বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

লালমনিরহাট রেলওয়েতে প্রথম নির্মিত হলো-টার্ন টেবিল

লালমনিরহাট রেলওয়েতে প্রথম নির্মিত হলো-টার্ন টেবিল
 লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ  লালমনিরহাটে রেলওয়েতে এই প্রথম তৈরী হলো টান- টেবিল দেখতে জনতার ভীড়
। জানা গেছে, ব্রিটিশ আমলের প্রযুক্তি সড়িয়ে দেশেই তৈরী হলো প্রথম টার্ন টেবিল। ফলে সময় ও অর্থ সাস্রয় হবে লালমনিরহাট রেল বিভাগে। ব্রিটিশ আমলে তৈরী করা লালমনিরহাটে রেলের ইঞ্জিন ও কোচ ঘোরানোর টার্ন টেবিলটি প্রায় তিন দশক আগে বিকল হলে তা ব্যবহার বন্ধ করে রেল বিভাগ। তাই ইঞ্জিন বা কোচ ঘোরানোর জন্য ঢাকায় যেতে হত। লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশনের সিক লাইন এলাকায় প্রস্তুত দেশে তৈরী এ টার্ন টেবিলটি উদ্বোধন হলে সময় ও অর্থ দু’টোয় সাস্রয় হবে রেলওয়ের।
লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে দপ্তর  জানায়, রেলের কোচ বা ইঞ্জিনকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর টার্ন টেবিলের ওপর রেখে ঘোরানো হয়। এতে বাঁম দিকের চাকা ডান দিকে, ডান দিকের চাকা বাঁম দিকে চলে যায়। ফলে ২পাশের চাকা সমানভাবে ক্ষয় হয়। এতে চাকার স্থায়িত্ব বাড়ে ও দুর্ঘটনা ঝুঁকি কমে। ব্রিটিশ আমলে তখনকার কর্মকর্তারা যন্ত্রপাতি নিয়ে এসে লালমনিরহাটে টার্ন টেবিল প্রস্তুত করেন। যা ১৯৯৩ সালে বিকল হয়ে পড়লে ব্যবহার বন্ধ করে রেলওয়ে দপ্তর। এরপর থেকে লালমনিরহাট বিভাগের কোচ ও ইঞ্জিন ঘোরানোর জন্য কোচ ও ইঞ্জিনগুলো কয়েক মাস পর পর ঢাকায় নেয়া হত। যাতে সময় ও অর্থ অপচয় হত। তাই দেশেই টার্ন টেবিল নির্মানের উদ্যোগ নেয় রেলওয়ে। লালমনিরহাটে সিক লাইন এলাকায় এটি নির্মানের জন্য ৯ শতক জমি নেয়া হয়। নির্মানে বরাদ্ধ দেয়া ২৫ লাখ টাকা। বিভাগীয় রেলওয়ে দপ্তরের প্রকৌশলী (ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন)  তাসরুজ্জামানের (বাবু) নকশা ও প্রযুক্তিতে এ টার্ন টেবিলটি তৈরি হয়েছে। নির্মাণকাজ শুরু হয় চলতি বছরের জানুয়ারিতে আর শেষ হয়েছে গত মার্চ মাসে। খুব শীঘ্রই এটি উদ্বোধন করা হবে বলে জানা যায়।
বিভাগীয় রেলওয়ে দপ্তরের প্রকৌশলী (ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন)  তাসরুজ্জামানের (বাবু) বলেন, দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরী এ টার্ন টেবিলের কার্যকারিতা সফলভাবে যাচাই করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশে নির্মিত প্রথম টার্ন টেবিল। ৩৫০ টন ওজনের ভার বহনে সক্ষম এ টার্ন টেবিলে ১৪ টন ওজনের একটি ব্রিজ রয়েছে। এটি এই যন্ত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর ওপরে ইঞ্জিন ও কোচ তুলে ঘোরানো হয়। স্থাপনাটির ৩ ধাপে পাকা দেয়াল রয়েছে, যা সীমানাপ্রাচীর, সুরক্ষাপ্রাচীর ও লাইন দেয়াল নামে পরিচিত। এর মেঝে আরসিসি ঢালাই দেওয়া। এতে পানি জমলে পানির পাম্প দিয়ে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, টার্ন টেবিলটি নির্মাণে ৩৫০ টন ভার বহনে সক্ষম একটি রোলার থ্রাস্ট বিয়ারিং, আটটি এক্সেল বিয়ারিং, ব্রিজ নির্মাণের জন্য এমএস লোহার তৈরি এইচবিম, অব্যবহৃত রেললাইন, ট্রেনের অব্যবহৃত চারটি চাকা, এমএস টপ প্লেট, চেকার প্লেট, বলস্টার প্লেট, এমএস অ্যাঙ্গেল ও জিআই পাইপের রেলিং ব্যবহার করা হয়েছে। চলতি মে মাসের শেষ দিকে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) আবদুস সালাম বলেন, সম্পুর্ন দেশি প্রযুক্তিতে স্বল্প সময়ের মধ্যে স্বল্প টাকা ব্যয়ে টার্ন টেবিলটি নির্মিত হয়েছে। এতে অব্যবহৃত লাইন, চাকাসহ অন্য লৌহজাত নির্মাণ উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। রেলের কর্মকর্তারা সব সময় নিজেদের মেধা দিয়ে নতুন কিছু করার চেষ্টা করেন। এটি তার উদাহরণ হিসেবে থাকবে।
বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন