অনেক চক্রান্ত চলছে, ভোটের পরিবেশ সুন্দর রাখতে হবে : শেখ হাসিনা
মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে অনেক চক্রান্ত হচ্ছে উল্লেখ করে নির্বাচনী তথা ভোটের পরিবেশ সুন্দর রাখতে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে ছয়টি জেলায় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভায় যুক্ত হয়ে তিনি এ নির্দেশনা দেন। তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে এসব জেলার সঙ্গে জনসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি।
এদিন ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর ও শেরপুর জেলা, ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জ ও নরসিংদী জেলা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের চাঁদপুর ও বান্দরবান জেলায় আওয়ামী লীগের এই নির্বাচনী জনসভা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে পারবে। এবারের নির্বাচন নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে অনেক চক্রান্ত হচ্ছে। তাই নির্বাচনী পরিবেশটা যেন সুন্দর থাকে, নির্বাচন যেন উৎসবমুখর ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়, সেদিকে সবাই খেয়াল রাখবেন। বিএনপি সন্ত্রাসী, জামায়াত যুদ্ধপরাধীদের দল। এরা নির্বাচনে না এলে ভোট অংশগ্রহণমূলক হবে না, এটা আমরা বিশ্বাস করি না।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের কাজই মানুষ পোড়ানো আর ধ্বংস করা। নির্বাচিত সরকার, গণতান্ত্রিক সরকার ধারাবাহিকভাবে ২০০৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আছে বলেই দেশ উন্নত হয়েছে। আগে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা তো এক কদমও এগোতে পারেনি। তারা দেশকে পিছিয়ে দিয়েছিল।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ভোটারদের অংশগ্রহণেই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়ে যাবে। ওই সন্ত্রাসীদের দল তো নির্বাচনে বিশ্বাসই করে না। তাদের দ্বারা কোনো কল্যাণ হবে না দেশে। সেজন্য উন্মুক্ত নির্বাচন করতে দিয়েছি। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখবেন। জনগণ যাকে চাইবে, তাকেই মেনে নেবেন সবাই।
এসময় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার সব প্রার্থীকে পড়ে নেওয়ার নির্দেশনা দেন দলের প্রধান। তিনি বলেন, নির্বাচনী ইশতেহার পড়ে নেবেন এবং সে অনুযায়ী ভোট চাইবেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭৫ এর পর অবৈধ ক্ষমতা বৈধ করার জন্য জনগণের অধিকার কেড়ে নেওয়ার সংস্কৃতি চালু করেছিল জিয়াউর রহমান। তখন স্বাধীনতাবিরোধীদের সমন্বয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিপরীত ধারায় চলতে থাকে দেশ।
তিনি আরও বলেন, ২০০১ সালে গ্যাস বিক্রির চক্রান্ত করে ক্ষমতায় এসে মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে বিএনপি। তারা এখনো নির্বাচনবিরোধী কাজ করে চলেছে। ট্রেনে আগুন দিয়ে মা-শিশুকে এমনভাবে পুড়িয়ে হত্যা সহ্য করা যায় না। এরা সবসময় নির্বাচন বানচালের তালে থাকে। কিন্তু নির্বাচিত সরকার ছাড়া দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা সম্ভব হয় না, এটাই বাস্তবতা।
২০১৪ থেকে ২০১৮ সালে মানুষ ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছিল বলেই দেশের উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে বলে জানান শেখ হাসিনা।
ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করে উন্নত-সমৃদ্ধ জীবনের ধারা অব্যাহত রাখুন, যেন দেশকে আরও এগিয়ে নেওয়া যায়। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আওয়ামী লীগ আবারও মানুষের সেবা করার সুযোগ পাবে, সেটাই প্রত্যাশা।
তিনি বলেন, এবারের নির্বাচন নিয়ে অনেক চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র আছে। বিএনপি-জামায়াতের কাজই হলো মানুষ পোড়ানো আর নির্বাচন ধ্বংস করা।
এর আগে বুধবার আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পর্যায়ক্রমে ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর ও শেরপুর, ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জ ও নরসিংদী এবং চট্টগ্রাম বিভাগের চাঁদপুর ও বান্দরবান জেলার নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়, সংশ্লিষ্ট জেলা, উপজেলা, থানা, পৌর ও ইউনিয়ন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ এবং সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর নির্বাচনী এলাকার দলীয় প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এর আগে ২১ ডিসেম্বর পাঁচটি এবং ২৩ ডিসেম্বর ছয় জেলার নির্বাচনী জনসভায় ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ ও বক্তব্য দেন।
এবিএন/জেডি