শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

নড়াইলের পেড়লী গ্রামে প্রতিপক্ষের ১২টি বাড়িঘর ভাংচুর

নড়াইলের পেড়লী গ্রামে প্রতিপক্ষের ১২টি বাড়িঘর ভাংচুর

নড়াইল প্রতিনিধি

প্রায় ২০০ একর জমিতে বোরো ধান ও রবিশষ্য অনাবাদী থাকায় খাদ্যসংকটে ভুগছেন প্রতিপক্ষরা , কৃষি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পেড়লী গ্রামে আজাদ শেখ (৩২) হত্যাকান্ডের ঘটনায় প্রতিপক্ষের বাড়িঘর ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত রোববার রাতে পেড়লী গ্রামের আলতাফ শেখ, আসলাম শেখ, নুর ইসলাম, বাবলু ভূঁইয়া, উলসান ভূঁইয়া, মকবুল ভূঁইয়া ল্যাংটা, মরফু ভূঁইয়া, তুষার ভূঁইয়া, ফজলু ভূঁইয়া, মরিয়াম বিবি, হুমায়ুন ভূঁইয়া ও অপু ভূঁইয়ার বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়েছে। এছাড়া ইয়ার আলীর দোকান ভাংচুর হয়েছে। এদিকে, বোরো ধান ও রবিশষ্য মওসুমে চাষাবাদে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এ কারণে প্রায় ২০০ একর জমিতে বোরো ধান ও রবিশষ্য অনাবাদী থাকছে। ফলে খাদ্যসংকটে ভুগছেন ভুক্তভোগীরা।

ক্ষতিগ্রস্ত আলতাফ শেখের স্ত্রী শাছুন্নাহার, ভাবি নাসরিন বেগমসহ ভুক্তভোগীরা জানান, প্রতিপক্ষের লোকজন গত রোববার রাতে অতর্কিত ভাবে তাদের ১২টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে কাঁচের জানালা, আসবাবপত্র, বাথরুম, টিনের বেড়া ও চালাসহ অন্যান্য মালামাল ব্যাপক ভাংচুর করে।

ক্ষতিগ্রস্ত হেলেনা বেগম ও হামিদা মালা বলেন, পেড়লী গ্রামের আজাদ শেখ হত্যাকান্ডের পর প্রতিপক্ষের হামলা-মামলায় আমাদের কেউ ঠিকমত বড়িঘরে থাকতে পারেন না। গত ২০ জুলাই আজাদ শেখ হত্যাকান্ডের পর ওই রাতেই আমাদের প্রায় ২০টি বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগ করে প্রতিপক্ষরা। এরপর থেকে পুরুষরা কেউ বাড়িঘরে থাকতে পারছেন না। নারী ও শিশুরাও বাড়িতে আসলে হামলা চালানো হচ্ছে। আমরা প্রতিনিয়ত অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছি। প্রতিপক্ষের ভয়ে অনেক ছেলেমেয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে না পারায় লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়েছে। কেউ আত্মীয়-স্বজন বাড়িতে গিয়ে পড়ালেখা করছে।

শহিদুল মোল্যা জানান, টাকা, স্বর্ণালংকার, গরু, জমির দলিলসহ মূল্যবান জিনিস লুটপাট এবং ফলদ ও বনজ গাছ কেটে নিয়ে গেছে প্রতিপক্ষের লোকজন।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বাদীপক্ষের শেখ নজরুল ইসলাম জানান, আজাদ শেখ হত্যাকান্ডের ঘটনায় প্রতিপক্ষসহ আসামিদের বাড়িঘর ভাংচুরের সঙ্গে তারা জড়িত নন।

পেড়লী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল আজিজ বলেন, পেড়লী গ্রামে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কেউ যদি অরাজকতা সৃষ্টির মাধ্যমে আইন- শৃঙ্খলা অবনতির অপচেষ্টা করেন তাকে ছাড় দেয়া হবে না।

মামলার বিবরণে জানা যায়, কালিয়া উপজেলার পেড়লী গ্রামের সালাম শেখের ছেলে আজাদ শেখকে গত ২০ জুলাই সন্ধ্যায় খানকাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় গত ২৩ জুলাই নিহত আজাদের ছোট ভাই সাজ্জাদ শেখ বাদী হয়ে ২০জনের নাম উল্লেখ করে কালিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এলাকাবাসী জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পেড়লী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম বাবু এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা লাবলু ভূঁইয়া গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছে। এরই জের ধরে বাবু গ্রুপের যুবলীগকর্মী আজাদ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন