সোমবার, ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

ঝিনাইগাতীতে যৌতুক মামলায় ১২ বছর সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেপ্তার

ঝিনাইগাতীতে যৌতুক মামলায় ১২ বছর সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেপ্তার
শেরপুর প্রতিনিধি : ২০১৮ সালে শেরপুরের  ঝিনাইগাতী উপজেলার হাতীবান্ধা গ্রামে যৌতুকের জন্য গুরুতর আঘাতের ঘটনায় মামলায় ১২ বছর সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি মো. মিন্টু মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১৪, জামালপুর। ২৫ফেব্রুয়ারি রবিবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে ঢাকার ডেমরা থানার বামৈল বালুরমাঠ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।  র‌্যাব জানায়, ২০১২ সালের ১১এপ্রিল উপজেলার মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামের মৃত আতর আলীর মেয়ে মোছা. মোর্শেদা বেগমের সাথে হাতীবান্দা গ্রামের মৃত আনিছ এর ছেলে  মো. মিন্টু মিয়ার সাথে পারিবারিক ভাবে বিবাহ হয়। তাদের দাম্পত্য জীবন চলাকালে তাদের ঔরষে ৪ বছরের একটি কন্যা ও ভিকটিমের গর্ভে আরেকটি সন্তান আসে। দাম্পত্য জীবনে আসামী এবং ভিকটিমের মধ্যে যৌতুক ও  বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকত। একপর্যায়ে, আসামী মো. মিন্টু মিয়া ভিকটিমকে তার বিধবা মায়ের কাছ থেকে যৌতুক বাবদ একলক্ষ টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। এরই প্রেক্ষিতে ভিকটিম তার বিধবা  মায়ের নিকট হতে ত্রিশ হাজার টাকা নিয়ে স্বামীকে দেয়। উক্ত টাকা মো. মিন্টু মিয়া নেশা করে অপচয় করে এবং যৌতুকের দাবিতে আরও টাকা এনে দিতে শারীরিক নির্যাতন অব্যাহত রাখেন। যৌতুকের জন্য অসহনীয় নির্যাতন করে গর্ভাবস্থায় চার বছরের শিশু কন্যাসহ বাড়ী থেকে বের করে দেয়। ভিকটিম তার বিধবা মায়ের বাড়ীতে আশ্রয় নেয়া সহ ২০১৭ সালে শেরপুর আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা দায়ের করে। আদালত আসামী মো. মিন্টু মিয়াকে শান্তিপূর্ণভাবে ঘর সংসার করার নির্দেশ দিলে ভিকটিম তার স্বামীর সাথে পুনরায় দাম্পত্য জীবন শুরু করেন। কিছু দিন যেতে না যেতেই আসামি মো. মিন্টু মিয়া তার পূূর্বের আচরণে ফিরে গিয়ে ভিকটিমকে যৌতুকের জন্য মারধর করতে থাকে। ভিকটিম দুই সন্তানের কথা চিন্তা করে নিরবে সব নির্যাতন সহ্য করে যাচ্ছিল। এমতাবস্থায়, ২০১৮ সালের ৭জুলাই আসামী ও ভিকটিমের মধ্যে যৌতুকের টাকা নিয়ে ঝগড়া শুরু হয়। ঝগড়ার একপর্যায়ে আসামী মো. মিন্টু মিয়া তার হাতে লোহার রড দিয়ে ভিকটিমকে আঘাত করলে তার ডান হাত ভেঙ্গে যায় এবং গুরুত্বর জখম প্রাপ্ত অবস্থায় ভিকটিমকে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখেন। লোকমুখে মোর্শেদার   মা সংবাদ পেয়ে মোর্শেদাকে উদ্ধার করে প্রথমে শেরপুর পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করানো সহ ২০১৮ সালের ১৩জুলাই থানায় মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ তদন্ত শেষে মিন্টু মিয়ার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। পরে আদালত দীর্ঘ শুনানী শেষে ২০২১সালের ১৩ নভেম্বর  নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল শেরপুর, বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মো. আখতারুজ্জমান আসামীকে দোষী সাব্যস্ত করে ১২ বছরের সশ্রম কারাদন্ড  এবং ২০হাজার টাকা অর্থদন্ড,  অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেন। ঘটনার পর থেকে আসামী আত্মগোপনে চলে যায়। পরবর্তীতে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে আসামীর অবস্থান নিশ্চিত করে র‌্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর এর কোম্পানী অধিনায়ক মেজর মো. আবরার ফয়সাল সাদী ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুলফিকার আলী এবং র‌্যাব-১০, সদর কোম্পানী, যাত্রাবাড়ী ক্যাম্প, ঢাকা এর সহকারী পুলিশ সুপার এম,জে, সোহেল এর নেতৃত্বে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উক্ত মামলার ১২ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. মিন্টু মিয়া এর অবস্থান জানতে পেরে র‌্যাবের একটি চৌকস আভিযানিক দল গোপন নজরদারির মাধ্যমে গতকার রবিবার দিবাগত রাতে মিন্টু মিয়াকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। র‌্যাব কর্তৃক গ্রেপ্তারকৃত মিন্টু মিয়াকে সোমবার দুপুরে উক্ত মামলায় ঝিনাইগাতী থানায় হস্তান্তর করে।
বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন