সৌদির কাছে হজের খরচ কমানোর দাবি ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর
মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক :হজের খরচ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় চলতি বছর নির্ধারিত কোটা পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। এ অবস্থায় হজের খরচ কমানোর দাবি ওঠে সব মহল থেকে।বুধবার (২৩ আগস্ট) মন্ত্রণালয়ের নিজ কক্ষে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রী তৌফিক বিন ফাউজানের কাছে দাবি জানান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। জবাবে বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন সৌদি মন্ত্রী।এর আগে সচিবালয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে সৌদির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রী তৌফিক বিন ফাউজান আল রাবিয়াহর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সভা হয়। সভায় হজের খরচ কমানোর বিষয়টি তোলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী। জবাবে সৌদি সরকারের মন্ত্রী বলেন, যদি খরচ কমানো সম্ভব হয়, আমরা কমাব।এ সময় তৌফিক আল-রাবিয়াহ বলেন, ‘বাংলাদেশিদের সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় স্বাগত জানাতে আমরা এখানে এসেছি। ওমরাহ ভিসার মেয়াদ ৩০ দিন থেকে বাড়িয়ে ৯০ দিন করা হয়েছে। যে কেউ মক্কা, মদিনাসহ বিভিন্ন শহর ঘুরতে পারবেন। সৌদির উন্নয়নে সহায়তা করছেন বাংলাদেশিরা। ২৮ লাখ বাংলাদেশি বর্তমানে সৌদি আরবে কাজ করছেন। আমি প্রতিটি বাংলাদেশি নাগরিককে নিশ্চিত করতে চাই, তারা ওমরাহ করতে গিয়ে সেখানে যেকোনো জায়গায় যেতে পারবেন। এখন নারীরাও মাহরাম ছাড়া মক্কা ও মদিনায় যেতে পারবেন।’তিনি বলেন, সৌদি আরবে বাস করা যেকোনো বাংলাদেশি তাদের আত্মীয়-স্বজনদের সৌদি আরবে ভিজিট করতে আমন্ত্রণ জানাতে পারবেন। এছাড়া হজের খরচ কমানো নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।সৌদি মন্ত্রীকে যেসব দাবি জানালো বাংলাদেশ: বৈঠকের সময় সৌদি সরকারের কাছে বেশ কিছু দাবি তুলে ধরে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হজ এজেন্সিদের সংগঠন হাব। দাবিগুলো মধ্যে রয়েছে হজের সময় মিনা-মুজদালিফায় বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা, সুশৃঙ্খল লাগেজ ব্যবস্থাপনা, মুজদালিফা থেকে আসার পর বয়স্ক হাজিদের বিশ্রাম নেওয়ার পর শয়তানকে পাথর মারার সুযোগ দেওয়া। এছাড়া হজ ও ওমরাহ যাত্রীদের সার্বিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির প্রস্তাব।হাব জানিয়েছে, এবার বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২২ হাজার ৫৬২ জন হজ পালন করেন। হজ ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের সমস্যা না হলেও মিনা-মুজদালিফায় হাজিদের তাঁবুতে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহের ঘাটতি ছিল। বাংলাদেশি হাজিদের অনেক টয়লেটে পানি ছিল না। বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে ভোগান্তিতে পড়েন হাজিরা।ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এবার হাজিদের ৬৫ লাগেজ (ট্রলি) পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে মন্ত্রণালয়কে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। অন্যদিকে মুজদালিফা থেকে মিনায় আসার পর হাজিদের জামারায় (শয়তানকে পাথর মারার স্থান) পাঠানো হয়। সৌদি পুলিশ হাজিদের তাঁবু আটকে রাখে। শয়তানকে পাথর মারার আগে কাউকে তাঁবুতে প্রবেশ করতে দেয়নি সৌদি কর্তৃপক্ষ।এতে ৪০ থেকে ৪৫ ডিগ্রি রোদে কয়েক কিলোমিটার হাঁটার পর বয়স্ক হাজিরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। কেউ কেউ মারাও যান। তাই বয়স্ক হাজিদের মুজদালিফা থেকে মিনায় আসার পর তাঁবুতে বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হলে পরে তারা বিকেলে পাথর মারতে পারবেন। এতে বয়স্ক হাজিরা অসুস্থ হবেন না। এ বিষয়গুলো সৌদি হজমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরে সমাধান চাওয়া হয় আজকের বৈঠকে।এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে দুই দিনের সফরে বাংলাদেশে আসেন সৌদি সরকারের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রীর নেতৃত্বে ৬১ সদস্যের প্রতিনিধি দল। তারা ধর্ম, বেসরকারি বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন।