নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে পরিণতি ভালো হবে না : প্রধানমন্ত্রী
মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে পরিণতি ভালো হবে না বলে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি জামায়াত নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলেও আওয়ামী লীগের শক্তি দেশের জনগণ। কেউ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে তার পরিণতি ভালো হবে না।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে দলটির সংসদীয় বোর্ডের মনোনয়ন সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় সভাপতিত্ব করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভার প্রথম দিনে কয়েকটি বিভাগের সংসদীয় আসনগুলোর মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে। পর্যায়ক্রমে ৩০০ সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত করতে আগামী কয়েক দিন বৈঠক করবে দলটি। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেতে ৩০০ আসনের বিপরীতে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন মোট ৩ হাজার ৩৬২ জন। প্রতি আসনে গড়ে ১১ জন এ ফরম কিনেছেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০১৪ সালে আত্মবিশ্বাস ছিল না বলেই জ্বালাও-পোড়াও করে তারা নির্বাচনে আসেনি। ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে অপবাদ দিলেও কেউ এখন পর্যন্ত অনিয়মের একটি সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেখাতে পারেনি।
শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে যারা প্রশ্ন তুলে, সামরিক শাসকদের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলার সময় তারা কোথায় ছিল? মাটি ও মানুষের প্রতি ভালোবাসা আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কারও নেই। দেশের মানুষ ভোট দেয়ার সুযোগ পেলে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়।
বিএনপির মিটিং-মিছিলে বাধা নেই, তাহলে অগ্নিসন্ত্রাস কেন? প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিএনপির গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছিল। যখনই সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে, তখনই জবাবদিহিতার মধ্যে পড়েছে তারা। তাদের প্রতি জনগণের আস্থা উঠে গেছে।
সরকার প্রধান বলেন, সহিংসতা করে সরকারের পতন ঘটাতে চায় বিএনপি। রাজনৈতিকভাবে না পেরে অর্থনৈতিকভাবে চাপে ফেলার চেষ্টা করেছে তারা। আমরা দেশের জন্য কাজ করি, কারও তাবেদারি করার জন্য নয়। যতদিন ক্ষমতায় থাকব জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাবো।
শেখ হাসিনা বলেন, গত নির্বাচনের সময় অপপ্রচার চালিয়েছিল বিএনপি। কিন্তু অনিয়মের কোনও প্রমাণ তারা দিতে পারেনি। আওয়ামী লীগ সংবিধান মেনে চলে। এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হবে। সেই সঙ্গে মর্যাদা অক্ষুণ্ন থাকবে।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করেই সংবিধান স্থগিত করে মার্শাল ল জারি করে। হ্যাঁ/না ভোটের আয়োজন করে। সে সময় ভোটের না বাক্স খুঁজেই পাওয়া যায়নি। তারা গণতন্ত্রের নামে জনগণকে ধোঁকা দিয়েছে।
শেখ হাসিনা প্রশ্ন তোলেন, আজ আন্তর্জাতিকভাবে অনেক দেশ কথা বললেও যখন মিলিটারি ডিক্টেটররা মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ন করেছিল তখন তাদের চেতনা কোথায় ছিল?
তিনি বলেন, ভোটচুরির অপরাধে খালেদা জিয়াকে ১৯৯৬ সালের ৩০ মার্চ পদত্যাগ করতে হয়েছে।
এসময় নিজের সরকারের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, একসময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে থাকা নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করতে আওয়ামী লীগ সরকার আইন করে দিয়েছে। এতে ৮২টি সংশোধনী এনে অবাধ নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের উপযোগী করা হয়। সেই আইনের অধীনে এখন দেশে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়।
দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা নৌকায় ভোট দেন। আবার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনেন। এর সুফল ভোগ করেন। সবার প্রতি এটা আমার উদাত্ত আহ্বান।
সকাল ১০টার পর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভায় শুরু হয়। আজকের সভায় রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের সংসদীয় আসনগুলোর মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে। টানা তিনদিন চলবে সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের এ সভা। আজকের পর ধাপে ধাপে বাকি বিভাগগুলোর প্রার্থী চূড়ান্ত করবে আওয়ামী লীগ।