খিচুড়ি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো কিনা জানালেন পুষ্টিবিদ
মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : ভোরের আলো ফোটার পর থেকেই শুক্রবার (১২ জুলাই) একটানা বৃষ্টি ঝরছে রাজধানীসহ দেশের বেশ কিছু অঞ্চলে। আর বাঙালির কাছে বৃষ্টি মানেই খিচুড়ি উৎসব। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বৃষ্টির দিনে ঘরে ঘরে রান্না করা খিচুরির ছবিতে ভরে উঠে। তবে খিচুড়ি শুধু সুস্বাদুই নয়, পুষ্টিগুণেও ভরপুর। এক প্লেট খিচুড়িতেই আপনি পেয়ে যাবেন শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি। খিচুড়ির পুষ্টিগুণ সংবাদ মাধ্যমে কথা বলেছেন পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ ও বিভাগীয় প্রধান নিশাত শারমিন।
খিচুড়ির পুষ্টিগুণ
এ বিষয়ে শারমিন বলেন, খিচুড়ির প্রধান উপাদান চাল ও ডালে আলাদা করে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে। চালে থাকে সিস টিন, মিথিওনিন নামে অ্যামিনো অ্যাসিড। আর ডালে থাকে লাইসিন। শুধু ভাত খেলে দেহে লাইসিনের ঘাটতি হয়। আবার শুধু ডাল খেলেও সিস টিন ও মিথিওনিনের ঘাটতি রয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে দুটো একসঙ্গে মিশিয়ে খেলে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিডের চাহিদা পূরণ হয়। দেহের পেশি গঠন, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানো, কোষ পুনর্গঠনে খিচুড়ি বেশ উপকারী
খিচুড়িতে চাল, ডাল ও বিভিন্ন ধরনের সবজি থাকে। এ ছাড়া মানুষ তাঁদের পছন্দ অনুযায়ী মাছ, মাংস, কলিজা, ডিম যোগ করেও রান্না করতে পারেন। এর আরও একটি প্রধান উপাদান হলো তেল বা ঘি। পুষ্টির চাহিদা পূরণে আমরা যে ছয়টি উপাদানের কথা বলি, এর সবই খিচুড়ির ভেতর একসঙ্গে রয়েছে। খিচুড়ির চাল থেকে শর্করা পাওয়া যায়। ডাল থেকে আসে আমিষ বা প্রোটিন। সবজি থেকে পাওয়া যায় ভিটামিন বা মিনারেল। তেল বা ঘি থেকে পাচ্ছি চর্বি। আর রান্নার জন্য পানি তো আছেই। এ ছাড়া খিচুড়িতে যেসব ডাল ব্যবহার করা হয়, সেগুলোতে প্রচুর পরিমাণ আঁশ ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট থাকে। এগুলো হজমে সাহায্য করে।
এ ছাড়া খিচুড়িতে সব ধরনের খাদ্য উপাদান থাকার কারণে এটি শক্তিবর্ধক, স্বাস্থ্যকর খাবার। এতে প্রতিটি পুষ্টি উপাদানের সমতা রক্ষা হয়। আবার মাছ বা মাংস দিয়ে রান্না করলে সেখান থেকেও আমিষটা পাওয়া যাচ্ছে। ছয় মাস বয়সের বাচ্চা থেকে শুরু করে যাঁদের কর্মক্ষমতা কমে গেছে, তারা সব ধরনের পুষ্টি খিচুড়ি থেকে পেতে পারেন। ছোট শিশুরা সাধারণত বেশি খাবার একসঙ্গে খেতে পারে না। তাদের খিচুড়ি খাওয়ানো হলে একসঙ্গে বেশি পুষ্টি পায়। আবার সার্জারির পরে সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার যে আশঙ্কা থাকে, তা দূরে রাখতেও রোগীকে খিচুড়ি খেতে বলা হয়। কারণ, সব পুষ্টি একসঙ্গে থাকার জন্য এটি দেহে যথেষ্ট পরিমাণ শক্তি জোগায়, বাড়ায় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা।
রোগ প্রতিরোধে খিচুড়ি
খিচুড়ি সঙ্গে বাড়তি কিছু না খেলেও চলে। কারণ, খিচুড়িতে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের অনেকটাই পাওয়া যায়। এটি শরীরকে শীতল রাখার পাশাপাশি শরীর থেকে টক্সিন দূর করতেও কাজ করে। পরিপাক প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং বাড়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। তবে বাইরে থেকে কিনে না খেয়ে বাড়িতে তৈরি খিচুড়ি খান। এতে সুস্বাস্থ্য বজায় থাকবে।
গ্লুটেনমুক্ত
অনেকে আছেন যারা গ্লুটেনমুক্ত খাবার খেতে বেশি পছন্দ করেন, অনেকের আবার চিকিৎসকের নিষেধ থাকার কারণে গ্লুটেনযুক্ত খাবার খেতে পারেন না। এ ধরনের পরিস্থিতিতে আপনাকে খাবারের তালিকায় রাখতে হবে খিচুড়ি। এটি আপনার শরীরের নানা ঘাটতি মিটিয়ে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে।