বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

“হাবিপ্রবিতে সেরা প্রেজেন্টার সম্মাননা পেয়েছেন নয় শিক্ষক”

“হাবিপ্রবিতে সেরা প্রেজেন্টার সম্মাননা পেয়েছেন নয় শিক্ষক”

 

হাসনাত সানি, হাবিপ্রবি প্রতিনিধি :

উত্তবঙ্গের স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) ইন্সটিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (আইআরটি) কতৃক বার্ষিক গবেষণা কার্যক্রমের উপর প্রেজেন্টেশনে নয় জন শিক্ষককে সেরা প্রেজেন্টারের সম্মাননা ও সনদ প্রদান করা হয়।

গত ৩ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআরটি কনফারেন্স রুমে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাজেট ও আইআরটি এর তত্ত্বাবধানে শিক্ষকবৃন্দের গবেষণা প্রকল্প সমূহের চূড়ান্ত ফলাফল উপস্থাপন বিষয়ক অ্যানুয়াল রিসার্চ রিভিউ ওয়ার্কশপ ২০২৩ এর ”বেস্ট প্রেজেন্টার অ্যাওয়ার্ড গিভিং সিরিমনি” অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রতিটি অনুষদ থেকে ১ জন শিক্ষককে সেরা প্রেজেন্টার হিসেবে মনোনীত করা হয়। শুধুমাত্র কৃষি অনুষদ থেকে দুই জন শিক্ষককে সেরা প্রেজেন্টার হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে।

শিক্ষকদের সেরা প্রেজেন্টার মনোনীত করার ক্ষেত্রে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট জুরি বোর্ডের বিচারকরা তাদের আলাদা আলাদা নাম্বার প্রদানের মাধ্যমে অনুষদ ভিত্তিক সেরা প্রেজেন্টার মনোনীত করেন এবং নির্বাচিতদের সেরা প্রেজেন্টারের অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম কামরুজ্জামান।

কৃষি অনুষদ থেকে সেরা প্রেজেন্টার নির্বাচিত হয়েছেন প্ল্যান্ট প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ মহিদুল হাসান ও বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ ইয়াসিন প্রধান। কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ থেকে মনোনীত হয়েছেন কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ রাশেদুল ইসলাম। এছাড়াও বিজনেস স্টাডিজ থেকে ফাইনান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হুমায়রা বেগম, ফিশারিজ অনুষদ থেকে ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমরান পারভেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ রোকনুজ্জামান, ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সাইন্স অনুষদ থেকে জেনেটিক্স অ্যান্ড এনিমেল ব্রিডিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ রাশেদুল ইসলাম, বিজ্ঞান অনুষদ থেকে গণিত বিভাগের অধ্যাপক মোঃ মামুনুর রশিদ এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ থেকে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ সাইফুদ্দিন দুরুদ।

সেরা প্রেজেন্টার নির্বাচিত হওয়ায় কৃষি অনুষদের প্লান্ট প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ মহিদুল হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে এমন সম্মাননা পেয়ে আমার অনেক ভালো লাগছে।একজন শিক্ষক হিসেবে আমাকে গবেষণা কার্যক্রম করতে হয়।সেই গবেষণা কার্যক্রমের যদি স্বীকৃতি এবং সম্মাননা পাওয়া যায় সেটি আমাদের গবেষণা কার্যক্রমকে ব্যাপকভাবে ত্বরান্বিত করে।আশা রাখছি এমন সম্মাননা ও সনদ নতুন গবেষকদের মাঝে আরো উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে।বিশ্ববিদ্যালয় এমন কার্যক্রম ভবিষ্যতে আরো সুন্দরভাবে আয়োজন করবে এমনটাই প্রত্যাশা থাকবে।

কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ রাশেদুল ইসলাম বলেন, এমন সম্মাননা পেয়ে আমার অনেক ভালো লাগছে।আমার গবেষণা কাজের আগ্রহ আরো বাড়লো।আমি ভবিষ্যতে আরো এমন কাজ করে যেতে চাই।

ফাইনান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হুমায়রা বেগম বলেন, আমাদের বর্তমান ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এম কামরুজ্জামান স্যার আসার পর থেকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভালো ভালো কাজ করে যাচ্ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় আইআরটি কতৃক সেরা প্রেজেন্টার অ্যাওয়ার্ড দেয়া হচ্ছে। কাজের স্বীকৃতি এবং সম্মাননা মানুষের কাজের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি করে।এমন সম্মাননা আমার গবেষণা কাজের প্রতি আগ্রহ এবং দায়বদ্ধতাকে বাড়িয়ে দিলো।ভবিষ্যতে আরো ভালো গবেষণা কাজের মাধ্যমে দেশকে ভালো কিছু দিতে চাই।

সিভিল ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ রোকনুজ্জামান বলেন, গবেষণা পত্রের প্রেজেন্টেশনে সেরা প্রেজেন্টার হতে পারা আমার জন্য গর্বের এবং আনন্দের। এমন সম্মাননা আমাকে আমার সৃজনশীল এবং ভালো কাজের প্রতি আরো বেশি আগ্রহী করে তুলবে।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ সাইফুদ্দিন দুরুদ বলেন, আইআরটি থেকে প্রতিবছরই গবেষণার জন্য বরাদ্দ হয়।সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা অনুষদ ভিত্তিক অংশগ্রহণ করেন।আমি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ থেকে “মাইক্রো ক্রেডিট অ্যান্ড উইমেন পাওয়ারমেন্ট” টপিকের উপর আইআরটির অধীনে গবেষণার কাজ করেছি। গবেষণাকর্মে অংশগ্রহণকৃত শিক্ষকদের গবেষণাকর্মের প্রেজেন্টেশনে আমি আমার অনুষদ থেকে সেরা প্রেজেন্টার মনোনীত হয়েছি এটি আমার জন্য অনেক আনন্দের এবং ভালো লাগার। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে গবেষণা কাজের স্বীকৃতি আমার গবেষণা কাজের প্রতি আগ্রহ আরো বাড়িয়ে তুলবে। বর্তমান ভাইস-চ্যান্সেলর স্যার গতবছর থেকে এই সম্মাননা প্রদান কার্যক্রমটি চালু করেন। স্যারের এমন ভালো উদ্যোগকে সাধুবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই, সেই সাথে আইআরটি এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ভবিষ্যতে আমাদের গবেষণা কার্যক্রম আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশ- বিদেশের পরিমন্ডলে ইতিবাচক ভাবে তুলে ধরতে সক্ষম হবে।

জেনেটিক্স অ্যান্ড এনিমেল ব্রিডিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ রাশেদুল ইসলাম বলেন, আইআরটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার ক্ষেত্রে অর্থায়ন করে থাকে।বর্তমান মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর স্যার অধ্যাপক ড. এম কামরুজ্জামান স্যার আসার পরে অর্থায়ন এবং প্রজেক্টের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে সেই সাথে গবেষণা মূল্যয়ন পদ্ধতিও বেশ আধুনিক হয়েছে।সেরা প্রেজেন্টার হতে পারাটা আনন্দ এবং প্রেষণার ব্যাপার।এমন সম্মাননা আমাকে গবেষণা কাজের প্রতি আরো আগ্রহী করবে।সেই সাথে প্রত্যাশা থাকবে আমাদের মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর স্যার একজন সৃজনশীল মানুষ ভবিষ্যতে তার আরো সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় আরো এগিয়ে যাবে।

ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমরান পারভেজ বলেন, গবেষণা কাজের জন্য এরূপ স্বীকৃতিতে সকলের ন্যায় আমিও আনন্দিত, এই স্বীকৃতি একদিকে যেমন আনন্দিত করেছে, ঠিক তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষা ও গবেষণায় এগিয়ে নেওয়ার প্রতি দায়িত্বও
বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশেষ করে মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান স্যারকে এরূপ এওয়ার্ড প্রথা চালু করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই, কেননা এরূপ এওয়ার্ড প্রদান বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের শিক্ষগণকে বিশেষ করে তরুন শিক্ষকগণকে গবেষণা কাজে আগ্রহী করে তুলবে।

গণিত বিভাগের অধ্যাপক মোঃ মামুনুর রশিদ বলেন, গবেষণাকর্মের প্রেজেন্টেশনের সেরা প্রেজেন্টারের এমন সম্মাননা নিঃসন্দেহে ভালো লাগার। এমন সম্মাননা গবেষণার আগ্রহকে আরো বাড়িয়ে তুলবে। এই সম্মাননা আমার গবেষণা কর্মের স্পৃহা এবং দায়িত্ব আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।ভবিষ্যতে আমি আমার গবেষণা কর্মের মাধ্যমে দেশ এবং জাতিকে আরো ভালো কিছু দিতে চাই। এমন স্বীকৃতি প্রদানের জন্য মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর স্যার, আইআরটি এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

ইন্সটিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড টেকনোলজি (আই.আর.টি) এর পরিচালক অধ্যাপক ড.মোঃ হারুন-উর-রশীদ বলেন, গত বছর থেকে আমাদের গবেষকদের মাঝে সেরা প্রেজেন্টার সম্মাননা প্রদান করে হচ্ছে, তারই ধারাবাহিকতায় এ বছর আটটি অনুষদের নয়জন শিক্ষককে সেরা প্রেজেন্টার সম্মাননা ও সনদ প্রদান করা হয়।ভবিষ্যতে এই কার্যক্রমটি আরো ভালোভাবে আয়োজন করা হবে এবং ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। আশা রাখছি এমন সম্মাননার মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়ে শিক্ষকেরা আরো গবেষণামুখী হবেন। দেশ ও জাতিকে ভালো কিছু দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বৃদ্ধি করবেন।

সেরা প্রেজেন্টার অ্যাওয়ার্ড প্রদান শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. কামরুজ্জামান বেস্ট প্রেজেন্টার অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এ ধরণের উৎসাহ প্রদানমূলক কর্মকান্ড কাজের গতিকে অনেক গুণ বৃদ্ধি করে দেয়। এই ভাবনা থেকেই গত বছর থেকে এ ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা, এবার দ্বিতীয়বারের মতো এটি প্রদান করা হলো। একটি নীতিমালা তৈরি করে সামনে আমরা বেস্ট গবেষক অ্যাওয়ার্ড প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এসবের প্রধান লক্ষ্য হল গবেষণার দিকে গুরুত্ব আরোপ করা। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজই হলো গবেষণা, এই বিষয়টি মাথায় রেখেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন