ভারত এবার বিশ্বকাপ না জিতলে যা হবে
মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় দাবিদার কারা-এমন প্রশ্নে সবার আগে আপনার মাথায় আসতে পারে ভারতের নাম। ঘরের মাঠের অ্যাডভান্টেজ ছাড়াও ব্যাটিং, বোলিং কিংবা ফিল্ডিং তিন বিভাগেই দারুণ ছন্দে আছে স্বাগতিকরা। গ্রুপপর্বে নয় ম্যাচের সবকটিতেই জিতেছে রোহিত শর্মার দল। আর দুই ম্যাচ জিততে পারলেই দীর্ঘদিন পর শিরোপার স্বাদ পাবে টিম ইন্ডিয়া।
দেশটির সাবেক ক্রিকেটার ও কোচ রবি শাস্ত্রী মনে করেন, এবারই বিশ্বকাপ জেতার বড় সুযোগ ভারতের। নাহলে একটি-দুটি নয়, আরও অন্তত তিন সংস্করণে কাপ ছোঁয়ার কথা ভাবতেও পারবে না বলে মন্তব্য তার। রবি শাস্ত্রী ’৮৩ বিশ্বজয়ী দলের অন্যতম সদস্য। দলের সাবেক হেড কোচ। চলতি বিশ্বকাপে সাবেক শীর্ষদের দুরন্ত পারফরম্যান্সে উচ্ছ্বসিত শাস্ত্রী। একইসঙ্গে তার সাবধানবাণী, এবার কাজটা সম্পূর্ণ না করতে পারলে অপেক্ষা বাড়বে ভারতের। শাস্ত্রীর কথায়, ‘দেশে এখন উচ্ছ্বাসের পরিবেশ। হবে নাই বা কেন! ১২ বছর হয়ে গেল শেষ বিশ্বকাপ জয়ের। এবার সেই জয়ের পুনরাবৃত্তির সুযোগ রয়েছে। আর দল যেভাবে খেলছে, তাতে আমি বলব এটাই সেরা সুযোগ। এবার সুযোগ হাতছাড়া করলে অন্তত তিনটা বিশ্বকাপ অপেক্ষা করতে হবে ভারতকে, এমন সুযোগের জন্য।’ নিজের বক্তব্যের স্বপক্ষে সাবেক বিশ্বজয়ীর যুক্তি, ‘এই দলে থাকা সাত-আটজন ক্রিকেটার দুরন্ত ফর্মে আছে। কিন্তু এটাই তাদের অধিকাংশের শেষ বিশ্বকাপ হতে চলেছে। এই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি হতে অনেকটা সময় লাগবে। তাই এই সুযোগ হাতছাড়া করলে ভারতের অপেক্ষা বাড়বে।’ তবে একদিনে যে এই দলটা গড়ে ওঠেনি, তা জানাতেও ভোলেননি শাস্ত্রী। বিশেষত জশপ্রীত বুমরাহ, মোহাম্মদ শামি ও সিরাজের (পেস আর রবীন্দ্র জাদেজা, কুলদীপ যাদবের স্পিন সমানতালে সংহারকের ভূমিকা পালন করে চলেছে বলেই মনে করছেন তিনি। বলেন, ‘এই দুরন্ত পারফরম্যান্স করার জন্য সময় লাগে। রাতারাতি কিছু হয় না। ওরা প্রায় সবাই বছর পাঁচেক ধরে একসঙ্গে খেলছে। সিরাজ একটু পর এসেছে, তবে সেটাও তিন বছর আগের ঘটনা। ধারাবাহিকভাবে বলটা কোথায় ফেলতে হবে, সেটা ভালোমতোই জানে তারা।
আরও যোগ করেন, গতির থেকে ধারাবাহিকভাবে লাইন-লেংথ ধরে রাখার প্রয়োজনীয়তা যে বেশি, তা তাদের অজানা নয়। এই বিশ্বকাপেই দেখুন, ভারতীয় পেসাররা কেউই বিশেষ শর্ট বল করেনি। বরং এই শর্ট বলকে ওরা বিপক্ষকে চমকে দেওয়ার জন্য ব্যবহার করেছে। বরং অধিকাংশ বলই করেছে স্টাম্প লক্ষ্য করে।’ চলতি বিশ্বকাপে ভারত একমাত্র দল যাদের প্রধান বোলাররা সবাই দশের বেশি উইকেট নিয়েছেন। শাস্ত্রীর বক্তব্যে উঠে এসেছে সেই প্রসঙ্গও। ‘ওরা বলটাকে দারুণভাবে ব্যবহার করছে। আমি বলব, সাদা বলের ক্রিকেটে গত পঞ্চাশ বছরে এটাই সবচেয়ে সেরা বোলিং অ্যাটাক,’-বলছেন বুমরাহ-শামিদের খুব কাছ থেকে দেখা শাস্ত্রী। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৬ উইকেটের জয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করেছিল ভারত। এরপর থেকে পরপর জয়। লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে ১৬০ রানে হারিয়েছে স্বাগতিকরা। নিজেদের লক্ষ্য নিয়ে ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেন, আমরা একটা একটা করে ম্যাচ ধরে এগোচ্ছিলাম। জানতাম খুব লম্বা প্রতিযোগিতা। বেশি দূরের কথা ভাবলে জেতা যাবে না। তাই আমরা একটা করে ম্যাচের দিকে নজর দিচ্ছিলাম। আলাদা আলাদা দলের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে খেলতে হয়েছে। এটা বড় চ্যালেঞ্জ। পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়েছে। আমরা সেটা পেরেছি। আমি খুশি ৯টা ম্যাচই জিততে পেরে। বাকি আর মাত্র দুই ম্যাচ। যদিও ফাইনাল খেলতে হলে সেমিফাইনালের বাধা টপকাতেই হবে। রোহিত ও তার সতীর্থরা সেটা জানেন। এটাও জানেন যে, শেষ চারের লড়াইয়ে নিউজিল্যান্ডের কাছে হারলেই সমালোচনার ঝড় উঠবে। তাই ফের আর একটা নতুন ম্যাচ নিয়েই ভাবছে তারা।