শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, যার রেজি নং-৩৬)

মহানবী সা.-এর বিনয় ও নম্রতা যেমন ছিল

মহানবী সা.-এর বিনয় ও নম্রতা যেমন ছিল

মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : হজরত কুদামা ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে আমির রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে (হজের মৌসুমে) খাকী বর্ণের একটি উটনীর ওপর সাওয়ার হয়ে (আকাবায়) কংকর নিক্ষেপ করতে দেখেছি। (তিনি এভাবে কংকর নিক্ষেপের জন্য গিয়েছেন যে, লোকজনকে তার কাছ থেকে দূরে থাকার জন্য) না কোনো মারপিট ছিল আর না কোনো প্রকারের হাঁকডাক। ‘এদিকে যাও’ ‘ওদিকে সর’ এমন কথাও বলা হয়নি। (আখলাকুন্নবী সা., ১১৪) এই হাদিসের মাধ্যমে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহানুভবতা ও তার পরম বিনয় প্রকাশ পেয়েছে। কারণ তখন তিনি পুরো বিশ্বের প্রথপ্রদর্শক ও সকল নবীর সর্দার হওয়ার পাশাপাশি সমকালীন প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্তা ব্যক্তিও ছিলেন। এরপরও তার চাল-চলন, কথাবার্তা ও আচরণে কর্তাসূলভ কোনো কিছু লক্ষ করা যায়নি। হজের মৌসুমে হাজিদের প্রচণ্ড ভিড় থাকে। আবার তাদের অধিকাংশই থাকেন এমন চরিত্রের যারা নাগরিক রীতি  নীতি সম্পর্কে অসচেতন ও অনভ্যস্ত। এমন পরিস্থিতিতে একজনের শরীরে অন্যজনের শরীরের ধাক্কা লাগা, ভিড়ের চাপে কেউ নিচে পড়ে যাওয়া মোটেও অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের মর্যাদার জন্য পৃথক কোনো ব্যবস্থা নেননি। তিনি সাধারণের সঙ্গে মিশে হজ পালন করেছেন।আরেক হাদিসে হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, ‘একদা আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে হাঁটছিলাম। তখন তার গায়ে একটি গাঢ় পাড়যুক্ত নাজরানি চাদর ছিল। এক বেদুঈন তাকে পেয়ে চাদর ধরে সজোরে টান দিল। আনাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুবলেন, আমি নবী করিম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাঁধের ওপর তাকিয়ে দেখলাম যে জোরে চাদর খানা টানার কারণে তার কাঁধে চাদরের পাড়ের দাগ বসে গেছে।তারপর বেদুঈন বলল, হে মুহাম্মাদ, তোমার কাছে আল্লাহর দেওয়া যে সম্পদ আছে, তা থেকে আমাকে দেওয়ার জন্য আদেশ করো। তখন নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে তাকিয়ে হেসে ফেলেন এবং তাকে কিছু দান করার জন্য আদেশ করেন।’ (বুখারি, হাদিস, ৬০৮৮)অপর এক হাদিসে আনাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, ‘একবার এক বেদুঈন মসজিদে প্রস্রাব করে দিল। লোকেরা উঠে তার দিকে গেল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তার প্রস্রাব করায় বাধা দিয়ো না। অতঃপর তিনি এক বালতি পানি আনালেন এবং তাতে ঢেলে দিলেন।’ (বুখারি, হাদিস, ৬০২৫) আনাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আরও বলেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমি দীর্ঘ করার ইচ্ছা নিয়ে সালাত শুরু করি। কিন্তু পরে শিশুর কান্না শুনে আমার সালাত সংক্ষেপ করে ফেলি। কেননা শিশু কাঁদলে মায়ের মন যে খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে তা আমি জানি।’ (বুখারি, হাদিস, ৭০৯)

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন