গবেষণায় ‘চৌর্যবৃত্তি’ ধরতে বিএসএমএমইউয়ে প্লেজারিজম চেকার চালু
মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) প্রথমবারের মতো গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি প্রতিরোধ করার জন্য প্লেজারিজম সফটওয়ার চেকার চালু করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, শিক্ষক শিক্ষার্থীদের গবেষণার মান বৃদ্ধি ও মৌলিকত্ব বজায় রাখার লক্ষ্যে এই প্লেজারিজম চেকার চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের জমা দেওয়া বিভিন্ন আর্টিকেল, গবেষণাপত্র, থিসিস ইত্যাদি তাৎক্ষণিকভাবে লক্ষাধিক জার্নাল, লাইব্রেরিতে প্রবেশ করে জমা দেওয়া গবেষণাপত্র কপি করা হয়েছে কিনা তা চেক করা হবে।
রোববার (১৫ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ব্লকের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে প্লেজারিজম শনাক্তকরণের সফটওয়ারের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এই সফটওয়ার গবেষণার মৌলিকত্ব বজায় থাকে এবং গবেষণার আন্তর্জাতিকমান বজায় রাখতে সহায়তা করে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মেডিকেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে ধরনের প্লেজারিজম ব্যবহৃত হচ্ছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়েও একই ধরনের প্লেজারিজম চালু করা হয়েছে।
এখন থেকে বিএসএমএমইউর অধিভুক্ত বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও ইনস্টিটিউটের ছাত্রছাত্রীরা তাদের থিসিসের যে সফট কপি জমা দেবেন, সেগুলোও প্লেজারিজম চেকার ব্যবহার করে পরীক্ষা করা হবে। এমনকি ওই পরীক্ষার তাদের জমা দেওয়া থিথিসের মান নিশ্চিত হলেই তারা পরীক্ষা দিতে পারবে। প্লেজারিজম চেকারের চর্চা গবেষণার মান ও গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি এবং গবেষণাপত্র প্রকাশের ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রাখে।
এ সময় শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠান গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি ঠেকাতে এত বড় সাহস দেখায়নি। এ উদ্যোগের ফলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে লেভেল অব অ্যাক্টিভিটি, লেভেল অব রিসার্চ স্ট্যান্ডার্ড হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
তিনি বলেন, গবেষণার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে গবেষকদের অনুপ্রেরণা দেয়াসহ আগ্রহী করার জন্য থিসিস এওয়ার্ড, গবেষণা এওয়ার্ড প্রচলন করা হয়েছে। গবেষণার অনুদানের পরিমাণ অনেক গুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। মানসম্পন্ন গবেষণা নিশ্চিত করতে ও চৌর্যবৃত্তি ঠেকাতে এ সফটওয়্যার বেশ কার্যকর হবে। কোন গবেষক এখন আর্টিকেল জমা দিলে তা বার বার চেক করে দেবেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান, নার্সিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বণিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক ডা. মো. হারিসুল হক।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী গ্রন্থাগারিক পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মারুফ হক খান। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. ফারুক হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. পবিত্র কুমার দেবনাথ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু করা এ সফটওয়্যার ব্যবহারের জন্য গবেষকদের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি দিতে হবে। সফটওয়্যারের গবেষণা বা থিসিস আপলোড করার পর কয়েক মিনিটের মধ্যে কতটুকু, কোনো জায়গা থেকে গবেষণায় ব্যবহার করা হলে তা রেফারেন্সসহ ফলাফল আকারে প্রকাশ করবে।
সূত্র:ঢাকাপোষ্ট