রবিবার, ১১ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

আর্থিক স্বচ্ছতা ইমানের আলামত

আর্থিক স্বচ্ছতা ইমানের আলামত

মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : ইসলামে অর্থ উপার্জন ও ব্যয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। চলতে হলে অর্থের লেনদেন করতে হয়। তাই লেনদেনের কিছু নিয়ম দিয়েছে ইসলাম। এসব মানলে পৃথিবীতে এবং পরকালে রয়েছে মহাপুরস্কার! পক্ষান্তরে লেনদেনে অস্বচ্ছতায় দোয়া-ইবাদতও কবুল হয় না। রাসুল (সা.) এক লোকের বর্ণনা দেন; যে দীর্ঘ পথ সফর করে এসেছে। চুলগুলো এলোমেলো, শরীর ধূলিধূসরিত। আসমানের দিকে হাত তুলে দোয়া করছে—হে আমার রব! হে আমার রব! অথচ তার খাদ্য-পানীয় হারাম, পোশাক-পরিচ্ছদ হারাম; তাহলে কীভাবে তার দোয়া কবুল হবে? (মুসলিম: ১০১৫; তিরমিজি: ২৯৮৯)

মানুষ প্রয়োজনে একে অন্যের কাছে সম্পদ গচ্ছিত রাখে। যে ব্যক্তি এ আমানতের খেয়ানত করবে তার ইমান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে হাদিসে। হজরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেন—‘যার আমানতদারিতা নেই তার ইমান নেই। যার প্রতিশ্রুতির ঠিক নেই তার দ্বীন নেই।’ (মুসনাদে আহমাদ: ১২৩৮৩)। অনুরূপভাবে যার উপার্জন বৈধ নয়, তার ইবাদতও কবুল হয় না। হাদিসে এসেছে, ‘অজু ছাড়া নামাজ কবুল হয় না; আর আত্মসাতের (অর্থাৎ অবৈধভাবে উপার্জিত) সম্পদের সদকাও কবুল হয় না।’ (মুসলিম: ২২৪)

মানুষের পাওনা হক আদায় না করার রয়েছে অনেক শাস্তি। রাসুল (সা.) একবার সাহাবিদের জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কি জানো নিঃস্ব কে? তারা বললেন, যার অর্থ-সম্পদ নেই আমরা তো তাকেই নিঃস্ব মনে করি। তখন রাসুল (সা.) বললেন, আমার উম্মতের মধ্যে নিঃস্ব সেই ব্যক্তি, যে কেয়ামতের ময়দানে নামাজ, রোজা, জাকাত ইত্যাদি অনেক নেক আমল নিয়ে উপস্থিত হবে; কিন্তু সে হয়তো কাউকে গালি দিয়েছে বা কারও ওপর মিথ্যা অপবাদ আরোপ করেছে বা কারও সম্পদ আত্মসাৎ করেছে বা কাউকে খুন করেছে অথবা কাউকে আঘাত করেছে। ফলে প্রত্যেককে তার হক অনুযায়ী এই ব্যক্তির নেক আমল থেকে দিয়ে দেওয়া হবে। যদি কারও হক বাকি থেকে যায়, আর এ ব্যক্তির নেক আমল শেষ হয়ে যায়, তাহলে হকদার ব্যক্তির পাপ পাওনা অনুসারে এই ব্যক্তির ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হবে। ফলে সে এই পাপের বোঝা নিয়ে জাহান্নামে যাবে।’ (মুসলিম: ২৫৮১; তিরমিজি: ২৪১৮)

সর্বোপরি লেনদেনে স্বচ্ছতা অবলম্বন জরুরি। হারাম সম্পদ জাহান্নামে জ্বলবে। এ সম্পদ দ্বারা পূর্ণ শরীর জান্নাতে যাবে না। জাহান্নামের আগুনে জ্বলবে। হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘এমন শরীর কখনো জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যা হারাম সম্পদ দ্বারা বর্ধিত। জাহান্নামই তার উপযুক্ত স্থান!’ (মুসনাদে আহমাদ: ১৪৪৪১)। হাদিসে আরও এসেছে, রাসুল (সা.) হজরত কাব বিন উজরাহ (রা.)-কে ডেকে বললেন, হে কাব! শুনে রাখো, ওই দেহ জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যা হারাম হতে সৃষ্ট। কেননা জাহান্নামের আগুনই তার অধিক উপযোগী।’ (তিরমিজি: ৬১৪)

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন