পীরগঞ্জ(রংপুর) প্রতিনিধিঃ ‘গোয়াল ভরা গরু, গোলা ভরা ধান আর পুকুর ভরা মাছ।’ সেকালের কথা এখন সেকালেই রয়েছে। কথাগুলো এ প্রজন্মের কাছে যেন কল্পকাহিনীর মতো। হঠাৎ খুঁজে পাওয়া ধানের গোলা বা মাচা তাই মনে করিয়ে দেয় অতীত ঐতিহ্যের কথা। কৃষকের বাড়ীতে এখন পুকুর ভরা মাছ নেই, নেই গোয়াল ভরা গরু ও ধানের গোলা। ধানের গোলার মতই হারিয়ে গেছে দেশী মাছ। গোয়ালের গরু এখন হাইব্রীড হয়ে অবস্থাপন্নদের খামারে ঢুকেছে।
গ্রামাঞ্চলে প্রবীনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সেকালের গ্রামাঞ্চলের কৃষকেরা বাড়ীতে ধান মজুদের জন্য বাঁশের বাতির বেড়া দিয়ে গোলাকৃতির তৈরী বিশেষ ধরনের ঘরকে ধানের গোলা হিসেবে ব্যবহার করতো। গোলাকে মাচাও বলা হয়। ওই গোলাতেই ধান-চালসহ অন্যান্য ফসলও রাখা হতো। গোলাই ছিল সেকালের কৃষকের ফসল রাখার ব্যাংক। গ্রামের প্রায় কৃষকের বাড়ীতেই এই গোলা ছিল। এখন তা হারিয়ে গেছে। আগের দিনে অবস্থাপন্ন কৃষকরা বাড়ীর ভিতরে ধানের গোলা আর খুলিতে (উঠান) পলের পুঞ্জ (খড়ের গাদা) দেখে ছেলে- মেয়েদের বিয়ে-সাদি করাতেন।
উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের শাহিদুল বলেন, এখন আর গোলা চোখে পড়ে না। তবে আমার দাদার আমলের তৈরী গোলাটি গ্রাম বাংলার অতীত ঐতিহ্য সংরক্ষণে ধরে রেখেছি। মদনখালী ইউনিয়নের জাফরপাড়া গ্রামের লেলিন বলেন- দাদার আমলের তৈরী গোলা ঘরটি নষ্ট হয়েছে। এটিকে বাপ-দাদারা মাচাও বলতেন। এখন সেটিতে ধান-চাল রাখি না। পাকা ঘরের মেঝেতে ধান আর টীনের তৈরী ড্রামে চাল রাখি। একই ইউনিয়নের জুনিদেরপাড়া গ্রামের আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলীর বাড়ী থেকে ধানের গোলাটি ক্যামেরাবন্দী করার সময় তিনি বলেন- ক্যা বাবা! এটার ফটো তুলি তোরা কি করমেন? তিনি আরও বলেন- এ গোলা দ্যাখার জন্যে ছোল-পোলেরা আসে। সেই জন্যে এটা থুঁচো (রাখা) বাবা।
প্রকাশক ও সম্পাদক
মোস্তাকিম সরকার
অফিস: বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি আদাবর, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
বিজ্ঞাপন: ০১৭১৬-৬৪০০৬৯, বার্তা কক্ষঃ ০১৭৩১২৪৪৭৬০
Email: editormuktinews24@gmail.com, info@muktinews24.com
© 2023 মুক্তিনিউজ২৪. All rights reserved