লালমনিরহাটের তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি নিন্মঞ্চল প্লাবিত
মোঃ লাভলু শেখ লালমনিরহাট থেকে।।
কয়েক দিনের অব্যাহত ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। পানি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪ টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন লালমনিরহাটের তিস্তাপাড়ের পরিবার গুলো।
সোমবার ১৯ জুন পানির রেকর্ড করা হয় বিকাল ৩ টায়
ডালিয়া পয়েন্ট – পানির সমতল 51.90 মিটার (বিপদসীমা = 52.15 মিটার) যা বিপদসীমার 25 সে.মি নিচে। কাউনিয়া পয়েন্ট – পানির সমতল 28.27 মিটার, (বিপদসীমা =28.75 মিটার) যা বিপদসীমার 48 সেঃমিঃ নিচে। ধরলা নদী শিমুলবাড়ি পয়েন্ট – পানি সমতল 29.78 মিটার, (বিপদসীমা = 31.09 মিটার) যা বিপদসীমার 131 সেঃমিঃ নিচে। পাটগ্রাম পয়েন্ট -পানি সমতল 57.19 মিটার (বিপদসীমা = 60.35 মিটার) যা বিপদসীমার 316 সেঃমি নিচে।
লালমনিরহাটে গতকাল রোববার সকাল ০৮ টা হতে সোমবার সকাল ০৮ টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাতঃ ৫৩ মিলিমিটার।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা জানান, কয়েকদিনের অব্যাহত বৃষ্টি পাতের কারণে এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। এ কারনে ব্যারাজের ৪৪ টি জল কপাট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বর্ষাকালে নদীর পানি বাড়া-কমার মধ্যে থাকবে। পানি বাড়লে তিস্তাপাড়ের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। তাই বন্যা মোকাবিলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।
ডালিয়া পয়েন্টে সব জলকপাট খুলে দেয়ায় পানি বৃদ্ধি হয়। ব্যারাজের গেট দিয়ে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
লালমনিরহাটের তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের অনেক বসতবাড়িতে পানি উঠেছে। ফসলের খেত পানিতে ডুবে ফসলহানির শঙ্কা করছেন কৃষকরা। হঠাৎ পানি বাড়ার কারণে গবাদি পশুপাখি নিয়েও বিপাকে পড়েছেন তারা।
তিস্তা চরাঞ্চলের কৃষকেরা জানান, ২ মাস আগে হঠাৎ করেই শুকিয়ে যাওয়া মৃত প্রায় তিস্তা আবারও ফুলেফেঁপে ওঠে। ফিরে আসে আগের রূপে। ওই সময় তিস্তা নদীর বুক জুড়ে থাকা ফসলি জমি পানিতে ডুবে যাওয়ার কারণে মরিচ, পেঁয়াজ, তামাক, ভুট্টা, বাদাম, বীজতলা, ধানসহ বিভিন্ন ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হয়। সে ধকল কাটতে না কাটতে আবারও বাড়তে শুরু করেছে পানি। এ কারনে আমরা তিস্তা চরাঞ্চলের সাধারন কৃষকরা চিন্তিত।
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী মানুষ বিশেষ করে জেলেদের মাছ শিকারে ব্যস্ততা বেড়েছে।
পাউবো পক্ষে থেকে জানানো হয়েছে। প্রতিবছর জুন মাসে বন্যা দেখা দেয়। তাই তিস্তাপারের মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে বলেও তিনি নিশ্চিত করেছেন।