সোমবার, ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

মেঘনায় জলদস্যু কেফায়েত বাহিনির গুলিতে ৩ জেলের মৃত্যু: সুবর্ণচরে কেফায়েতের ফাঁসির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন

মেঘনায় জলদস্যু কেফায়েত বাহিনির গুলিতে ৩ জেলের মৃত্যু: সুবর্ণচরে কেফায়েতের ফাঁসির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন
 মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন,নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
হাতিয়া অংশের মেঘনা নদীর স্বর্ণদ্বীপ-স্বন্দ্বীপ চ্যানেলে মাছের খোপ দখলকে কেন্দ্র করে জলদস্যু কেফায়েত বাহিনীর গুলিতে গুলিবিদ্ধ আহত আরও এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গুলিবিদ্ধ তিন জেলের মৃত্যু হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে জলদস্যুদের গ্রেফতার ও বিচার দাবিতে উত্তাল সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ এরিয়া এবং চরজব্বার থানার  প্রধান ফটক ঘেরাও করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ভিকটিম পরিবারসহ এলাকাবাসী। এছাড়াও সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন করে শত শত জেলে ও উপকূলের অসহায় বাসিন্দারা।
রোববার (১ অক্টোবর) দুপুরে সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ চত্তরে এই কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এসময় ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জলদস্যুদের আইনের আওতায় এনে বিচারের আশ্বাস প্রদান করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আল আমিন সরকার। বিচারের আশ্বাস পেয়ে উপজেলা পরিষদ ও থানা ঘেরাও এবং সড়ক অবরোধ তুলে নেয় আন্দোলনকারীরা।
নিহত মো.ইসমাইল হোসেন (৩০) সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের চর আলাউদ্দিন গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে।
নিহত অপর দুই জেলে হলো, সুবর্ণচরের পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের পূর্ব চর মজিদ গ্রামের আবদুর রহমান (৩৩) এবং একই গ্রামের দেলোয়ার হোসেন ওরফে রাজু (১৬)। উল্লেখ্য, গত শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে, গত বুধবার বিকেলে মেঘনা নদীর স্বর্ণদ্বীপের পশ্চিমে সন্দ্বীপ চ্যানেলের কাছে ইলিশ মাছের খোপে মাছ ধরার সময় জেলেদের ওপর হামলার এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মো.ইসমাইল হোসেনের আত্নীয় টুটুল,বিপ্লব,রাজা মিয়া জানান, শনিবার চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পর দুপুরের দিকে ইসমাইলের শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের পর তার শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল। কিন্তু বিকেলের দিকে তার অবস্থার অবনতি ঘটে। সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে সে মারা যায়।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, সুবর্ণচর উপজেলার মাইন উদ্দিন মাঝি ও অলি মাঝি মেঘনা নদীর স্বর্ণদ্বীপের পশ্চিমে সন্দীপ অংশ থেকে দীর্ঘ দিন থেকে মাছ শিকার আসছে। কিছু দিন আগে থেকে মেঘনা নদীর মাছ শিকারের এই খেপ দখলের চেষ্টা চালায় জলদস্যু কেফায়েত বাহিনী। বুধবার সন্ধ্যার দিকে কেফায়েত বাহিনী ওই খেপ দখল করতে জেলেদের জাল কেটে দেয়। খবর পেয়ে দুটি মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে সেখানে যায় ভুক্তভোগী জেলেরা।  একপর্যায়ে জলদস্যু কেফায়েত বাহিনীর সদস্য আলতাফ, নুরউদ্দিন ও জুয়েল সন্দীপ কোস্টগার্ড স্টেশনের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মহিউদ্দিনের সহযোগিতায় জেলেদের দুটি মাছ ধরার ট্রলারে দুই দফায় হামলা চালিয়ে মাছ, জাল, ট্রলারসহ কোটি টাকার মালামাল ডাকাতি  করে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে জলদস্যু বাহিনী গুলি ছুড়লে ৬ জেলে গুলিবিদ্ধসহ ১০ জন আহত হয়। বাহিনি কমান্ডার কেফায়েতের গ্রেফতার না হওয়াতে ভুক্তভোগী পরিবার গুলার মাঝে আতঙ্ক বিরাশ করছে বলে জানান গণমাধ্যম কর্মীদের। প্রতিনিয়ত কেফায়েত বাহানি বার্তা পাঠাচ্ছে জেলে পরিবার গুলাকে হত্যা ও মামলার দিকে না যেতে। এলাকায়  চলছে  এ ঘটনায় শোকের মাতন।
বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন