ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধাঃ
শস্যভাণ্ডার খ্যাত গাইবান্ধা। এ জেলায় চলতি খরিপ মৌসুমে নানা সবজির পাশাপাশি আবাদ করা হয়েছে পটল। এই ফসল ঘরে তুলে পরিবারের চাহিদাপূরণের পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করে অর্থনৈতিক মুক্তির পথ দেখছেন কৃষকরা। ইতোমেধ্যে মাচা পদ্ধতিতে পটেলের বাম্পার ফলন হওয়ায় হাসি ফুটেছে চাষিদের মুখে।
সম্প্রতি গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সবুজ লতা-পাতার নিচে দোল খাচ্ছে উন্নত জাতের পটল। কেউ কেউ ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবার অনেকে মাচা থেকে পটল সংগ্রহ করে বিক্রির প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি খরিপ মৌসুমে জেলায় শাক-সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয় ৫ হাজার ৭৯৫ হেক্টর জমিতে। এখন পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ২ হাজার হেক্টর জমির লক্ষ্যমাত্রা। এর মধ্যে পটল চাষ হয়েছে প্রায় ৫২০ হেক্টর জমিতে। তবে গত বছরে পটল আবাদে কৃষকরা লাভবান হওয়ায় এ বছর প্রায় ১০০ হেক্টর বেশি জমিতে এই সবজিটি বেশি আবাদ হয়েছে। পটল চাষিদের লাভবান করতে মাঠপর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই-পোকা-মাকড় নিধন সম্পর্কে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া অব্যহত রাখছেন চাষিদের।
জেলার ধাপেরহাট এলাকার কৃষক সাজু মিয়া জানান, তিনি চলতি মৌসুমে ৬৫ শতক জমিতে পটল চাষ করেছেন। পটল উঠানো পর্যন্ত ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা খরচ হবে তার। ভালো ফলন হওয়া তিনি আশা করছেন প্রায় ৯০ থেকে ৯৫ মণ পটল উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যা বাজারে তিনি প্রায় দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন।
এছাড়া কৃষক আয়নাল, হাফিজ, নজরুল, রফিকুল ও কামাল মিয়াসহ আরও অনেকে বলেন, আমরা অনেক বছর ধরে পটল চাষ করছি। পটল চাষ একটি লাভজনক ফসল। এই সবজি থেকে দ্বিগুণ লাভ করা যায়। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও জমি চাষের উপযোগী হওয়ায় পটল চাষে ব্যাপক সাফল্য দেখছি। বাজারে পটলের দাম ও চাহিদা ভালো থাকায় এই সবজির চাষ করছি। সঠিক নিয়ম মেনে ও পরিচর্যা করায় পটলের ফলনও অনেক ভালো হয়। সবকিছু ঠিক থাকলে পটল চাষে লাভবান হবেন বলে আশা করছি আমরা।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু তাহের মিয়া বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি পরিমাণ পটল আবাদ করছে কৃষক। তাদের লাভবান করতে সর্বাত্নকভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক খোরশেদ আলম জানান, পটল আবাদে কম খরচে লাভ বেশি হয়। এ কারণে জেলায় দিনদিন পটলের চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চাষিদের প্রণোদনা দেওয়াসহ সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।