ঢামেক হাসপাতালকে ৪ হাজার শয্যার হাসপাতালে পরিণত করা হবে
মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালকে আধুনিক হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এখানে যাতে একসঙ্গে ৪ হাজার রোগী চিকিৎসা নিতে পারে খুব শিগগির সেই ব্যবস্থা করা হবে।
আজ সোমবার (১০ জুলাই) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৭৮তম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে যে হারে লোকসংখ্যা বেড়েছে তাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া খুবই কষ্টকর। এ জন্য আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে নতুন প্ল্যান তৈরি করেছি। যেটি আরও বড় আরও সুন্দর ও আধুনিক হাসপাতাল হিসেবে গড়ে উঠবে। এখানে যাতে করে ৪ হাজার রোগী চিকিৎসা সেবা পেতে পারে সেটি চিন্তা করেই এই প্ল্যানটি করা হয়েছে। আশা করি দ্রুত এটির কাজ আমরা শুরু করতে পারব।
তিনি বলেন, সারাদেশে আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেছি যেখান থেকে অন্তত মানুষ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাটা পাচ্ছে। সারা বাংলাদেশে একটি সার্ভে করেছিলাম কোন কোন জেলায় কোন কোন হাসপাতালে কত রোগী আসে। কোন এলাকার জনসংখ্যা কত সেটির ওপর ভিত্তি করে ১০০ বেডের হাসপাতালকে আড়াইশো বেড করা হয়। যেখানে ২৫ বেড ছিল সেখানে ৫০ বেড করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি সবশেষে বলব আপনারা গবেষণার দিকে নজর দেন। গবেষণার সব ব্যবস্থা আমরা করে দেব যত টাকা লাগে আমরা দেব। চিকিৎসকরা সুস্থ মানে জনগণ সুস্থ। জনগণ সুস্থ মানে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী বাংলাদেশ। দেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ।
চিকিৎসকদের স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের গবেষণায় নজর দিতে নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গবেষণার দিকে একটু নজর দেবেন। গবেষণা করতে যা লাগে সেই সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া হবে। যত টাকা লাগে আমরা দেব। স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের গবেষণা অপরিহার্য। সেদিকে আপনারা আরও এগিয়ে আসবেন।
তিনি বলেন, আমাদের চিকিৎসা বিজ্ঞানে গবেষণার খুব অভাব। চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণা হচ্ছে না। হাতে গোনা কয়েকজন গবেষণা করে থাকেন। বর্তমান যুগে গবেষণা একান্ত অপরিহার্য। গবেষণার জন্য আমরা বিশেষ অনুদানও দেই। আপনারা দয়া করে একটু গবেষণার দিকে দৃষ্টি দেবেন। আধুনিক প্রযুক্তি উদ্ভাবন হচ্ছে এবং সেই সঙ্গে নানা রোগের প্রাদুর্ভাব আমরা দেখছি।
চিকিৎসকরা ঢাকাকেন্দ্রিক বেশি থাকতে চায়, যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাই ঢাকায় থাকতে চায়, ঢাকার বাইরে কেউ থাকতে চায় না। এখন আমাদের প্রত্যেকটা গ্রামে বিদ্যুৎ আছে, প্রত্যেকটা গ্রামে যোগাযোগ ব্যবস্থা আছে। গ্রাম পর্যায়ে ওয়াইফাই কানেকশন আছে। আমরা সরকারিভাবেই বিভিন্ন উপজেলায় বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। যে যেই দায়িত্ব পাবেন সে দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন, সেটাই আমরা চাই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোনো মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না, প্রথম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আমরা স্থাপন করি। চিকিৎসা ব্যবস্থা আরও উন্নতমানের করতে বিশেষায়িত অনেকগুলো ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি মানুষকে সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথম মেডিকেল কলেজ। এখানকার চিকিৎসকরা খুব আন্তরিকতার সঙ্গে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।
শেখ হাসিনা বলেন, অনেক জেলা হাসপাতালে অপারেশন হয় না কারণ ডাক্তার থাকে না, নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এমনকি গাইনি ডাক্তার, তারা অনেক উপজেলা হাসপাতালে থাকেন না, সেজন্য চিকিৎসা বা অপারেশন হয় না। এই বিষয়গুলোর দিকে দৃষ্টি দিতে হবে সবাইকে। আমরা এক একটা গ্রামকে শহরে রূপান্তর করতে চাইছি। নাগরিক সব সেবা গ্রামের সবাই পাবে। উপজেলা পর্যায়ে যেন এই সেবাটা নিশ্চিত হয়। এতগুলো হাসপাতাল, এত সুন্দর পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছি, সেখানে যদি যন্ত্রপাতি পড়ে থাকে, সেগুলোর যথাযথ ব্যবহার হয় না। নতুন আধুনিক যে যন্ত্রপাতি আছে সেগুলোর জন্য ট্রেনিং দেওয়াতে হবে। দেশে না হোক বাইরে থেকেও ট্রেনিং করে নিয়ে আসতে হবে। সেগুলোর দিকে সবাই দৃষ্টিতে আমি সেটাই চাই।
ডেঙ্গুতে সচেতনতা বেশি দরকার জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাড়ি ঘরে যেন মশা সৃষ্টি না হতে পারে সেদিকে সবাইকে নজর দিতে হবে। পরিষ্কার রাখতে হবে। আমাদের দেশে একটা সমস্যা হচ্ছে যা কিছু হোক সব দোষ সরকারের। মশা কামড় দিলেও সরকারের দোষ। নিজের বাড়ি ঘর নিজের পরিষ্কার রাখতে হবে।