দুই দফা কামব্যাকে নিজেদের মান বাঁচাল ব্রাজিল
মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : ব্রাজিল এবং স্পেনের ম্যাচটা সম্ভবত কেউই মিস করেননি। তবে যদি কেউ মিস করেই ফেলেন, তবে ইউটিউবে ম্যাচটার হাইলাইটস দেখে নিতে পারেন। এক কথায় অবিশ্বাস্য, অকল্পনীয়! যে ম্যাচ শুরু হয়েছিল সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে, সেই ম্যাচটাই এবারের ইন্টারন্যাশনাল উইন্ডোর সেরা ম্যাচ হয়ে থাকল। স্পেনের বার্নাব্যু স্টেডিয়াম সাক্ষী হলো আরও এক দুর্দান্ত ম্যাচের। তিন পেনাল্টি, ৬ গোল, ৩-৩ সমতা। ৯০ মিনিটের ফুটবলে কত রোমাঞ্চ লুকিয়ে থাকতে পারে, তার পুরো নমুনা দেখা গেল এই ব্রাজিল ও স্পেনের এই ম্যাচে। শুরুতে স্পেন যেমন ব্রাজিলকে নাস্তানাবুদ করেছে। তেমনি দুই দফা পিছিয়ে পড়া ম্যাচে ব্রাজিলের কামব্যাকটার মাহাত্ম্যও একেবারেই ফেলনা নয়। ম্যাচের অন্তিম সময় পর্যন্ত ছিল উত্তেজনার রসদ। ড্র ফলাফলই হয়ত তাই এই ম্যাচের সবচেয়ে উপযুক্ত ফলাফল। শুরুটা ছিল পুরোপুরি স্পেনের। ভিসেন্তে দে লা ফুয়েন্তের শিষ্যরা প্রেসিংয়ে ব্রাজিলকে বিপর্যস্ত করছিল বারবার। শুরুর ১৫ মিনিটের হিসেবে সেলেসাওদের ম্যাচে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। সেখানেই ভুল করে বসে ব্রাজিল। বক্সের ভেতর দুর্দান্ত খেলতে থাকা লামিনে ইয়ামালকে ফাউল করে বসেন জোয়াও গোমেজ। স্পট কিকে ভুল করেননি রদ্রি। গোল করে এগিয়ে দেন স্বাগতিকদের। এদিন পুরো ম্যাচেই অবশ্য দুর্দান্ত ছিল ইয়ামাল। বার্সেলোনার এই তরুণ রিয়ালের মাঠে গিয়েও পেয়েছেন ব্যাপক সমর্থন। জাতীয় দলের খেলা হলেও স্প্যানিশ ফুটবল এবং রাজনৈতিক বিতর্কে এমন কিছু একটু বিরলই বটে। ম্যাচে স্পেনের তিন গোলেই অবদান ছিল এই তরুণ ফুটবলারের। প্রথমে পেনাল্টি আদায় করেছেন। এরপর অ্যাসিস্ট করেছেন। আবার শেষ গোলে তারই বাড়ানো পাসে ফাউল হওয়ায় পেনাল্টি পায় স্পেন। বদলি হওয়ার সময় তাই পেয়েছেন বিপুল করতালি। পিছিয়ে পড়েও অবশ্য এদিন প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারছিল না ব্রাজিল। ম্যাচের ১৭ মিনিটে ভিনিসিয়ুস-রদ্রিগোর সমন্বয়ে প্রথম বলার মতো আক্রমণে যায় ব্রাজিল। যদিও সেই আক্রমণ থেকে গোল আসেনি। এরপর আরও কয়েকদফা আক্রমণ চালিয়েও হতাশ হতে হয়েছে সফরকারীদের। উলটো ৩৬ মিনিটে স্পেনকে দুর্দান্ত এক গোলে ২-০ গোলের লিড এনে দেন দানি অলমো। গোলের সহায়তাকারী সেই ইয়ামাল। তার পাস থেকে বল পেয়ে বক্সের ভেতর একাধিক ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে লক্ষ্যভেদ করেছেন অলমো। দুই গোল হজমের পরেই অবশ্য এক গোল শোধ করে সেলেসাওরা। সেটাও ওই স্পেনিশ গোলরক্ষকের কল্যাণে। উনাই সিমন কি বুঝে যেন রদ্রিগোর পায়েই বল তুলে দিলেন। রিয়াল তারকা নিজের ঘরের মাঠে তা আর মিস করলেন না। ২-১ গোলের ব্যবধানেই টানেলে ফেরে দুই দল। বিরতির পর বিস্ময়-বালক এনদ্রিককে মাঠে নামান কোচ দরিভাল। কদিন আগেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নায়ক হয়েছেন। আজ নিজেকে নিয়ে গেলেন অন্য উচ্চতায়। কিছু দিন পর বার্নাব্যুতেই আসবেন তিনি। নিজের আগমনী জানান দিতেই কি না করলেন দুর্দান্ত এক গোল। কর্নার থেকে জটলায় বল পেয়ে অসাধারণ এক ভলিতে ব্রাজিলকে সমতায় ফেরায় তিনি। এই সমতার পরেই ম্যাচে দুইদলেই সমানভাবে খেলতে শুরু করে। যদিও শেষদিকে আবার ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পেয়ে যায় স্পেন। ৮৫ মিনিটে স্পেন দ্বিতীয় পেনাল্টি পেলে ব্রাজিল আবার পিছিয়ে পড়ে। রদ্রি স্পটকিকে গোল করে স্পেনকে লিড এনে দেন ৩-২ গোলে। এরপর ম্যাচ যখন শেষ বাঁশি বাজার অপেক্ষায় তখনই দেখা মেলে আরেক চমকের। এবার গালেনোকে ফাউল করে ব্রাজিলকে ম্যাচে ফেরার সুযোগ করে দেন কারভাহালই। স্পট কিকে পাকেতা গোল করলে উল্লাসে মাতে ব্রাজিল। ৩-৩ গোলের রোমাঞ্চে সেই হয় বর্ণবাদের বিরুদ্ধে বার্তা দিয়ে আয়োজন করা এই ম্যাচ।