই। তারা ইতোমধ্যে মুলা, লাউ, সিম, কপি, বেগুন, গাজর, পালং শাক, লাল শাকসহ আরও বিভিন্ন ধরণের শাক-সবজি চাষাবাদ শুরু করছেন। এরই মধ্যে কিছু সংখ্যক কৃষক তাদের উৎপাদিত সবজি বিক্রিও করছে। তবে এ বছরে বীজ-সার-কিটনাশক ও অন্যান্য কৃষি উপকরণের দাম বেশি থাকায় চাষাবাদে হিমশিম খাচ্ছে। এরই প্রভাবে উৎপাদন কম হওয়ার শঙ্কায় ভুগছেন তারা। তবুও লাভের আশায় শীতকালীন শাক-সবজি চাষে মাঠে ঘাম ঝরাচ্ছেন প্রান্তিক কৃষক।
পলাশবাড়ীর কৃষক আবুল হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে দেড় বিঘা জমিতে পেঁয়াজ ও মুলা আবাদ করেছি। আর কিছুদিন পরে ফসল বিক্রি করা যেতে পারে। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। যা গত বছরের চেয়ে বেশি খরচ হয়েছে। তাই অধিক ফলন ও ভালো দাম পেলে লাভবান হওয়া সম্ভব।
বকুল মিয়া নামের আরেক কৃষক বলেন, প্রতি বছরের মতো এ বছরেও শীতের সবজি হিসেবে গাজর ও বেগুনসহ অন্যান্য শাক-সবজি আবাদ করেছি। এতে কৃষি বিভাগের কোনো ধরণের সহযোগিতা পাওয়া যায় না। তাদের পরার্শ কিংবা প্রণোদনা পেলে আরও লাভবান হওয়া যেত।
উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু তাহের মিয়া বলেন, শাক-সবজির স্থানীয় চাহিদা পূরণের লক্ষে ও কৃষকদের লাভবান করতে প্রণোদনা দেওয়াসহ বিভিন্নভাব সহযোগিতা করা হচ্ছে।
গাইবান্ধা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, চলতি রবি মৌসুমে কৃষকদের মাঝে প্রণোদনা হিসেবে বীজ-সার বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। শীতকালীন শাক-সবজির অধিক ফলন পেতে তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হচ্ছে।