বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

সরকারি কর্মচারী হলেই রিটার্ন বাধ্যতামূলক, দিতে হবে সম্পদ বিবরণীও

সরকারি কর্মচারী হলেই রিটার্ন বাধ্যতামূলক, দিতে হবে সম্পদ বিবরণীও

মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : আয়কর আইন অনুযায়ী ৪৩ ধরনের সরকারি সেবা পেতে হলে রিটার্ন বাধ্যতামূলক। অর্থাৎ ওই সেবা পেতে হলে যেকোনো করদাতাকে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ বা পিএসআর জমা দিতে হবে।

একই বিধান প্রযোজ্য সরকারি কর্মকর্তা কিংবা কর্মচারীর ক্ষেত্রে। শুধু তাই নয় গণকর্মচারীর বেতন ভাতাদি প্রাপ্তিতে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। নতুন আয়কর আইন অনুযায়ী, রিটার্ন দাখিল না করলে গণকর্মচারীদের বন্ধ হবে বেতন-ভাতাসহ সুবিধা। নিতে পারবেন না ৪৩ ধরনের সুবিধা। সঙ্গে দিতে হবে সম্পদ বিবরণীও। সম্প্রতি নতুন আইন অনুযায়ী গণকর্মচারীদের রিটার্ন দাখিল নিশ্চিত করতে দেশের সব কর অঞ্চলগুলোতে চিঠি দিয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) এনবিআরের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।আয়কর আইনের ২৬৪(৩) ২৭ ধারা বলছে, গণকর্মচারীর বেতন ভাতাদি প্রাপ্তিতে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ বা পিএসআর দাখিল করতে হবে। আইনের ধারা ২৬৪(৩) এ ৪৩টি সেবা ও কাজের ক্ষেত্রে পিএসআর জমা দিতে হবে। অর্থাৎ সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নেয়ার ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ বা পিএসআর জমা দিতে হবে। এ বিষয়ে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, গণকর্মচারীদের আয়কর রিটার্ন ও সম্পদ বিবরণী দাখিল নিশ্চিত করতে পারলে অপরাধ ও দুর্নীতি কমে যাবে। কোনো কর্মচারী অপরাধ, দুর্নীতি করলে তার সম্পদ আর খুঁজতে হবে না। বিভিন্ন সময় সরকার কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পদের হিসাব নেওয়ার উদ্যোগ নিলেও  শেষ পর্যন্ত তা সফল হয়নি। নতুন আইন অনুযায়ী ‘গণকর্মচারীদের’ রিটার্ন ও সম্পদ বিবরণী দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারলে এবার সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে। বিভিন্ন কর অঞ্চলে দেওয়া চিঠির সূত্রে জানা যায়, চিঠিতে গণকর্মচারীদের রিটার্ন দাখিল বিষয়ে আয়কর আইন-২০২৩-এর বিভিন্ন ধারা তুলে ধরা হয়। আয়কর আইনের ১৬৬ (গ) ধারা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি গণকর্মচারী হলে তিনি রিটার্ন দাখিল করবেন। এই ধারায় বলা হয়েছে, ওই ব্যক্তি একটি কোম্পানি, কোনো শেয়ারহোল্ডার পরিচালক বা কোনো কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার কর্মচারী, কোনো ফার্ম, কোনো ফার্মের অংশীদার, কোনো ব্যক্তিসংঘ, কোনো ব্যবসায় নির্বাহী বা কোনো ব্যবস্থাপকের পদধারী কোনো কর্মচারী, কোনো গণকর্মচারী হন বা কোনো অনিবাসী, যার বাংলাদেশে স্থায়ী স্থাপনা রয়েছে। আর সম্পদ বিবরণী বিষয়ে আয়কর আইনের ধারা ১৬৭ (১) বলা হয়েছে,  সব গণকর্মচারী আবশ্যিকভাবে পরিসম্পদ ও দায়ের বিবরণী দাখিল করবেন। পরিসম্পদ ও দায়ের বিবরণী দাখিল করার এই ধারায় বলা হয়েছে, এই ধারার অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে প্রত্যেক স্বাভাবিক করদাতা আবশ্যিকভাবে পরিসম্পদ ও দায়ের বিবরণী দাখিল করবেন। যদি সেই ব্যক্তির আয়বর্ষের শেষ তারিখে ৪০ লাখ টাকার অধিক মোট সম্পত্তির মালিক হন বা আয়বর্ষের যেকোনো সময় কোনো মোটরযানের মালিক হন বা সিটি কর্পোরেশন এলাকার মধ্যে সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষে গৃহ সম্পত্তি বা অ্যাপার্টমেন্টে বিনিয়োগ করেন বা আয়বর্ষের কোনো সময়ে বিদেশে কোনো পরিসম্পদের মালিক হন বা কোনো কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার পরিচালক হন। তবে গণকর্মচারী আবশ্যিকভাবে পরিসম্পদ ও দায়ের বিবরণী দাখিল করবেন। সরকারি-বেসরকারি ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা, নারী করদাতা ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সী করদাতাদের জন্য চার লাখ টাকা; তৃতীয় লিঙ্গের করদাতা ও প্রতিবন্ধী করদাতাদের ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা; গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত। আর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গতবছর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮১৮ জন। এর মধ্যে ১১তম গ্রেড থেকে ২০তম গ্রেড পর্যন্ত কর্মচারীর সংখ্যা ১২ লাখ ১৭ হাজার ২৬৪ জন।

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন