পীরগঞ্জ(রংপুর) প্রতিনিধিঃ রংপুরের পীরগঞ্জে প্রায় ৩০ বছর ধরে গান গেয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মণিন্দ্র নাথ বর্মণ। ছোট বেলায় গান শোনে রেডিওতে, গান শেখে রেডিও শুনে। এমনকি তালও শেখে রেডিও থেকে শুনে শুনে। এখন তার বয়স প্রায় ৪২। দুই মেয়ে এক ছেলের জনক সে। অভাবের সংসার। আয়ের অন্য কোন উৎস নেই। নেই সরকারি- বেসরকারি পর্যায়ের কোন সহযোগিতা। সে দেশের গান, ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি, লালনগীতি, বিজয় সকরারে গান সহ প্রায় সকল প্রকার লোক সংগীত গায় সাবলিল ভঙ্গিতে হাতের খঞ্জুরী বাজিয়ে। রথীন্দ্র নাথের গান গায় অবিকল। তার দুঃখ সরকারিভাবে সংস্কৃতি মন্ত্রনালের বাৎসরিক অনুদান পায় অনেকেই-যারা গান করে না। তার কষ্ঠ চেয়ারম্যান মেম্বররা তাকে কোন সহযোগিতা করে না। সে কোন প্রতিবন্ধী ভাতাও পায় না। তার ক্ষোভ ৪২ বছরেও তার পাশে কেউ দাঁড়ালো না। পথে-ঘাটে, হাটে-বাজারে গান গেয়ে যে সামান্য অর্থ সে উপার্জন করে তা দিয়ে তার সংসার চলে না। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়ায় অন্যকোন কাজও সে করতে পারে না। তারপরও গান পাগল মণিন্দ্র হাসপাতলে চিকিৎসাধীন মেয়ের মাসে শুয়ে বসে গুনগুনিয়ে গান করে। ক টাকায় বা আয় হয়। তারপরও গান পাগল মণিন্দ্র গানের টানে মাঝে মাঝেই নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। ১০ দিন ১৫ দিন একমাস তার কোন খোঁজ থাকে না। সে যখন গায়- “ খোদার ঘরে নালিশ করতে দিল না আমারে-পাপ পূর্ণের বিচার এখন মানুষেই করে।” তখন মনে হয় সে তার কথাই বলছে। সে যখন গায়-“আমারই দেশ সব মানুষের-সব মানুষের।” তখন মনে হয় সে রাষ্ট্র নামক যন্ত্রটাকে চিৎকার করে ধিক্কার জানাচ্ছে। তবে বাস্তবে গান পাগল মণিন্দ্রের কারো প্রতি তেমন কোন অভিযোগ নেই। এই প্রথম তার মেয়ে পড়াশুনার খরচের জন্য আবেদন করায় প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে ১৫হাজার টাকার অনুদান পাওয়ায় সে মহা খুশি। এই প্রথম সে এটিএন নিউজের মতো টিভি চ্যানেলে ঈদের একটি অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার সুযোগ পাওয়ায় আনন্দে আত্মহারা। মণিন্দ্র পরিগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের স্বর্গীয় তরণী কান্ত বর্মণের ছেলে।
প্রকাশক ও সম্পাদক
মোস্তাকিম সরকার
অফিস: বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি আদাবর, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
বিজ্ঞাপন: ০১৭১৬-৬৪০০৬৯, বার্তা কক্ষঃ ০১৭৩১২৪৪৭৬০
Email: editormuktinews24@gmail.com, info@muktinews24.com
© 2023 মুক্তিনিউজ২৪. All rights reserved