মঙ্গলবার, ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

পোশাক শ্রমিকদের ‘ভাগ্য নির্ধারণী’ সভা চলছে, বাইরে বিক্ষোভ

পোশাক শ্রমিকদের ‘ভাগ্য নির্ধারণী’ সভা চলছে, বাইরে বিক্ষোভ

মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর লক্ষ্যে গঠিত নিম্নতম মজুরি বোর্ডের ৬ষ্ঠ সভা শুরু হয়েছে। এ সভায় গার্মেন্টস শিল্প খাতের শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি নির্ধারণের কথা রয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মজুরি বোর্ডের সভাকক্ষে বেলা ১২টা ২০ মিনিট থেকে শুরু হয়ে চলছে রুদ্ধদার এ বৈঠক। এদিকে মজুরি বোর্ডের সামনে অধিকার আদায়ে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন আন্দোলনরত শ্রমিকরা। সভায় নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী মোল্লার সভাপতিত্বে শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দিয়েছেন সিরাজুল ইসলাম রনি। অপরদিকে মালিকপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দিয়েছেন সিদ্দিকুর রহমান। এর আগের সভায় মজুরি বোর্ডে শ্রমিক প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম রনি শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ২০ হাজার ৩৯৪ টাকার প্রস্তাব করেন। আর মজুরি বোর্ডে পোশাক কারখানার মালিকদের প্রতিনিধি সিদ্দিকুর রহমান ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার ৪০০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেন। উভয়পক্ষ প্রস্তাবনায় তাদের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। শ্রমিক সংগঠনের ব্যানারে মজুরি বৃদ্ধি গার্মেন্টস আন্দোলনের নেতার বলছেন, পোশাক খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করতে হবে। শ্রমিকদের গ্রেপ্তার-হত্যা-মামলা-ছাঁটাই-নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।

সভায় আরও উপস্থিত আছেন নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সচিব রাইসা আফরোজ, নিরপেক্ষ সদস্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীন এবং শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্বকারী সদস্য ও জাতীয় শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহম্মদ।

এদিকে শ্রমিকদের বেতন ২৫ হাজার করার দাবিতে আন্দোলন করছে মজুরি বৃদ্ধিতে গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, গার্মেন্টস শ্রমিক ও শিল্পরক্ষা জাতীয় মঞ্চ, গার্মেন্টস ওয়াকার্স এলায়েন্স, বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য মঞ্চ, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন।

তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের জন্য বাস্তবসম্মত নিম্নতম মজুরি কাঠামো প্রস্তাবনার জন্য শ্রমিকদের সুনির্দিষ্ট দাবিগুলো হচ্ছে

 ১. গার্মেন্টস শ্রমিকদের মাসিক মূল মজুরি সর্বমোট মাসিক মজুরির ন্যূনতম ৬১ শতাংশ করা।
২. গার্মেন্টস শ্রমিকদের পদ ও শ্রেণিবিন্যাসে গ্রেডিং সংক্রান্ত জটিলতা দূর করতে পূর্বের ৭টি গ্রেডের পরিবর্তে ৫টি গ্রেডে ভাগ করা।
৩. মূল মজুরির ওপর ১০ শতাংশ হারে বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট দিতে হবে।
৪. পর পর দুটি গ্রেডের মধ্যে নূন্যতম মজুরির পার্থক্য ১০ শতাংশ করতে হবে।
৫. নতুন শ্রমিকদের জন্য তিন মাস শিক্ষানবিশকাল হিসেবে বিবেচিত হবে।
৬. সোয়েটার কারখানা বা পিস রেটে কর্মরত শ্রমিককে প্রোডাকশন না থাকলে বিগত ৩ মাসের মজুরির গড়/৩নং গ্রেডের বেসিক মজুরি পরিশোধ, কাজের আগে রেটের ফয়সালা করা।
৭. যে কোনো সম্প্রদায়ের শ্রমিক ও কর্মচারীরা স্ব স্ব সম্প্রদায়ের প্রধান দুটি উৎসবে প্রতিটিতে ৬ মাসের অধিক চাকরির ক্ষেত্রে এক মাসের মূল মজুরি হারে ২টি উৎসব ভাতা ও ৬ মাসের অনধিক চাকরির ক্ষেত্রে প্রতিটিতে ১৫ দিনের মজুরি হারে ২টি উৎসব ভাতা প্রাপ্ত হবেন। শ্রমিকের উৎসব ভাতা ১ মাসের মূল মজুরির কম হবে না।
৮. স্বীয় পদে/গ্রেডে চাকরির সর্বোচ্চ ২ বছরের মধ্যে উচ্চতর গ্রেডে পদোন্নতি নিশ্চিত করতে হবে।
৯. পোশাক কারখানায় গ্র্যাচুইটি সিস্টেম প্রচলন করতে হবে। তবে অন্তর্বর্তীকাল হিসেবে ১০ বছরের অধিক সময় কর্মরত শ্রমিকদের জন্য সমান হারে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। চাকুরি অবসরের পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য প্রাপ্ত গ্র্যাচুইটি দিতে হবে।
১০. মাতৃত্বকালীন ছুটি সবেতনে ৬ মাস দিতে হবে।
১১. শ্রমিকদের পরিবারের সন্তানদের জন্য শিক্ষা ভাতা দিতে হবে।
১২. নতুন মজুরি নির্ধারণের পর যাতে স্থানীয় পর্যায়ে বাড়ি ভাড়া না বাড়ে, তা তদারকি করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, জনপ্রশাসন এবং মালিকপক্ষের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কমিটি করে পর্যবেক্ষণের উদ্যোগ নিতে হবে।
১৩. গার্মেন্টস শ্রমিকদের রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে (সরকারের ভর্তুকিমূলক পণ্য বিক্রি কার্যক্রমে তৈরি পোশাক শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্ত করা)।

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন