আদমদীঘিতে অতি খরায় আমন আবাদ ব্যাহত হওয়ার আশংকা
এএফএম মমতাজুর রহমান আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ
আদমদীঘিতে অতি খরায় আমন আবাদ ব্যহত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। বাংলা দিনপঞ্জির হিসাবে শ্রাবণ মাসের এক সপ্তাহ চলে যাচ্ছে। আষাঢ়-শ্রাবণ দুই মাস বর্ষকাল। কিন্তু এই ভরা বর্ষাতেও স্বাভাবিক বৃষ্টির দেখা নেই আদমদীঘি উপজেলায়। এতে উপজেলার কৃষকেরা বিপাকে পড়েছেন আমন আবাদ নিয়ে। উপজেলায় তীব্র তাপদাহ ও আকাশের বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকেরা আমন আবাদ নিয়ে চরম দূশ্চিন্তায় রয়েছেন। বৃষ্টির অভাবে অনেক জমি শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। কৃষকরা যে সব জমিতে চারা রোপণ করেছেন,সেগুলির পানি শুকিয়ে মাটি ফেটে কাঠ হয়ে গেছে। বৃষ্টি না হওয়ায় জমি তৈরি ও চারা লাগাতে পারছেন না তারা। মাঠের জমিতে পর্যপ্ত পানি না থাকায় লাঙ্গল হাল চাষ দিতে পারছেন না কৃষকেরা। বাধ্য হয়ে উপজেলার কোন কোন অঞ্চলে গভীর নলকুপ চালু করে পানি সেচ দিয়ে হালচাষ করা হচ্ছে। এ অবস্থায় উপজেলার কোন কোন স্থানের কৃষকেরা শ্যালোমেশিন লাগিয়ে জমিতে পানি দিচ্ছেন।
গতকাল শনিবার সরজমিনে উপজেলার কয়েকটি মাঠে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টির অভাবে অনেক জমি শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। যে সব জমিতে চারা রোপণ করেছেন,সেগুলির পানি শুকিয়ে মাটি ফেটে কাঠ হয়ে গেছে। কোন কোন এলাকায় নিচু অঞ্চলে কুষকেরা ধান রোপণ করছেন। উচু অঞ্চলের প্রায় জমি বৃষ্টি না হওয়ায় জমি ফেটে গেছে। বাধ্য হয়ে অনেক কৃষক ক্ষেতে সেচ দিচ্ছেন শ্যালো মেশিন বা বৈদুতিক মোটর দিয়ে। সালগ্রামের কৃষক মোর্শারফ হোসেন জানায়, অল্প সময়ের মধ্যে বৃষ্টিপাত না হলে বীজতলার চারার বয়স বেশি হয়ে ধানের ফলন কমে যাবে। উপজেলার ছোট জিনইর গ্রামের গভীর নলকূপের ম্যানেজার মেহেদী হাসান জানান, অনাবৃষ্টির কারণে গ্রামে কৃষকদের সাথে মতবিনিময় করে গভীর নলকূপ চালুর মাধ্যমে জমিতে সেচ দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
উপজেলার নশরৎপুর ইউনিয়নের কৃষক গোলাম রব্বানী জানান, সে ৩ বিঘা জমিতে আমন ধান রোপণ করেছে। কিন্তু একটানা খরার কারণে বড় বিপাকে পড়েছে। সেচ যন্ত্র দিয়ে জমিতে পানি দিতে হচ্ছে। এতে খরচ বেশি পড়ে যাবে। বর্ষা মৌসুসেও বৃষ্টির দেখা নেই জন্য প্রচন্ড রোদে চারা লালচে হয়ে যাচ্ছে ।
আদমদীঘি উপজেলা কৃষি অফিসার মিঠু চন্দ্র অধিকারী জানান, এ অবস্থায় কৃষকদের সম্পূরক সেচ চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এতে বাড়তি খরচ হলেও উৎপাদনের ওপর খুব একটা প্রভাব ফেলবে না। আদমদীঘি উপজেলায় ৬ ইউনিয়ন ও এক পৌর সভা মিলে এবার ১২ হাজার ১৮০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ মাত্রা পূরণে মাঠ পর্যায়ে এলাকা ভিত্তিক সুপারভাইজাররা কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা দিয়ে আসছে। আশা করা হচ্ছে আগামীতে এ উপজেলায় আমনের ব্যম্পার ফলন হবে।