শনিবার, ২৪শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

আজ পবিত্র জুমার দিন: ইসলামের বরকতময় সাপ্তাহিক ঈদ

আজ পবিত্র জুমার দিন: ইসলামের বরকতময় সাপ্তাহিক ঈদ

মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : ইসলামে প্রতিটি দিনই গুরুত্বপূর্ণ, তবে শুক্রবার বা জুমার দিন এক বিশেষ মর্যাদার অধিকারী। এটি শুধু একটি সাধারণ দিন নয়, বরং মুসলিম উম্মাহর জন্য এক সাপ্তাহিক ঈদের দিন। আল্লাহর কাছে এ দিনের গুরুত্ব এতটাই বেশি যে, কুরআন ও হাদিসে এ সম্পর্কে বিস্তর আলোচনা এসেছে। মুসলমানদের জন্য জুমার দিন এক আত্মশুদ্ধি, ইবাদত, একতা ও বরকতের প্রতীক।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন:

“হে ঈমানদারগণ! জুমার দিনে যখন সালাতের আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় পরিত্যাগ করো। এটিই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে।” — (সূরা জুমু‘আ, আয়াত ৯)

এই আয়াত থেকেই বোঝা যায়, জুমার দিনে নামাজের জন্য দুনিয়ার সব কাজ থামিয়ে দিয়ে আল্লাহর দিকে মনোযোগী হওয়াই হচ্ছে প্রকৃত ঈমানদারির পরিচয়।

জুমার দিনের ফজিলত

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:

“সূর্য উদিত হয় এমন শ্রেষ্ঠ দিন হলো শুক্রবার। এদিনে আদম (আ.) সৃষ্টি হয়েছেন, এদিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এদিনেই জান্নাত থেকে বের করা হয়। কিয়ামতও এই দিনেই সংঘটিত হবে।” — (সহিহ মুসলিম)

অন্য এক হাদিসে এসেছে, জুমার দিন এমন একটি সময় রয়েছে, যখন আল্লাহর বান্দা কোনো দোয়া করলে তা অবশ্যই কবুল হয়—শর্ত হলো, বান্দা আল্লাহর কাছে মনোযোগ সহকারে চায়।

বিশেষ আমল ও করণীয়

জুমার দিনে কিছু বিশেষ আমল রয়েছে, যেগুলো মুমিনের জন্য অনেক ফজিলতপূর্ণ:

গোসল করা ও পরিষ্কার পোশাক পরা

জুমার খুতবা মনোযোগ দিয়ে শোনা

সূরা কাহফ তিলাওয়াত করা

দরুদ শরীফ অধিক পরিমাণে পাঠ করা

বেশি বেশি দোয়া করা ও ইস্তেগফার করা

এছাড়া, রাসূল (সা.) প্রতি জুমার দিনে মসজিদে আগে গমন করতেন এবং সাহাবিরাও আগেভাগে উপস্থিত হতেন।

মুসলিম সমাজে জুমার বার্তার তাৎপর্য: জুমার দিন শুধু ইবাদতের দিন নয়, এটি মুসলিম সমাজকে একত্রিত করার একটি প্ল্যাটফর্মও। জুমার খুতবা হচ্ছে ইসলামি শিক্ষার এক উন্মুক্ত মঞ্চ, যেখানে সমাজের সমস্যা, সমাধান ও দ্বীনের শিক্ষা তুলে ধরা হয়। ফলে জুমা কেবল ব্যক্তিগত না, বরং সামাজিক সংস্কারের দিক থেকেও একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ।

জুমার দিন আমাদের জন্য আল্লাহর এক অপার অনুগ্রহ। এটি কেবল ছুটির দিন নয়—বরং আত্মশুদ্ধি, ইবাদত, দোয়া, একতা ও আত্মসংযমের এক মহামঞ্চ। আসুন, আমরা সবাই জুমার ফজিলত বুঝে এই দিনটিকে যথাযথভাবে পালন করি, যাতে আমাদের জীবন আলোকিত হয় দুনিয়া ও আখিরাতে।

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন