সোমবার, ৭ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

সান্তাহার ২০ শয্যা হাসপাতাল থেকে যন্ত্রাংশ ও ঔষধ চুরির অভিযোগ

সান্তাহার ২০ শয্যা হাসপাতাল থেকে যন্ত্রাংশ ও ঔষধ চুরির অভিযোগ

আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে যন্ত্রাংশ ও ঔষধ চুরির ঘটনা ঘটছে প্রতি নিয়ত। দীর্ঘ দিন থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটছে।
গত বুধবার সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, উপজেলার সান্তাহার পৌরসভায় অবস্থিত ২০ শয্যার হাসপাতালটির অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হলেও দীর্ঘ ২০ বছরে এটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হয়নি। কাগজ কলমে জনবল দেখানো হলেও বাস্তবে নেই কোনো ডাক্তার-নার্স ১ জন ও ১ জন ফার্মাসিস্ট দিয়ে আউটডোর চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।
হাসপাতালে দায়িত্বরত ফার্মাসিস্ট আব্দুল মান্নানের যোগসাজশে প্রতি নিয়ত হাসপাতাল থেকে সরকারি ঔষধ ও মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে । চুরির মধ্যে আছে সরকারি ঔষধ, ট্রান্সফরমারের যন্ত্রাংশ, এসি, ফ্যান, জানালার গ্রীল, থাই গ্লাসসহ মূল্যবান জিনিসপত্র। সম্প্রতি তিন ভ্যান যোগে জানালার গ্রীল, থাই গ্লাস চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও পৌর যুবদলের আহবায়ক ওয়াহেদুল ইসলাম ওয়াহেদ একটি ভ্যানে থাকা হাসপাতাল থেকে খুলে নিয়ে লোহার জানালার গ্রীলসহ ভ্যানটি উদ্ধার করে। আর অপর দুইটি ভ্যান দ্রুত মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়।
সান্তাহার পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ওয়াহেদুল ইসলাম ওয়াহেদ বলেন, হাসপাতাল থেকে প্রতি দিনই মান্নানের নেতৃত্বে কোন না কোন জিনিসপত্র চুরির ঘটনা ঘটছে। চুরির বিষয়ে একাধিকবার অভিযোগ করেও কোন লাভ হয়নি।
রথবাড়ী এলাকার বাসিন্দা রনি হোসেন বলেন, চুরি করে মান্নান আর নাম দেয় আটুলের। আটুল তো দীর্ঘদিন থেকে জেলখানায় তাহলে এখন কে চুরি করছে? তাইতো আমি মান্নানের অপসারণ দাবি করছি।
চিকিৎসা নিতে আসা বি.পি স্কুল এলাকার বাসিন্দা সিদ্দিকুর রহমান তুফান বলেন, এই মান্নান শুধু হাসপাতালের জিনিস পত্র চোরের হোতা নয়, পাশাপাশি সরকারি ঔষধ চুরি করে বিক্রি করে। আমি তার অপসারণ চাই। রথবাড়ি এলাকার আরেক বাসিন্দা আশিক হোসেন বলেন, আব্দুল মান্নানকে অপসারণ করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
চিকিৎসা নিতে আসা পৌর শহরের যোগীপুকুর এলাকার বাসিন্দা জাকিরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, চিকিৎসা বলতে হাসপাতালে যা দিচ্ছে, জ্বর আর গ্যাসের ঔষধ। বাকি ঔষধ মান্নান সাহেব বিক্রি করে খায়। তিনি আরও বলেন রোগীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে এবং চারিত্রিক সমস্যাও আছে।
সান্তাহার পৌর বিএনপির চার নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী শেখ বলেন, এই মান্নান একজন পাকা বদমাইশ ও চোর। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছি। দৈনিক বাজার ঈদগাহ মাঠ এলাকার বাসিন্দা তুহিন ইসলাম বলেন, দায়িত্বরত কর্মকর্তার অপসারণ দাবি করছি। তিনি শুধু দায়িত্বে অবহেলা নয়, গরীব অসহায় মানুষদের সরকারি ঔষধ নিতে গেলে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে থাকে এবং খারাপ ব্যবহার করে।
চুরির বিষয়ে হাসপাতালে দায়িত্বরত ফার্মাসিস্ট আব্দুল মান্নানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক আগে আটুল নামে এক চোর এসিসহ কিছু জিনিসপত্র চুরির করার কারনে অন্য এসি গুলো খুলে রাখা হয়েছে। তবে সম্প্রতি হাসপাতাল থেকে ফ্যান, জানালার গ্রীল, থাই গ্লাস চুরির বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না আর সরকারি ঔষধ চুরি করে বিক্রি করার অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
এ বিষয়ে আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. ফজলে রাব্বী বলেন, সান্তাহার ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল থেকে মালামাল চুরির বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে চুরির বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন